ঢাকা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ২ উইকেট

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০২, ৩ নভেম্বর ২০১৮  

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত


২ উইকেট তুলে নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনের মতো দ্বিতীয় সেশনেও ২ উইকেট পেয়েছে স্বাগতিকরা। সিলেট টেস্টে প্রথম দিনের চা বিরতির আগে জিম্বাবুয়ে তাই হারিয়েছে ৪ উইকেট। এই পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে তাদের স্কোর ছিল ৭৬ ওভারে ২০১ রান।

সিকান্দার রাজার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল সরাসরি আঘাত করলো স্টাম্পে। টেস্ট অভিষেকে প্রথম উইকেট প্রাপ্তি এর চেয়ে ভালো আর হতে পারতো না নাজমুল ইসলামের জন্য। বাঁহাতি এই স্পিনারের আঘাতে জিম্বাবুয়ে হারায় চতুর্থ উইকেট।

টেস্ট উইকেটের জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হলো না নাজমুলকে। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওভারেই পেয়ে গেলেন উইকেট। সিকান্দারকে বোল্ড করে নামের পাশে যোগ করেন ক্রিকেটের লম্বা ফরম্যাটের প্রথম উইকেট। তার শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যান করেন ১৯ রান।

শুরু থেকেই চমৎকার বল করছিলেন আবু জায়েদ রাহী, তবে সাফল্য পাচ্ছিলেন না। অবশেষে পেলেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তার শিকার হয়ে ফিরে গেছেন হাফসেঞ্চুরিয়ান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তার আউটের পর সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৮ রান।

ওপেনিং সঙ্গী ব্রায়ান চারি ফিরে গেলেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মাসাকাদজা। চমৎকার ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুইয়েন অধিনায়ক পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফসেঞ্চুরি। লাঞ্চের আগে ৫০ পূরণ করলেও দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে তাকে ছাড়তে হয় মাঠ।

আবু জায়েদ রাহীর অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া বল সরাসরি আঘাত করে তার প্যাডে। ফিল্ড আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর মাসাকাদজা রিভিউ নেওয়ার আলোচনা করেন অন্যপ্রান্তে থাকা শন উইলিয়ামসের সঙ্গে। যদিও নিশ্চিত আউট জেনে রিভিউ আর নষ্ট করেননি ৫২ রান করা মাসাকাদজা।

২ উইকেট নিয়ে লাঞ্চে গেছে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের জোড়া আঘাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম সেশন শেষে সুবিধাজনক জায়গায় বাংলাদেশ। বাঁহাতি এই স্পিনার তুলে নিয়েছেন ব্রায়ান চারি ও ব্রেন্ডন টেলরের উইকেট দুটি। লাঞ্চের আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৩১ ওভারে ২ উইকেটে ৮৫ রান।

আবারও তাইজুল ইসলামের আঘাত। বাঁহাতি স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ব্রেন্ডন টেলর।

তাইজুলের এই উইকেটে তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব পাবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শর্ট লেগে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। তাইজুলের বল টেলরের ব্যাট ছুঁয়ে নিচু হয়ে গিয়েছিল, তবে মাটিতে পড়ার আগেই বল তালুবন্দি করেন শান্ত। তাতে বাংলাদেশ পায় টেলরের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

ব্যাট হাতে তাই প্রথম ইনিংসটা একেবারেই ভালো কাটেনি টেলরের। আউট হওয়ার আগে করেছেন মাত্র ৬ রান।

তাইজুল ইসলামের হাত ধরে বাংলাদেশ পেল প্রথম উইকেট। এই স্পিনারের বলে ফিরে গেছেন ব্রায়ান চারি।

বোলিংয়ে শুরুটা ভালো ছিল না তাইজুলের। হ্যামিল্টন মাসাকাদজার সামনে দিতে হয়েছে কঠিন পরীক্ষা। অবশ্য স্বরূপে ফিরতে সময় নেননি এই স্পিনার। চারিকে সরাসরি বোল্ড করে তিনি বাংলাদেশকে এনে দেন প্রথম উইকেট। তাইজুলের লাইনের থাকা বল স্টাম্প ছেড়ে বিগ শট খেলতে চেয়েছিলেন এই ওপেনার, কিন্তু বল ব্যাটে না লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। ১৩ রানে শেষ হয়ে যায় চারির ইনিংস।

টেস্ট অভিষিক্ত সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে অলরাউন্ডার আরিফুল হক ও স্পিনার নাজমুল ইসলামের।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে তাদের আগেই, এবার টেস্ট আঙিনাতেও পা রাখলেন আরিফুল ও নাজমুল। অলরাউন্ডার আরিফুল একাদশে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে কাজ করবেন আবু জায়েদ রাহীর সঙ্গে। স্পিন নির্ভর পিচে স্পিনারের সংখ্যা বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। অভিষিক্ত নাজমুলের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে আছেন তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে টস হেরেছে বাংলাদেশ। টস জয়ী ‍জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাংলাদেশকে নামতে হয়েছে ফিল্ডিংয়ে।

সিলেটের অভিষেক টেস্ট জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বাংলাদেশ। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তেমন প্রত্যাশার কথাই জানিয়েছেন। আগের ৭টি টেস্ট ভেন্যু জয় দিয়ে রাঙাতে পারেনি টাইগাররা। এবার ইতিহাস বদলানোর অপেক্ষায় স্বাগতিকরা। দলের সবার সংকল্প প্রতিধ্বনিত মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে, ‘ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা টেস্ট সিরিজে খেলতে নামব। আমি সিরিজ জিততে আশাবাদী। ভেন্যুটা অনেক সুন্দর। আমরা জয় দিয়ে সিলেটের অভিষেক টেস্ট উদযাপন করতে চাই।’

এক সময় পিছিয়ে থাকলেও এখন জিম্বাবুয়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানেই তা প্রতিফলিত। টেস্টে দুই দলের শেষ চারটি লড়াইয়েই বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। তবে অতীতের সাফল্যে এখনও এগিয়ে অতিথিরা। দুই দলের আগের ১৪টি টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি, জিম্বাবুয়ে ৬টি, বাকি ৩ ম্যাচ ড্র।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী।

জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ব্রেন্ডন টেলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা (উইকেটরক্ষক), ব্র্যান্ডন মাভুতা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা।

নিউজওয়ান২৪/এমএম

খেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত