ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

ট্রাম্প প্রশাসনে ৮ দিনও টিকতে পারলেন না বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুমান

বিশ্ব সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ১১:৫৯, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘আমি হিজাব পরা একজন মুসলমান নারী। মার্কিন প্রশাসনের ওয়েস্ট উইংয়ে আমিই একমাত্র হিজাব পরা কর্মকর্তা ছিলাম। ওবামা প্রশাসন আমাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং সর্বদা কাজে উৎসাহ জুগিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও দেশের জন্য কাজ করতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে (এনএসসি) থেকে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মাত্র ৮ দিন কাজ করতে পেরেছি।’

কথাগুলো বলছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেয়ার ৮ দিনের মাথায় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এনএসসি) থেকে পদত্যাগ করা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুমানা আহমেদ। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ম্যাগাজিন দি আটলান্টিকে লেখা এক নিবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন।

মার্কিন রাজনীতিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য হিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে হোয়াইট হাউসে নিয়োগ পান রুমানা। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। তাকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হোয়াইট হাউসে নিয়োগ দেয়া হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরও তিনি হোয়াইট হাউসে থেকে যেতে চেয়েছিলেন।

এ ক্ষেত্রে তিনি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ও তার সহযোগীদের ইসলাম ও আমেরিকার মুসলিম নাগরিকদের সম্পর্কে আরও সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত করাতেই তিনি নতুন প্রশাসনে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ৮ দিনের মাথায় তিনি রণেভঙ্গ দিতে বাধ্য হন। রুমানা আহমেদ লিখেছেন, ‘বেশিরভাগ আমেরিকান মুসলিমের মতো আমিও ২০১৬ সালজুড়ে দেখেছি কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের সম্প্রদায়কে হেয় করেছেন। এটি সত্ত্বেও, অথবা হয়তো এর কারণেই, আমি ভেবেছি আমার উচিত ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে থেকে যাওয়া।’

কিন্তু ২৭ জানুয়ারি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নাগরিকদের নিষিদ্ধ করে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ প্রণয়নের পর আর হোয়াইট হাউসে থাকা সম্ভব বলে তার মনে হয়নি। রুমানা বলেন, ‘আমি জেনে গেলাম আমি আর এই প্রশাসনে থাকতে পারব না বা কাজ করতে পারব না, যে প্রশাসন আমাকে ও আমার মতো মানুষকে নাগরিক হিসেবে দেখে না, দেখে হুমকি হিসেবে।’ তিনি আরও বলেন, মুসলিমদের প্রতি এই প্রশাসন যে ধরনের আচরণ করছে তা ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের জন্য উপকারী হবে। কারণ, এর ফলে এ জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রোপাগান্ডা আরও বিশ্বাসযোগ্য হবে।

রুমানা আহমেদ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘এই প্রশাসন যেভাবে সহিংস চরমপন্থা মোকাবিলা প্রোগ্রামে শুধু মুসলিমদের ওপর নজর দিচ্ছে ও ‘উগ্র ইসলামী সন্ত্রাসবাদ’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করছে, তা আইএসের প্রোপাগান্ডাকেই শক্ত করবে। দেশজুড়ে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের উত্থান ঘটাবে। তিনি আরও লেখেন, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন এমন কর্মকর্তারা নতুন প্রশাসনে ভালো অবস্থানে নেই। জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে রুমানা আহমেদের বাবা মা বাংলাদেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।  

নিউজওয়ান২৪.কম

প্রবাসী দুনিয়া বিভাগের সর্বাধিক পঠিত