ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: সূর্যস্নান আর একটি পতাকা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:১২, ৭ অক্টোবর ২০১৮  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

পৃথিবীতে এমন অনেক ছবিই আছে যেগুলোর দেখলে প্রথমে খুব সাধারণ ছবি মনে হয়। তবে এর পিছনের কারণগুলো আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। আর ঠিক তেমনই একটি ছবি এটি। প্রথম দেখায় তেমন কোনো রহস্য খুঁজে না পাওয়া গেলেও তখনকার হিসেবে ছবিটি বেশ তাৎপর্যময়

সাদা চোখে দেখা যাচ্ছে একজন জাপানি, কোরিয়ান বা চাইনিজ তরুণী সমুদ্র সৈকতে রোদ পোহাচ্ছে। এই ধারণাটা মোটামুটি ঠিক-ই আছে। তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরো কিছু বিষয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিচে সূর্যস্নানের (সান বাথ) সময়ে আত্মরক্ষার্থে পাশের চৌকিতে একটি চাইনিজ পতাকা গেঁথে রাখেন ছবির তরুণী রুথ লি। এই ঘটনা ১৯৪১ সালের ১৫ ডিসেম্বরের। কিন্তু আত্মরক্ষার্থে জাতীয় পতাকা কেন? 

মায়ামি সৈকত এলাকার একটি চীনা রেস্টুরেন্টের কর্মী রুথের জন্য এদিনটি ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। কিন্তু এর সপ্তাহখানেক আগেই (৭ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪৮ মিনিট) জাপানিরা হাওয়াইতে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাাঁটি পার্ল হার্বারে ইতিহাসের ভয়াবহতম বিমান হামলা চালায়। আচমকা এই হামলায় হতভম্ভ হয়ে যায় ওয়াশিংটন। আর এ কারণেই অনিবার্য পরিণতিতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। 

আর পার্ল হারবারের ঘটনার কারণে তখন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে চরম জাপান বিরোধী মনোভাব উসকে ছিল। অন্যদিকে, মঙ্গোলিয়ান নৃগোষ্ঠীর চাইনিজদের সঙ্গে জাপানিদের চেহারা-সুরতের অনেকটাই মিল রয়েছে। এমন অবস্থায় নিজের ছুটির দিনটিকে নিরুপদ্রব রেখে নিরাপদ সানবাথ করার জন্য এই কৌশল অবলম্বন করেন এই তরুণী। কারণ, আশঙ্কা ছিল তাকে জাপানি মনে করে হেনস্থা করতে পারে মার্কিনিরা।

আজ থেকে ৭৬ বছর আগের ছবি। আক্রমণের ঠিক আগ মুহূর্তে জাপানি যুদ্ধবিমান থেকে তোলা পার্ল হারবার ন্যাভাল বেস। মার্কিন রণতরীগুলো চক্রাকারে ভাসমান দেখা যাচ্ছে। ঘাঁটির মাঝা আকাশে আক্রমণোদ্যত দুটি জাপানি ফাইটারকে দেখা যাচ্ছে।  -উইকিপিডিয়া

প্রসঙ্গত, পার্ল হার্বার হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৮৮টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে জাপানিরা। দুই হাজার চার’শ তিনজন মার্কিন সেনা নিহত আর আহত হয় এক হাজার এক’শ আটাত্তর জন। পক্ষান্তরে হানাদার জাপানিজদের ক্ষয়ক্ষতি ছিল মাত্র ২৯টি যুদ্ধবিমান আর পাঁচটি মিজেট (ক্ষুদ্রাকৃতির) সাবমেরিন ধ্বংস, ৬৪ জনের মৃত্যু আর কাজুও সাকামাজি নামের একজন নাবিক মার্কিনিদের হাতে বন্দি হয়েছিল। 

ছয়টি এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার থেকে হামলায় অংশ নেয় ৩৫৩টি জাপানি যুদ্ধ বিমান। ইতিহাসের ভয়াবহতম এই বিমান হামলায় পার্ল হার্বার নেভাল বেস-এ অবস্থানরত মোট আটটি মার্কিন ব্যাটলশিপের সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার মধ্যে পুরোপুরি ডুবে যায় চারটি। ওই জাপানি হানায় ডুবে যাওয়া মার্কিন রণতরীর মধ্যে আরো ছিল তিনটি ডেস্ট্রয়ার, তিনটি ক্রুজার ও একটি এন্টি-এয়ারক্রাফ্ট ট্রেনিং শিপ। 

নিউজওয়ান২৪/এএস