ঢাকা, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
সর্বশেষ:

সংসদে শপথ-সিদ্ধ ২৯৫, বাকি ফখরুলসহ বিএনপির ‘অ-সিদ্ধ’ ৫

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ২৫ এপ্রিল ২০১৯  

মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি থেকে নির্বাচিত ৬ জন। এদের মধ্যে ‘টিক’ চিহ্নিত জাহিদুর আজ (বৃহস্পতিবার) শপথ নিলেন

মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি থেকে নির্বাচিত ৬ জন। এদের মধ্যে ‘টিক’ চিহ্নিত জাহিদুর আজ (বৃহস্পতিবার) শপথ নিলেন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যতই শপথে ইচ্ছুক দলীয় এমপিদের ‘বেইমান’, ‘প্রতারক’ বলুন না কেন, শেষ পর্যন্ত দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কথাই যেন সত্য হলো। দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়া না নেওয়া প্রসঙ্গে গয়েশ্বর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, কে যে কী করছে বোঝা যাচ্ছে না।

আজ (বৃহস্তপতিবার) সেই কথার বাস্তবতা যেন প্রমাণিত হলো ঠাকুরগাঁও-৩ আসন (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল) থেকে বিএনপির টিকিটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের শপথ নেওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে জাহিদকে নিয়ে শপথ নেওয়া মোট সদস্য এখন ২৯৫ জন-এ উন্নীত হলো। সংসদ সদস্য হিসেবে পবিত্র শপথ পাঠের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত ৩০০ সদস্যের মধ্যে এখন পর্যন্ত ‘শপথ-সিদ্ধ’ হলেন ২৯৫ জন। আর ‘অ-সিদ্ধ’ মানে শপথ না নেওয়াদের দলে এখনো রইলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ তার দলের পাঁচজন।  
 
শপথ না নেওয়ার কারণে সংসদে এখনো ‘অ-সিদ্ধ’ বিএনপির এই পাঁচজন হলেন, বগুড়া-৬ আসন থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বগুড়া-৪ থেকে মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুন উর রশিদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।

এছাড়া বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক রেজাউল করিম বাবলু ট্রাক প্রতীকে বগুড়া-৭ গাবতলী-শাহজাহানপুর আসনে জয়ী হন যিনি আগেই শপথ নিয়েছেন স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে। 

লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, বিএনপি যে ছয়টি আসনে জিতেছে, তার প্রায় সবগুলোই (পাঁচটি) রাজশাহী বিভাগে। বাকি সাত বিভাগে বিএনপি একটিমাত্র আসন পেয়েছে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২তে যা চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত।

এর আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোকাব্বিরের সমালোচনায় তখন বলেন, এরা বেইমান, জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে, প্রতারণা করেছে। এটা তার নিজের দলের সঙ্গে, জনগণের সঙ্গে এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রতারণা।

গত শুক্রবার রাজধানীতে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে রচিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর বিএনপি এমপিদের শপথ বিষয়ে চলমান দোদুল্যামনতার প্রসঙ্গে বলেন, তবে অনেকেই শপথ নিতে আগ্রহী। দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, বিএনপির নির্বাচিতরা বলছেন, জনগণের ইচ্ছে, সংসদে যেতে তাদের চাপ আছে। সুতরাং দল বললে তারা প্রস্তুত এবং তাদের কাপড়-চোপড়ও প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, তারা বলবেন দল বললে আমরা যাব, অন্যথায় যাব না। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে আমরা সংসদে যাব, অন্যথায় যাব না। এই কথাগুলো শুনতে চেয়েছিলাম। তবে এরপরও যদি দল মনে করে সংসদে যাব না, তাহলে আমরা সংসদে যাব না।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে গত রবিবার (২১ এপ্রিল) প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত মানববন্ধনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নেত্রী জেলে থাকবে আর আমরা সংসদে গিয়ে মজা নেব, আর শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করবো- এমন ব্যক্তি বিএনপিতে আছে কি না আমার জানা নেই। যদি থাকে, যথাসময়ে যথাযথ উত্তর তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ঐক্যফ্রন্টের অধীন গণফোরামের অপর নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মনসুরও শপথ নেন।

মির্জা ফখরুল-গয়েশ্বরসহ বিএনপি নেতৃত্ব এবার কী বলেন তা দেখার বিষয়- রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সব মহলই এখন এমন ভাবছেন।
নিউজওয়ান২৪.কম/এসএম

আরও পড়ুন
রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত