প্রেমিক সৈকত যে কারণে রুম্পাকে হত্যা করে বলে সন্দেহ পুলিশের
স্টাফ রিপোর্টার
পুলিশ হেফাজতে সৈকত, ইনসেটে রুম্পা -ফাইল ফটো
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আবদুর রহমান সৈকতের। সম্প্রতি সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন প্রেমিক সৈকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর একটি বাসার ছাদে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুম্পাকে।
রুম্পার মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রেমিক সৈকতকে আটক করে পুলিশ। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অনেকটাই নিশ্চিত যে রুম্পাকে সৈকতই হত্যা করেছে। এ কারণে তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিল ডিবি। সৈকত আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বিবিএ’র অধ্যয়নরত এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাবেক ছাত্র। বলে জানা গেছে
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম) এই আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আসামি সৈকতকে ঢাকার আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ বাসার সামনে অজ্ঞাত ২০-২২ বছর বয়সী এক নারী উপুড় অবস্থায় পড়ে ছিলেন। তখন স্থানীয় লোকজন লাশটি ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখেন। অজ্ঞাত আসামি ওই নারীকে ঘটনাস্থলের আশপাশের তিনটি ভবনের যে কোনো একটি ভবন থেকে নিচে ফেলে দেন বলে মামলায় বলা হয়।
উদ্ধারের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত রুম্পার লাশটি অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে ছিল। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়েও ধোঁয়াশা। পরে গোয়েন্দা তৎপরতায় তার নাম-পরিচয় উদ্ধার হয়, জানা যায় হবিগঞ্জে কর্মরত পুলিশ ইন্সপেক্টর রোকনউদ্দিনের মেয়ে রুম্পা।
রহস্যজনক এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা জোন টিমের পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস হত্যাকাণ্ড বিষয়ে আদালতকে জানান, রুম্পা ও সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দিন দিন সম্পর্কে অবনতি ঘটে তাদের। গত ৪ ডিসেম্বর বিকেলে তারা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বাইরে দেখা করেন। তখন কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন সৈকত। রুম্পা বারবার অনুরোধ করলেও সৈকত সম্পর্ক ধরে রাখতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ নিয়ে দু’জনের মনোমালিন্য ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে ওই একইদিন রাত পৌনে ১১টায় সৈকত তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে রুম্পাকে ৬৪/৪ নম্বর সিদ্ধেশ্বরীর ওই বাড়িটির ছাদে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন একসময়ের প্রিয়তমা রুম্পাকে। পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনা এমনি ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে এটাি জোর সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে সৈকতের রিমান্ডের আবেদন করা হয় আদালতে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ বাসার সামনে অজ্ঞাত ২০-২২ বছর বয়সী এক নারীর লাশ উপুড় অবস্থায় পড়ে ছিল। তখন স্থানীয় লোকজন লাশটি ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে অজ্ঞাত আসামি ওই নারীকে ঘটনাস্থলের আশপাশের তিনটি ভবনের যে কোনো একটি ভবন থেকে নিচে ফেলে দেন বলে মামলায় প্রাথমিকভাবে বলা হয়।
রাত পৌনে ১১টার দিকে অজ্ঞাত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছুটে যান এবং আলামত সংগ্রহ করেন। সুরতহালে পুলিশ মরদেহের শরীরে গুরুতর কিছু আঘাতের চিহ্ন পায়। সংগৃহীত আলামতসমূহ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে।
মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর রুম্পার পরিচয় জানা গেলে তার সতীর্থ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, রুম্পা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনও করছেন শিক্ষার্থীরা।
এরমধ্যে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে সৈকতকে আটক করে ডিবিতে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার তাকে রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সৈকতের বাবা-চাচা মারা গেছেন এক সপ্তাহ আগে
রিমান্ড আবেদনের শুনানি চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হেমায়েত উদ্দিন খান আদালতকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামি সৈকতকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। অপরদিকে, আসামি সৈকতের আইনজীবী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া আদালতের কাছে দাবি করেন, সৈকত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। এক সপ্তাহ আগেই তার বাবা ও চাচা মারা গেছেন। রুম্পার মৃত্যু আত্মহত্যা না হত্যা, এ নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। এমন অবস্থায় তাকে রিমান্ডে নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আসামিকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
সৈকত আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বিবিএ’র ছাত্র বলে জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার রাজিব আল মাসুদ। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন অপর একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডিতে নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে (সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে ৬৪/৪ নম্বর বাড়ির) সিসি টিভির ফুটেজ উদ্ধার করেছে রমনা থানা পুলিশ। ফুটেজে রুম্পাকে (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে ভবনে প্রবেশ এবং রাত পৌনে ১১টায় ভবন থেকে পড়ে যেতে দেখা গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, যে ভবনের কাছে রুম্পা পড়েছিল ওই ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রদের একটি মেস রয়েছে। ঘটনার পর সেখানে গিয়ে মেসটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
নিউজওয়ান২৪.কম/এআই
- কুমিল্লার এক মামলায় জামিন পেলেন খালেদা
- জঙ্গি অর্থায়ন: শাকিলার জামিন ২০ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত
- ফাঁসির মঞ্চ নেই ফেনীতে: কুমিল্লা-চট্টগ্রাম জেলে যাবে রাফির খুনিরা
- জামিন আবেদন নাকচ, ‘শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী’ কারাগারে
- আবরার হত্যা: কারাগারে ‘পিটুনি-সম্বর্ধনা’ অনিককে
- খসরুর জামিন বাতিল, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
- রেনু হত্যায় গুজব রটনাকারী রিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
- কারাগারে নেয়া হচ্ছে খালেদাকে
- ঐতিহাসিক ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা
- সস্ত্রীক জামিন পেলেন মির্জা আব্বাস
- অরিত্রীর আত্মহত্যা: মামলার প্রতিবেদন ৯ জানুয়ারি
- ৯ বছর পর জানা গেল!
ডিভোর্সড স্ত্রীকে বারবার দেখতে যাওয়ার মাশুল... - প্রেমিক সৈকত যে কারণে রুম্পাকে হত্যা করে বলে সন্দেহ পুলিশের
- পাপিয়াকাণ্ডে মানবজমিন সম্পাদকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এমপির মামলা
- সেফুদার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ায় দুই মামলা