ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

পাপিয়াকাণ্ডে মানবজমিন সম্পাদকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এমপির মামলা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ১২ মার্চ ২০২০  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত


যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িত’দের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

মাগুরার আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর মঙ্গলবার (১০ মার্চ) ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা করেন।

মামলায় মতিউর রহমানের পাশাপাশি মানবজমিনের প্রতিবেদক আল আমীনসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেরে বাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি।

মানবজমিনের সংবাদে কারো নাম উল্লেখ করা না হলেও সোশাল মিডিয়ায় সেই সংবাদ ছড়ানোর পাশাপাশি নামের তালিকাও দিচ্ছেন, এমন ৩০ জনের নাম তাদের ফেইসবুক আইডিসহ উল্লেখ করে তাদের আসামি করেছেন শিখর।

ওসি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সংসদ সদস্য এমপি হোস্টেলে অবস্থান করে তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে তা দেখার পর এই মামলাটি করেছেন।

মামলার তদন্ত চলার পাশপাশি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) পাপিয়াকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারের পর তার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক ‘যৌনসেবার কারবার’র কথা র‌্যাব জানায়।

পাঁচতারা ওয়েস্টিন হোটেলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট মাসের পর মাস ভাড়া করে পাপিয়ার কারবার চালাতেন বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

সেখানে যাতায়াতকারী হিসেবে কয়েকজন আমলা, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কর্মকর্তা, টক শোর আলোচক, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীর কথা উল্লেখ করা হয়েছিল গত ২ মার্চ প্রকাশিত মানবজমিনে।

ওই সংবাদ প্রতিবেদনে কারো নাম উল্লেখ করা না হলেও সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জনের নাম উঠে আসছে।

সেই তালিকায় কুষ্টিয়ার সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের নাম জড়িয়ে লেখার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ওই জেলারই এক আওয়ামী লীগ নেতা।

সংসদ সদস্য জর্জের মানহানির অভিযোগে তার এক সমর্থক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা করলেও দ্বিতীয় মামলায় সংসদ সদস্য শিখর নিজেই বাদী হলেন।

এজাহারে তিনি মানবজমিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে বলেন, ‘পাপিয়ার মুখে আমলা, এমপি, ব্যবসায়ীসহ ৩০ জনের নাম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ইঙ্গিতপূর্বক সংবাদ পরিবেশন করা হয়।

ওই সংবাদ প্রকাশের পর ফেইসবুকে নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন জনের ফেইসবুকে পোস্ট-ছবি দেখার কথা জানান শিখর, যার মধ্যে নিজের নামও দেখেছেন।

এজাহারে তিনি বলেন, ‘আমার ও অন্যান্যদের নামে মিথ্যা, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করিয়া আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও অপদস্থ করিয়াছে এবং আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করিয়াছে।’

‘আমি মনে করি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গসহ ষড়যন্ত্রকারীরা পরস্পরের যোগসাজশে উদ্দেশ্যমূলক এই সংবাদ পরিবেশন করে আমাকে সমাজে হেয় করার অপচেষ্টা করেছেন,’ বলেছেন শিখর।

মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য শিখর দ্বিতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মো. আসাদুজ্জামানের ছেলে। 

মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান অ্যামনেস্টির

মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

মামলার পর সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়ার ‘ক্যাম্পেইনার’ সাদ হাম্মাদি ই-মেইলে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে সরকারকে বিষয়টি নিয়ে না এগোতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে মামলাটি তুলে নিতে।’

এই মামলাটিকে সমালোচনার মুখে থাকা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরেকটি অপব্যবহারের নজির হিসেবে দেখছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

নিউজওয়ান২৪.কম/এমওেজড

আরও পড়ুন
আইন আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত