মনগড়া প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে সরকারপন্থী মিডিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রপাগান্ডার সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র সুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে প্রকাশিত খবর ভিত্তিহীন বলে দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সূত্রবিহীন একটি খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, খালেদা জিয়া প্যারোলে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এমনকি তারা তারিখও বলে দিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো-বিএনপির কোনও সূত্র এমন কিছুই জানে না।
সরকারপন্থী মিডিয়াগুলো মনগড়া প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সাকসেসফুলের জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে।
খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গতকাল বুধবারও চিকিৎসকরা বলেছেন, তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এই অবস্থায় তিনি চাচ্ছেন পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এই সরকার তার জীবন হুমকির মুখে ফেলে সুদূরপ্রসারী স্বার্থ সিদ্ধির ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।’
খালেদা জিয়া আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবেই জামিনে মুক্তি পাবেন এমনটা তার আইনজীবীরা বলছেন বলে দাবি জানিয়েছেন রিজভী। আইনজীবীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তা সহজে জামিনযোগ্য। আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি চান তিনি।
ওয়ান ইলেভেনের মাইনাস ফরমুলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে মাইনাস ফরমুলা বন্ধ করুন। ওয়ান ইলেভেনের সরকার মাইনাস-টু ফরমুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রীর আপসহীন কঠোর ভূমিকায় তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তারা সফল হলে আজ আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।’
প্যারোলের নামে মাইনাস তত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না বলেও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন রিজভী। এছাড়া আদালতে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিনে আর বাধা দেবেন না। আদালতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের ওপর থেকে অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই আমাদের নেত্রী আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে বেরিয়ে আসবেন।
আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দেওয়া পরামর্শ দিয়ে অপতৎপরতা বন্ধ না করলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন রিজভী।
এদিকে দেশের কোথাও নারী-শিশুরা নিরাপদ না বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তিন বছরের কন্যা শিশু থেকে শুরু করে ষাট বছরের বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী নারী, কেউই বাদ যাচ্ছে না। আর প্রতিটি ঘটনা ঘটাচ্ছে এই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। নাৎসিবাদের এই অবিস্মরণীয় মূর্তি এ দেশে আর কখনোই দেখা যায়নি। এগুলো গণতন্ত্র হত্যার বিজয় অভিযানের বাই-প্রোডাক্ট।’
এছাড়া মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বলেও দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, সেখানকার অন্ধকারের ভোটের এমপি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ এবং পুলিশের সহযোগিতায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওলামা লীগ নেতা সিরাজ অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল দিনের পর দিন।
তিনি বলেন, অধ্যক্ষ সিরাজের নির্দেশেই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনের জ্ঞাতসারে পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের টাকায় ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদত হোসেন শামীম ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুদ্দিনের সক্রিয় অংশগ্রহণে সরকারি দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা প্রভাবশালীরা পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটিয়েছে। এরা কতটা বেপরোয়া এবং শক্তিশালী যে, খুনির পক্ষে প্রকাশ্যে মিছিল করে হুমকি পর্যন্ত দেয়।
রিজভী বলেন, নুসরাতের পরিবারকে ডেকে প্রধানমন্ত্রী ধরিয়ে দিলেন একটি ব্যাংকের নিয়োগপত্র। জনমনে ধারণা, দলীয় নেতা–কর্মীদের বাঁচানোর সনদই হচ্ছে এই নিয়োগপত্র। যাতে করে পরিবারটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মামলার গতি বদল করা যায়।
তিনি আরও বলেন, নয় দিন হলো নুসরাত মারা গেছেন। অথচ এই দুষ্কর্মের সহযোগিতাকারী সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর নুসরাত জাহানকে ডেকে নিয়ে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে লাঞ্ছিত করে, সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেও তার কোন বিচার হচ্ছে না।
রিজভী বলেন, “যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সরকার পুলিশ প্রশাসনের কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলেছে সরকার। কারণ মিডনাইট নির্বাচনে পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে এখন রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। এই সরকারের কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট হচ্ছে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তারা জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য দোষীদের সাজা দেওয়া হবে বলে অভিনয় করছে।
নিউজওয়ান২৪/ইরু
- কেন ‘উল্টে’ গেলেন এরশাদ
- বিএনপিতে যে পদ পাচ্ছেন তারেক স্ত্রী জোবাইদা
- এরশাদের এ কেমন অসুখ?
- এরশাদের ‘তেলেসমাতি খেইল’
- আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ, বেকায়দায় ঐক্যফ্রন্ট
- হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মাহি
- কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?
- বিএনপির মনোনয়ন চিঠি
একই আসনে স্বামী-স্ত্রী! - ফের সক্রিয় হচ্ছেন এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা?
- ড. কামালের ‘ডাইরেক্ট’ হুমকি
- নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ড. কামাল
- এরশাদের মেয়ে মৌসুমীর বিরুদ্ধে মামলা
- যেসব তথ্য গোপন করলেন এরশাদ
- ভিডিও কলে স্ত্রীর সঙ্গে মিলন, কী কথা হয় তাদের? (ভিডিও)
- স্বামী তন্ময়ের সঙ্গে মাঠে স্ত্রী, ভোট চাইলেন নৌকায়! ভিডিও