ঢাকা, ০৭ মে, ২০২৫
সর্বশেষ:

শিক্ষার্থী শূন্য ‘বিদ্যালয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ৭ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মধ্যম সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পড়েছে। বহুতল ভবন নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের গাফলতি, এলজিইডি কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে এ সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মানের কাজ পায় এস এস এ-ই জয়েন্ট ভেঞ্চার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং ইঞ্জিনিয়ার দীপংকর বণিক। ৪ কোটি ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৮৫ টাকা ব্যায় ধরা হয়। শিডিউল মোতাবেক এ ভবনের কাজ শুরু করা হয় ৩/৭/২০১৬ইং তারিখে এবং সমাপ্ত হওয়ার কথা ৩১/১২/২০১৭ইং তারিখে।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার উক্ত ভবন নির্মাণে ফাইলিং এর কাজ শুরু করে মাঝ পথে দীর্ঘদিন ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখে। এমতাবস্থায় পুরো মাঠ জুড়ে নির্মাণ সামগ্রী, বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে অনেকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, চলাচলের পথ, টয়লেট সংযোগ সম্পূর্ণ রূপে অকার্যকর হয়ে পড়ায় সামগ্রীকভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও নষ্ট হয়ে গেছে।

অপরদিকে মাত্র ২টি শ্রেণিকক্ষে অনেকটা গাদা গাদি করে শ্রেণি কার্যক্রম এবং অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করায় সামগ্রিক দৃশ্যে মনে হচ্ছে যেন একটি ভয়ঙ্কর ধবংস্তুপের মাঝে জড়ো সড়ো হয়ে বিদ্যালয়ের আনুসাংগিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষাকার্যক্রম ও চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রাক প্রাথমিকে ১৪ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৮ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৩ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১২ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৭ জন, ৫ম শ্রেণিতে ১৫ জন সহ মোট ৮৯ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। শিক্ষক সংখ্যা ৬ জন, আবার ৬ জনই মহিলা শিক্ষক। ফলে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ভবন নির্মাণের ঠিকাদারদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা এ সব মহিলা শিক্ষকদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না।

বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক খালেদা পারভিন জানান, পূর্বের ভবনের চারটি কক্ষ ভেঙ্গে স্কুল মাঠ সহ আরো বেশ কিছু যায়গা জুড়ে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। বর্তমানে পাশের ভবনের ২টি কক্ষের মধ্যে ৯.৩০ থেকে দুপুর ১২.০০ টা পর্যন্ত প্রাক প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির ক্লাস আবার আর একটি কক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির একত্রে এবং ১২.১৫ থেকে একই কক্ষে ৫ম শ্রেণির শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। ২টি কক্ষে অনেকটা গাদা-গাদি করে শ্রেণি কার্যক্রম ও শিক্ষক কমন রুমসহ অফিস কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় অনেকটা লেজে-গোবরে পরিবেশের মধ্যদিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এ অবস্থায় বেশ কিছু শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এ বিদ্যালয়টি ছাত্র শুন্য হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আকবর হোসেন বাসু জানান, ঠিকাদারের অবহেলার কারণে ভবন নির্মানের কাজ দীর্ঘদিন পড়ে আছে। এলাকাবাসীর পক্ষ হতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার ভবন নির্মাণের কাজটি দ্রুত শেষ করতে বলা হলেও তারা যেন এসব বিষয়ে কোন কর্নপাত করতে চাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকোশলী এ এন এম মনির উদ্দিন জানান, বিদ্যালটির কাজ যথা সময়ে শেষ করতে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগে অনেক লেখালেখি করেছি। ঠিকাদারের গাফলতির কারণে ভবন নির্মাণের কাজটি দ্রুত এগুচ্ছে না। ফলে বিদ্যালয়ের সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

নিউজওয়ান২৪/জেডএস

আরও পড়ুন
স্বদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত