তিনি আমার দিকে মহাবিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন!
সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু

ইন্টারমিডিয়েটে পড়বার সময় কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বড় ভাইকে সুখবরটি দিলাম। তিনি আমার দিকে মহাবিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন, তারপর হাসলেন।
আমি মিনমিন করে তাঁর হাসির কারণ জানতে চাইলাম। তিনি মুখভার করে বললেন, “বুঝলাম কলেজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে”! তাঁর কথার মানেটা টের পেয়ে কেটে পড়লাম।
অথচ তখনও আমার কলেজে নিয়মিত কালচারাল উইক হত, নাটক হত। প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হত কলেজ বার্ষিকী,একই সাথে কম করে হলেও চার ফর্মার বই আকারে প্রকাশিত হত কলেজের সাহিত্য পত্রিকা ‘বিবর্তন’।
স্থানীয় ফুটবল লীগে দেবেন্দ্র কলেজ লাল এবং দেবেন্দ্র কলেজ সবুজ নামে দুটি টিম নামতো,ক্রিকেট লীগে ছিল দুর্ধর্ষ টিম। জমজমাট থাকতো ইনডোর গেমস্ । প্রতিবছর জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দেবেন্দ্র কলেজ ছিল আলোচিত টিম। সনটা ঠিক মনে নেই শেষবার, সেবার নামকরা তিনটি কলেজকে পরাজিত করে আমাদের দল টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌছেছিল। তিনজনের সেই দলে আমি ছিলাম প্রথম বক্তা,মানে অপেক্ষাকৃত দুর্বল বক্তা ।
এতকিছুর পরও আমার বড়ভাইর কাছে তাঁর কলেজের মান ছিল পতিত। কারণ তিনি আমাকে ভালকরেই চিনতেন। অামি যখন চ্যাম্পিয়ন তখন তার হাসবারই কথা ।
এখন এই কলেজে কয়েক ডজন অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এখন সেই কলেজ,সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের বার্ষিক নাটক শেষ কবে হয়েছে কেউ জানেন না । শেষ কোন বছর কলেজ বার্ষিকী,সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশিত হয়েছে তা রীতিমত গবেষণা করে বের করতে হবে। স্থানীয় ক্রিকেট কিংবা ফুটবল লীগে দেবেন্দ্র কলেজের কোন টিম নামে না প্রায় তিন যুগ ধরে। সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সেও নিখোঁজ। অার টিভি বিতর্ক সেতো এখন সোনার পাথরবাটি।
এমন দুর্গতির খবর আমার বড়ভাই (অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) যদি জানতেন তা হলে যে অট্টহাসিটা দিতেন সে হাসির শব্দ হয়তো প্রশান্তমহাসাগরের তীরে দাঁড়িয়েও শোনা যেত।
এই চিত্র কেবল আমার কৈশরের বিদ্যাপীঠ দেবেন্দ্র কলেজের না,দেশের ৯৯.৯৯ভাগ কলেজেরই। এমন ক্ষয় যেখানে,যে সময়ে,সে সময়ে আমাদের সন্তানেরা,তরুনেরা অন্ধকার পথে হাঁটবেই,আত্মঘাতি পথে যাবেই,ফেরাবে কে ! আমার জেলা শহরের কথা আরেকদিন না হয় বলবো।
[ দ্রষ্টব্য :: আমার বড়ভাইদের সময়ে এই কলেজের কালচারাল উইকে “তবলা লহরা” নামে তবলা বাদনের প্রতিযোগিতাও হত ! ভাবা যায়,উচ্চাঙ্গ তাল-লয়ের তবলা লহরা ! আর অামার সেই বড়ভাই একাধিকবার তবলা লহরায় প্রথমও হয়েছেন। সেই জয়ের ধারাবাহিকতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সময়েও ধরে রেখেছিলেন।]
লেখক: মানিকগঞ্জ নিবাসী বিশিষ্ট সাংবাদিক
নিউজওয়ান২৪.কম/একে
- বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নারী শেখ হাসিনা
- সিরাজুল আলম খান রহস্য, একটি রাজনৈতিক বিতর্ক
- ঘটনা গুরুতর: প্রধান বিচারপতির উত্তরের আশায় পুরো বাংলাদেশ!
- পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো ক্ষতিকর
- ‘ডোপ টেস্ট’ কী? জেনে নিন...
- দুর্লভ সাদা গোখরাটি জ্যান্ত গিলে খেল অপর সাপকে! (ভিডিও)
- মইনুলকে জানি না তবে মাসুদা ভাট্টি চরিত্রহীন: তসলিমা
- আহ! কাকের বাসা
- উন্মাদের পরিবেশ সচেতনতা কার্টুন প্রদর্শনী শুরু
- র্যাবের নয়া এডিজি কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, পিএসসি
- ৫ বছর আগের কার্টুনের বক্তব্য...
- বিবস্ত্র হয়ে ঘর পরিষ্কার, অতঃপর...
- কেমন যাবে আপনার আজকের দিন
- গরীবের কংকাল ঢাকে ধনবানের স্ফীত উদর!
- রওশনের বাবা নাকি এরশাদ?- প্রথম আলো