আর্থ কাপে সমর্থন চেয়ে শেখ হাসিনাকে পেলের চিঠি

একসময়ের ফুটবল সম্রাট পেলে বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছেন এবার। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি দিয়েছেন ফুটবল বিশ্বের এই জীবন্ত কিংবদন্তী। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নয়া এক উদ্যোগ নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন তিনি।  

তার সেই আন্দোলনেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাশে চাইছেন পেলে। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় শেখ হাসিনার সোচ্চার ভূমিকা আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোর দৃষ্টি কেড়েছে। মূলত এই বিষয়টাকেই কাজে লাগাতে চাচ্ছেন পেলে।

তিনি চাচ্ছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে ফুটবলের শক্তিকে কাজে লাগাতে। 

‘পেলে ইনিশিয়েটিভ ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড পিস’ এর অংশ হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন পেলে যার নাম হবে ‘পেলে আর্থ কাপ’।  

তিনি আশা করছেন, টুর্নামেন্টটি বিশ্বের সাড়ে তিনশ কোটি ফুটবলপ্রেমীকে এক করবে, তাদের বাঁধবে মৈত্রীর বন্ধনে। মানুষের আবাসভূমি এই পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কট থেকে বাঁচাতে এই ফুটবলপ্রেমীরাই আগামী দিনগুলোতে গড়ে তুলবে সবচেয়ে বড় আন্দোলন।

পেলে ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি সাইফুল আলম ভূঁইয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি ও ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন তিনবার বিশ্বকাপজয়ী (দলের সদস্য) ফুটবলার পেলে। 

এ প্রসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় শেখ হাসিনা আন্তার্জাতিক পর্যায়ে যে ভূমিকা রেখে চলেছেন- তার ভূয়সী প্রশংসা করেন পেলে তার পাঠনো বার্তায়।
ব্রাজিলের সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী পেলে ২৬ মার্চের তারিখ দেওয়া ওই চিঠির শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, গত দশ বছরে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে, যা এক অসাধারণ অর্জন।

চিঠিতে পেলে লিখেছেন,“বিশ্বে বিভক্তি যখন ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তখন ফুটবলের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ঐক্য, সংহতি, ভ্রাতৃত্ব আর শান্তির বন্ধনে সবাইকে বাঁধতে পেলে ইনিশিয়েটিভ ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড পিসের এই উদ্যোগে আপনিও শামিল হবেন, এই প্রত্যাশা আমি করি,” 

চিঠিতে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পেলে। লিখেছেন, দূরদৃষ্টি আর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু ছিলেন হিমালয়সম।  
প্রসঙ্গত, উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশই প্রথম ‘ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করে পরিবেশ সুরক্ষার পদক্ষেপ নেয়। বাংলাদেশই বিশ্বে প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে নিজস্ব জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে। পৃথিবীকে বাঁচানোর আন্দোলনে ‘বিচক্ষণ নেতৃত্বের’ স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ ২০১৫ সালে শেখ হাসিনাকে ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত করে।

অপরদিকে, ৭৮ বছর বয়সী পেলে তার নিজের দেশ ব্রাজিলে শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলেছেন। পাশাপাশি পরিবেশের সুরক্ষা, খেলাধুলা এবং সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে জাতিসংঘ, ইউনেস্কো ও ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বময়। 

পেলে ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি সাইফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উদ্যোগে সমর্থন দিলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ‘দারুণ ব্র্যান্ডিং’ হবে। সৌজন্য: বিডিনিউজ২৪.কম