ঢাকা, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
সর্বশেষ:

ব্রি. জেনারেল ওয়াজি হত্যা: ‘ঘাতক’ কেয়ারটেকার রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:২০, ১১ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ১২:২০, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

নিহত সেনা কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল (অব.) ওয়াজি আহমেদ             -ফাইল ফটো

নিহত সেনা কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল (অব.) ওয়াজি আহমেদ -ফাইল ফটো

ঢাকা: রাজধানীর মহাখালীতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তার বাড়ির কেয়ারটেকার আবদুল আহাকেদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের এক মাসেরও বেশি সময় পর গত বুধবার ঢাকার পল্লবী এলাকা থেকে আহাদকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‌্যাব।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই হাফিজ আহমেদ আজ (শুক্রবার) আসামিকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড অনুমতি চান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম এসএম মাশুক জামান রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে আহাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

শুনানি শেষে বিচারক আহাদকে হেফাজতে নিয়ে চার দিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন পুলিশকে। এ তথ্য জানান, প্রসিকিউশন পুলিশের উপকমিশনার আনিসুর রহমান।

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর (৭৬) বাক প্রতিবন্ধী ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরী (৪০) গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে বাবাকে অসার পড়ে থাকতে দেখেন। পরে ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওয়াজিকে মৃত ঘোষণা করেন।

লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, নিহতের গলায় কালো দাগ এবং বুকের বাঁ পাশ আর ডান পায়ের গোড়ালিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ ঘটনায় ওয়াজি আহমেদের ভাতিজা রেশাদ আহমেদ পরদিন কাফরুল থানায় হত্যা মামলা করেন। বাসার কেয়ারটেকার আবদুল্লাহ ওরফে আবদুল আহাদকে মামলায় আসামি করা হয়। ঘটনার পর ওই বাসা থেকে একটি টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ খোয়া গেছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। কেয়ারটেকার আবদুল আহাদও পলাতক ছিল।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে কেয়ারটেকারের স্বীকারোক্তি

এদিকে, বৃহস্পতিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লুৎফুল কবির জিজ্ঞাসাবাদে আহাদের কাছ থেকে পাওয়া হত‌্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরেন মিডিয়ার সামনে।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আহাদ ছয় হাজার টাকা বেতনে কেয়ারটেকারের কাজ করতেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা ওয়াজি আহমেদের বাসায়। ঘটনার আগের দিন ওয়াজির ছেলে ফুয়াদ নিজের মোটরসাইকেল তাদের প্রতিবেশী মামার গাড়ির সঙ্গে তালা মেরে রেখেছিল। এ নিয়ে মামার বাড়ির কেয়ারটেকারের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মামার কেয়ারটেকার সেদিন ফুয়াদকে মারধরও করে।

লুৎফুল কবির আরও জানান, আহাদের সামনেই সেদিন ওই ঘটনা ঘটে। আহাদ মনিবের ছেলেকে বাচাতে চেষ্টা করে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে। এর জের ধরে পরে ফুরাদ তাকে মারধর করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আহাদ পরদিন ওয়াজি আহমেদকে জানায় সে আর ওই বাসায় কাজ করবে না, তার বেতন যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু প্রায় অশীতিপর বৃদ্ধ ওয়াজি আহমেদ একথায় রাজি না হলে আহাদ তাকে ভয় দেখাতে একটি রশি নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ওয়াজি আহমেদ ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার করেন। এসময় সহসাই আহাদ গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

আরও পড়ুন সেনা কর্মকত্যা ওয়াজি হত্যা ‘পরিকল্পনারী’ আটক

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, এরপর ওই বাসা থেকে চার হাজার টাকা, একটি টেলিভিশন ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে সে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে আহাদ।

সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী সেনাবাহিনী থেকে ১৯৯২ সালে অবসরে যান। বিপত্মীক ওয়াজি আহমেদে ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরীকে (৪০) নিয়ে মহাখালী ডিওএইচএসের ৪ নম্বর সড়কের ১৪৮ নং বাসায় থাকতেন। তার স্ত্রী আতিয়া বছর ছয়েক আগে গত হন। বড় ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী (৪৪) প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

ইত্যাদি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত