ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

ফোর্বসের সেরা তালিকায় পাঠাও-এর ইলিয়াস ও উন্মাদের মোরশেদ

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ৩ এপ্রিল ২০১৯  

দুই গর্বিত বাংলাদেশি ইলিয়াস ও মোরশেদ   -ফাইল ছবি

দুই গর্বিত বাংলাদেশি ইলিয়াস ও মোরশেদ -ফাইল ছবি

ত্রিশ বছরের কম বয়সী যারা উদ্ভাবনী ধারণা আর উদ্যোগের মধ্য দিয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন তাদের মধ্যে শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছেন দুই বাংলাদেশি যুবক। তারা হচ্ছেন পাঠাও-এর হুসাইন এম ইলিয়াস এবং কার্টুনিস্ট আবদুল্লাহ আল মোরশেদ। 

বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের ২০১৯ সালের ‘থার্টি আন্ডার থার্টি এশিয়া লিস্ট’-এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সেবা পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহী হুসাইন এম ইলিয়াস কনজুমার টেকনোলজি খাতে এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের শীর্ষ ৩০ তরুণ উদ্যোক্তার একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

অপরদিকে, ফান ম্যাগাজিন উন্মাদের সহকারী সম্পাদক কার্টুনিস্ট আবদুল্লাহ আল মোরশেদ ফোর্বসের করা ওই শীর্ষ তালিকায় ‘মিডিয়া, মার্কেটিং অ্যান্ড অ্যাডভার্টাজিং’ ক্যাটাগরির সেরা ৩০ তরুণের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।আব্দুল্লাহ  ‘দি গ্লোবাল হ্যাপিনেস চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে ধারাবাহিক কার্টুন এঁকে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন।

ফোর্বস প্রতিবারের মতো এবারও মোট দশটি ক্যাটাগরিতে সেরাদের নিয়ে তিনশ জনের এই তালিকা তৈরি করেছে। নয়া উদ্যোগ, নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও সাফল্যের বিবেচনায় তিন হাজার নাম থেকে বাছাই করা এই ৩০০ জন মোট ২৩টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এবারের তালিকায় উদীয়মান দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি ভারত ও চীনের তরুণরা অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে রয়েছে। এবারের থার্টি আন্ডার থার্টি লিস্টে চীনের ৬১ জন এবং ভারতের ৫৯ জন তরুণ স্থান পেয়েছেন।

দুই যুবক হুসাইন ইলিয়াস আর সিফাত আদনান মিলে ২০১৬ সালে গড়ে তোলেন রাইড শেয়ারিং সেবা, অন ডিমান্ড লজিস্টিকস ও ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম পাঠাও। পাঠাও এখন মূলত মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিংয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলাদেশে।উবার-এর মতো তাদের প্রাইভেট কার রাইড শেয়ারিং সেবাও আছে।
পাঠাওয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল পাঁচটি মোটরবাইক আর ৩০ জন কর্মী নিয়ে।সেই পাঠাও এখন এই খাতে বাংলাদেশের শীর্ষ কোম্পানি। বাইক ও গাড়িতে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া এবং বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সেবা দিচ্ছেন পাঠাওয়ের রাইডাররা।

রাজধানী ঢাকায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর পাঠাওয়ের সেবা এখন বিস্তৃত হয়েছে দেশের আরও চারটি বড় শহরে এবং নেপালের কাঠমান্ডুতে। আর এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ৫০ লাখ রাইডার, যাদের ‘ফ্রিল্যান্স’ কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে পাঠাওয়ের কল্যাণেই।

ফোর্বস লিখেছে, পাঠাওয়ের অ্যাপটিকে দেশের সেরা অ্যাপ হিসেবে পরিচিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন ইলিয়াস। সেই পাঠাওয়ের বাজার মূল্য এখন ছাড়িয়েছে ১০ কোটি ডলার।
উন্মাদের সহকারী সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মোরশেদ নতুন এক যুদ্ধ শুরু করেন ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে। শুরু হয় যুদ্ধ আর ধ্বংসের বিরুদ্ধে তার কলম-তুলির লড়াই।
সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নির্মমতা আর বেদনার ছবিগুলোকে তিনি পাল্টে দিতে শুরু করেন আশা আর আনন্দের বার্তায়। এর ধারাবাহিকতায় শুরু হয় কার্টুনিস্ট মোরশেদ মিশুর ‘গ্লোবাল হ্যাপিনেস চ্যালেঞ্জ’ সিরিজ।

মোরশেদ মিশুর ওই সিরিজ দ্রুত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর নজর কাড়ে। অন্যান্য দেশের আঁকিয়েরাও যোগ দেন এই চ্যালেঞ্জে।
ফোর্বস লিখেছে, যুদ্ধ আর সহিংসতা না থাকলে এই পৃথিবী কতটা সুন্দর হতে পারত, সেটাই কার্টুনের মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন মোরশেদ মিশু।
মোরশেদ মিশু এ প্রসঙ্গে  বলছেন, ফোর্বসের এই স্বীকৃতি হয়তো দেশের তরুণ কার্টুনিস্টদেরও উৎসাহ যোগাবে।
এছাড়া মিশু তার স্বীকৃতিটাকে দেখছেন অ্ন্যভাবে। তার ভাষায়, প্রাপ্তির জায়গাটা হচ্ছে, বাংলাদেশের নামটা আমার নামের পাশে চলে আসে। বাংলাদেশকে আমার কাজ দিয়ে পরিচিত করতে পারছি বিশ্বের ময়দানে।

মিশু এরইমধ্যে আরেকটি নতুন কার্টুন সিরিজ শুরু করছেন ‘গ্লোবাল গড ফরবিড চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে । যে ধরনের পরিস্থিতিতে আমরা কেউ নিজেদের দেখতে চাই না, তেমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব নেতাদের বসিয়ে দিলে ছবিটা কেমন দাঁড়ায়, সেটা দেখাই এই সিরিজের চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি।  

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে 

অর্থ-কড়ি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত