ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

যে পরিবারের সবাই হাঁটে `চার` পা-এ (ভিডিও)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৬ নভেম্বর ২০১৮  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মানুষ দুই পা দিয়ে হাঁটে আর দুই হাত ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজে। আবার অনেক সময় দেখা যায় পায়ের সমস্যা থাকার ফলে হাঁটা-চলার জন্য পায়ের পাশাপাশি হাতের ব্যবহারও করেন অনেকেই। তবে অবিস্মাস্য হলেও সত্য তুরস্কে একটি পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে যে পরিবারের সবাইকে হাঁটার জন্য শুধু দুই পা নয়, দুই হাত আর দুই পা এক সাথেই ব্যবহার  করে।

প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ বছর আগে মানুষ হাঁটতে শিখেছে। কিন্তু এখনো তুরস্কের দুর্গম অঞ্চলের এক গ্রামের কিছু মানুষ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

তারা চার হাতপায়ে বন্য জন্তুর মতো করেই হাঁটে।

কিন্তু কেন সেই গ্রামের মানুষেরা চার হাতপায়ে হাঁটে? তারা কি ডারউইনের বিবর্তনের সেই সূত্রকে চ্যালেঞ্জ করছে? নাকি অন্য কোনো কারণে তাদের মাঝে এ প্রবণতা তৈরি হয়েছে? বিষয়টি নিয়ে প্রথম অনুসন্ধান শুরু করেন একদল তুর্কি বিজ্ঞানী। এরপর তা বিশ্বের অন্যান্য বিজ্ঞানীদেরও নজরে পড়েছে।

অনেকেই বলছিলেন, এরা দুপেয়ে মানুষ ও চারপেয়ে প্রাণীর মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু বিবর্তনের তথ্যপ্রমাণ বলে, এমনটা হওয়ার কথা নয়। কারণ মানুষ এ পর্যায় পেরিয়ে এসেছে বহু বছর আগেই। তাহলে কি এ গ্রামবাসীদের ক্ষেত্রে বিবর্তনের সূত্র বিপরীত দিকে চলছে?

সম্প্রতি সিক্সটি মিনিটস অস্ট্রেলিয়া নামে একটি টিভি অনুষ্ঠানে এ অধিবাসীদের চার হাতপায়ে হাঁটার কারণ তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত গবেষকরা বলেছেন এটা বাস্তবে একটি স্বতন্ত্র শারীরিক বিকৃতি সমস্যা। আর তারা সবাই মূলত একই বংশের সন্তান।

গবেষকরা দেখেছেন, তুরস্কের সে প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী রিজিত ইলনেস ও তার স্ত্রীর ১৮টি সন্তান রয়েছে। তাদের মাঝে ছয়জনেরই একটি বিশেষ ধরনের বিকলাঙ্গতা রয়েছে। পরবর্তীতে তাদের সন্তানদের মাঝেও একই সমস্যা দেখা দেয়।

কী ধরনের সমস্যায় তারা এমন করে হাঁটে তা জানতে তাদের মস্তিষ্কে স্ক্যানও করেন বিজ্ঞানীরা। এতে দেখা যায় তাদের মস্তিষ্কের সেরেবেলাম নামে একটি অংশে সমস্যা রয়েছে। তবে এ সমস্যার কারণেই যে এমনটা হয়েছে তা নিশ্চিত নয়। তাদের জিনগত সমস্যাও রয়েছে বলে মনে করছেন কিছু বিজ্ঞানী।

বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান, বংশগত শারীরিক সমস্যার কারণে তাদের অনেকেরই এ সমস্যা হয়েছে। সে এলাকাটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় সাধারণ চিকিৎসাসেবা পৌঁছেনি। তাই চিকিৎসার মাধ্যমে যে তাদের সঠিকভাবে হাঁটা শেখানো যেত তাও জানত না তারা।

পরে অবশ্য বিজ্ঞানীরা তাদের ফিজিওথেরাপিস্ট ও অন্যান্য চিকিৎসাসেবা দিয়ে সঠিকভাবে হাঁটা শেখানোর উদ্যোগ নেন। তবে বয়স্কদের ছোটবেলা থেকেই চার হাতপায়ে হাঁটার ফলে স্থায়ী শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে, যা হঠাৎ করে ঠিক করা যায় না। এভাবে হাঁটতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাদের সন্তানদেরও একই সমস্যা ছিল। যদিও অল্পবয়সী হওয়ায় তাদের সন্তানদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সোজা হয়ে হাঁটার অভ্যাস করা সম্ভব হয়েছে। 

দেখুন ভিডিও

নিউজওয়ান২৪/টিআর