ডেইলি স্টার অপ্রমাণিত সংবাদ ছেপেছে: জাকির নায়েক
বটতলা ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ০৬:১৬ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৬ শনিবার | আপডেট: ০৩:৫৯ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৬ রোববার
জাকির নায়েক -ফাইল ফটো
আলোচিত-বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা জাকির নায়েক অভিযোগ করেছেন যে ভারতীয় এবং বিশ্ব মিডিয়া যাচাই না করেই তার নামে সংবাদ প্রচার করে।
নিজের পিস টিভি ভিত্তিক নানান বক্তব্যকে কেন্দ্র করে হরহামেশাই বিতর্কে থাকা ভারতীয় চিকিৎসক কাম ইসলামি চিন্তাবিদ জাকির নায়েক সম্প্রতি আলোচনায় আসেন গুলশানে জিম্মিসংকটকে কেন্দ্র করে। ওই ঘটনায় নিহত জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের ফেসবুক পেজে তার প্রশংসামূলক স্ট্যাটাস থাকার সুবাদে বলা হয়- তিনি তরুণদের জঙ্গিবাদে উস্কে দিচ্ছেন।
এরপর বাংলাদেশে ও ভারতে তাকে নিষিদ্ধের দাবি জানায় কোনো কোনো মহল। এর জবাবে জাকির নায়েক চ্যলেঞ্জ ছুড়েছেন মিডিয়াকে- তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ থাকলে দেখান যাতে বলা হয়েছে হামলাকারী জঙ্গিদের আমি প্রভাবিত করেছি।
শনিবার নবভারত টাইমস জাকির নায়েকের এ চ্যালেঞ্জ নিয়ে এক প্রতিবেদন করেছে। প্রতিবেদনে জাকির নায়েক বলেছেন, যখন কোনো সংবাদ সূত্র মেলে তখন তা অন্যকে পরিবেশনের আগে যাচাই করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। যদি মিডিয়ার লোকজন কিছুমাত্রও গবেষনার কাজটি করতো তবে তারা এমনটা করতে পারতো না যা তারা এখন আমার বিষয়ে লিখছে।
জাকির নায়েকের এ বক্তব্য পিস টিভিতে প্রচার করা হয়েছে বলে শনিবার জানায় হিন্দি দৈনিক নবভারত টাইমসের ওয়েব সংস্করণ। এছাড়া টুইটারে এ সংক্রান্ত সাড়ে পাঁচ মিনিটের এক বক্তব্যও তুলে ধরেছেন জাকির নায়েক।
ভিডিওতে তিনি জানান, ঢাকায় জঙ্গি হামলার পর তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশি পত্রিকা ডেইলি স্টার আমার বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত সংবাদ ছেপেছে। যাতে বলা হয়েছে হামলায় জড়িত এক জঙ্গিকে আমি নাকি প্রভাবিত করেছি। এরপর ভারতীয় মিডিয়া বিষয়টিকে সেভাবেই তুলে ধরে।
তিনি চ্যালেঞ্জ করেন যে বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের কথা হয়েছে এবং তারা এমনটি মনে করেন না।
এর আগে জাকির নায়েক বলেছিলেন যে বাংলাদেশে শতকরা ৯০ ভাগ লোক তাকে জানে এবং ৫০ ভাগ লোক তার ভক্ত। তিনি আরও বলেন, হামলাকারী যুবক আমার ভক্ত হতে পারে কিন্তু নির্দোষ লোকদের হত্যা করতে আমি তাকে পাঠাইনি।
কয়েকটি দেশে তাকে নিষিদ্ধের বিষয়েও দ্বিমত পোষণ করেছেন নায়েক। এ সংক্রান্ত খবরকে ভূয়া উল্লেখ করে তিনি জানান, একবার শুধু ব্রিটেন সফরে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
মালয়েশিয়া সরকার তাকে নিষিদ্ধ করেনি বলে জানান তিনি। এ সংক্রান্ত খবরকে মিথ্যা উল্লেখ করে তিনি জানান, মালয়েশিয়ার রাজা এবং প্রধানমন্ত্রী তিন বছর আগে তাকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা দিয়েছে যা সাধারণ ক্ষেত্রে কোনো বিদেশিকে খুব কমই দেয়া হয়। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মিডিয়া একটু গবেষণা করে নিলেই পারতো।
যদি কোনো দেশ কাউকে সর্বোচ্চ সম্মননা জানায় সেক্ষেত্রে সেই দেশ কী করে তাকে নিষিদ্ধ করতে পারে- এ প্রশ্ন রাখেন তিনি মিডিয়ার কাছে।
তিনি বলেন, তিন মাস আগেই আমি মালয়েশিয়ায় বক্তৃতা করেছি যার বিরোধিতা করে একটি হিন্দু সংগঠন। কিন্তু একটি সংগঠনের বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় যে সরকার আমাকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
তিনি জানান, চারদিনের ওই মালয়েশিয়া সফরে সেখানকার প্রধানমন্ত্রী, উপ্রধানমন্ত্রীসহ চল্লিশজন মন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তথ্য যাচাই না করে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় একের পর এক মানহানি মামলা দায়ের করা হয় চলতি বছরের গোড়ার দিকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে মাহফুজ আনাম তার ডেইলি স্টার পত্রিকায় গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্য যাচাই না করে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন।
একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে তিনি স্বীকার করেন যে, ‘যাচাই না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা তার উচিত হয়নি।’
নিউজওয়ান২৪.কম/একে