ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

৫ আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ১০ মার্চ ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

রোববার (১০ মার্চ) ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান খান।

প্রতিবেদনে আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া পশ্চিম বালীগাঁও গ্রামের মো. কিতাব আলী ফকির (৮৫), মো. জনাব আলী (৬৮ ও মো. আ. কুদ্দুছ (৬২)।

এছাড়া গ্রেফতারের স্বার্থে মামলার অপর দুই পলাতক আসামির নাম প্রকাশ করেনি সংস্থা।

আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরিত হতে বাধ্য করাসহ মোট দুইটি অভিযোগ তদন্তে তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট শুরুর পর গত ৭ মার্চ এ মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়। তদন্তে মোট ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ৩০ মে আসামিরা ময়মনসিংহের বর্তমান ধোবাউড়া থানাধীন বালিগাঁও গ্রামের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারী হিসেবে চিহ্নিত হাতেম আলী ওরফে গেন্দা মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতিকালীন সময়ে তাকে আটক করার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে হামলা করে।

এ সময় পলায়নরত হাতেম আলীকে তার বাড়ির উঠানে এনে অমানুষিক নির্যাতন করে আসামিরা। এ সময় তার দুই স্ত্রী তাকে রক্ষা করতে এলে তাদের তিন জনকে একসঙ্গে গাছে বেঁধে রেখে তাদের বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র লুণ্ঠন করে। পরে তাদের তিন জনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকিয়ে রেখে বাইরে থেকে আসামিরা দরজায় তালা দিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনার পরে পার্শ্ববর্তী ভারতের শিববাড়ীস্থ মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ পেয়ে হাতেম আলীকে উদ্ধার করেন। এরপর তিনি তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। আসামিরা এ সংবাদ জানতে পেরে হাতেম আলীর বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দেয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আসামিরা তাদের সঙ্গে সশস্ত্র রাজাকার ও পাকিস্তান দখলদার বাহিনী নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানাধীন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং মুকিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও সহযোগিতা প্রদানকারী হিসেবে চিহ্নিত তারাইকান্দি গ্রামের শহীদ নূর মোহাম্মদ হোসেন আকন্দের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নূর মোহাম্মদ ও তার দুই স্ত্রীকে হত্যা এবং নাতী বউকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।

এরপর একই গ্রামের মো. ইছহাক আলী, মো. জমসেদ আলী (গুনা), মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. আব্দুল হেকিমসহ উক্ত গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকার মো. সিরাজ আলী, মো. হাইদার আলী, মো. আব্দুল লতিফ, মো. মীর কাশেম, মো. রমজান আলী সহ অজ্ঞাত আরও ২৮ জনসহ মোট ৪১ জনকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও ৪৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে।

এরপর একই আক্রমণের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পক্ষে ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও সহযোগিতা প্রদানকারী হিসেবে চিহ্নিত তারাইকান্দি গ্রামের মাহমুদ হোসেন আকন্দ ও মিয়া হোসেন আকন্দের বাড়িতে হামলা করে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুণ্ঠন ও মোট ২২টি টিনের ঘরে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে।

নিউজওয়ান২৪/ইরু

আরও পড়ুন
আইন আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত