মানুষের পরে বুদ্ধিমান এই প্রাণী
নিউজ ডেস্ক
ফাইল ছবি
পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী হচ্ছে মানুষ, সেটাই তো সবাই জানি! কিন্তু মানুষের পর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী কোনটি? বিজ্ঞানীদের দাবি, মানুষের পর ডলফিনই সবচেয়ে বুদ্ধিমান! এ নিয়ে অবশ্য বিতর্কও আছে। কয়েকজন বিজ্ঞানী বলছেন, ডলফিনের সদা হাস্যমুখ দেখে হয়তো আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি!
প্রথমেই জেনে রাখা দরকার, ডলফিন কিন্তু কোনো মাছ নয়, এরা স্তন্যপায়ী। তারা মাছের মতোই পানিতে বসবাস করে, সাঁতার কাটে কিন্তু মাছের মত ডিম পাড়ে না। মা ডলফিন ছোট্ট বাচ্চা ডলফিনের জন্ম দেয়। সেই ছোট্ট ডলফিন মায়ের দুধ খেয়ে বড় হতে থাকে। আর এজন্যই এদের স্তন্যপায়ী বলা হয়ে থাকে। অনেকের ধারণা, একসময় ডলফিন ডাঙায় বাস করত। পরবর্তী সময়ে ডাঙায় প্রতিকূল পরিবেশ আর জলে খাদ্যের প্রাচুর্যতা দেখে এরা পানির সঙ্গেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। যদিও এর পেছনে খুব একটা যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।
ডলফিন অর্থ ঠোঁট। এদের নাক ঠোঁটের মতো, শরীর লম্বাটে এবং লোমহীন। অধিকাংশ ডলফিন দলবদ্ধভাবে চলে ও প্রধানত মৎস্যভুক। তারা পিঠের একটি ছিদ্র দিয়ে শ্বাস নেয়। এদের ১৬০ থেকে ২০০টি ধারালো দাঁত থাকে। সামুদ্রিক ডলফিন প্রজাতির সংখ্যা ৩২। স্বাদুপানির প্রজাতি ৫টি। এরা দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার নদীতে ভেসে বেড়ায়। সকল প্রজাতির মধ্যে বোতলমুখো ডলফিন, গোলাপি ডলফিন, স্পিনার ডলফিন ও পরপয়েজ উল্লেখযোগ্য। নদীর ডলফিন কিছুটা ছোট আকারের। দেহের দৈর্ঘ্য ২.৭ মিটার পর্যন্ত হয়। এরা ঘোলা পানির বাসিন্দা। এদেশে দেখা যায় ডলফিনেরই এক প্রজাতি— শুশুক। আগে পদ্মা, মেঘনা, শীতলক্ষ্মাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে এদের প্রায়ই দেখা যেত। নদীদূষণ, পানিতে পর্যাপ্ত খাবারের অভাব, আরো নানা কারণে এদের এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। তবে কর্ণফুলী আর সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীগুলোয় এখনো শুশুকের দেখা মেলে।
আত্মসচেতনতা এবং ব্যথা ও দুঃখ-দুর্দশা অনুভব করে তা কীভাবে কমানো যায়- এসব বিষয়ে মানুষ যেমন বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে কাজ করে থাকে, ঠিক তেমনি ডলফিনও প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে বলে গবেষণায় জানা গেছে৷ এছাড়া পরস্পর মিলেমিশে থাকার স্বভাব মানুষের, তাও অনেকটা পাওয়া যায় ডলফিনের স্বভাবে। অর্থাৎ আগে যেমন ধারণা করা হতো যে, ডলফিন অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর চেয়ে বুদ্ধিমান, তারা আসলে তার চেয়েও বেশি বুদ্ধি রাখে বলে বিজ্ঞানীরা জানান। এদিকে মানুষের মস্তিষ্ক এবং ডলফিনের মস্তিষ্কের আকারের অনুপাত প্রায় কাছাকাছি। আর তাই তাদের বুদ্ধির পরিমাণও মানুষের কাছাকাছি। ডলফিনদের প্রত্যেকের আলাদা নাম রয়েছে বলেও প্রমাণ মিলেছে। যা তারা এক ধরনের ভিন্ন ভিন্ন হুইসেলের মতো শব্দ করে প্রকাশ করে।
সমুদ্রে পথহারা নাবিককে কিনারা খুঁজতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি অথৈ সাগরে জাহাজ ডুবতে বসলে হাঙরের মতো হিংস্র প্রাণীর হাত থেকেও মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে ডলফিন। ডুবন্ত নাবিকের চারপাশে ঘুরে তৈরি করে ডলফিন বর্ম। তাই যেখানে ডলফিনের দেখা মেলে সেখানে অনেকটাই নিশ্চিন্ত সমুদ্রচারীরা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাচ্চাদের সঙ্গে এরা খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ করে। ছেলে, মেয়ে বা শিশু শনাক্ত করার মতো বুদ্ধিও ডলফিনের আছে।
এরা অনুকরণপ্রিয় এবং বিভিন্ন আকার-ইঙ্গিত সহজেই বুঝতে পারে। তাই অনেক দেশে ওশেনরিয়াম বা ওয়াটার পার্কে ডলফিনের মজার মজার খেলা দেখানো হয়। এ ছাড়া সমুদ্রে অনেক সময় মাছ ধরার কাজেও জেলেরা ডলফিনের সাহায্য নেন। বুদ্ধিমান প্রাণীটি মাছের ঝাঁককে তাড়া করে জেলের জালের দিকে নিয়ে যায়। ডুবন্ত নাবিকদের ডলফিন নিজের পিঠে তুলে তীরে পৌঁছে দিয়েছে, এমন ঘটনাও শোনা যায়।
নিউজওয়ান২৪/জেডএস
- বাঙালির বংশ পদবীর ইতিহাস
- গন্ধভাদালি লতার উপকারিতা
- ‘ময়ূর সিংহাসন’
- মিশরীয় সভ্যতা এবং নীল নদ
- মধ্যযুগের ইতিহাস
- ব্যবহারের আগে জানুন প্লাস্টিক বোতলে চিহ্নের মানে কী
- পবিত্র কাবা শরীফের অজানা যত তথ্য
- হ্যালুসিনেশন আসলে কী, রোগ না অন্য কিছু?
- পিরামিডের অজানা তথ্য…
- বিকাশ নগদ এবং রকেট’র ভুল নম্বরে টাকা চলে গেলে ফেরত পাবেন যেভাবে
- চুম্বকের আদ্যোপান্ত...
- ‘চুম্বন’ আদর ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
- ‘রক্ত’ রঙের রহস্য...
- ‘ধানমন্ডি’ নামকরণের ইতিহাস
- মানুষের পর বুদ্ধিমান প্রাণী...