NewsOne24

গলফের সম্ভাবনাটা ক্রিকেটের সমান: লে. কর্নেল ওয়াহেদ (অব.)

স্টাফ রিপোর্টার

নিউজওয়ান২৪

প্রকাশিত : ০২:৫৪ পিএম, ৩০ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রফেশনাল গলফারস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএ)-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন লে. কর্নেল খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ। গলফ নিয়ে আছেন অনেক দিন ধরেই। দেশে এ খেলার উন্নয়নে তিনি অনেকভাবে অনেক কিছু করেছেন। দেশে পেশাদার গলফার তৈরির জন্য কী করতে হবে এ নিয়ে তার জানাশোনাও ঢের। বসুন্ধরা গ্রুপের শীর্ষপর্যায়ের একজন ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে আসা এই কর্মকর্তা ২০১৫ সালে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন এশিয়ান ট্যুর। এরপর আয়োজন করেছেন বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ বাংলাদেশ ওপেন ২০১৭। বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের গলফের ভবিষ্যত এবং নিজের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি নিউজওয়ান২৪.কম-এর সঙ্গে। বাংলাদেশে পেশাদার গলফারদের নিয়ে চিন্তাভাবনার অগ্রসারথী কর্নেল ওয়াহেদের গলফজগৎ নিয়ে ভাবনাচিন্তা ফুটে উঠেছে তার কথকতায় 

বাংলাদেশে পেশাদার গলফার তৈরিতে বেশ খাটাখাটনি করে আসছে বিপিজিএ। সংগঠনটির সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই কর্মকাণ্ডগুলো কীভাবে দেখছেন?

পেশাদার গলফার তৈরি ও তাদের গড়ে তোলার ধারণা থেকেই সংস্থাটির জন্ম। যে গলফাররা সারা বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। আমি আমাদের গলফে আরো বেশি পেশাদারিত্ব দেখতে চাই। এ সংগঠনের অধীনে আরো অনেক তরুণ সম্ভাবনাময় গলফারদের নিয়ে আসতে চাই। আগে থেকে যারা এ খাতে অবদান রেখে আসছেন, তাদের চলমান কাজগুলোকে আরো বেগবান করতে চাই। আর আমরা বিশ্বাস করি, সাফল্য অর্জনে আমাদের গলফের সম্ভাবনাটা ক্রিকেটের সমান।

বর্তমান কমিটি কোন বিষয়গুলোতে বেশি নজর দিচ্ছে?

সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো গলফারদের পাশাপাশি রেফারি, প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ ও অন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। খেলার নিয়মকানুনের প্রতি তো বটেই, খেলাটার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের যারা গলফার, তারা মূলত নিজেরাই খেলাটি শিখেছে। আমরা ওই শেখার প্রক্রিয়াটাকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই। ওরা যে প্রক্রিয়ায় গলফ শিখেছে ওতে করে খুব বেশি উপরের দিকে যাওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের টার্গেট এখন অনেক উপরে। আমরা গলফ শেখাব, তারপর শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের প্রশিক্ষণই দেব।

পেশাদার গলফারদের জন্য স্পন্সরশিপ একটা বড় ইস্যু। আমাদের অনেক পেশাদার গলফারই স্পন্সরশিপ পায় না। এ নিয়ে বিপিজিএ’র কোনো পরিকল্পনা আছে কি? 

স্পন্সরদের নজর ক্রিকেটকে ঘিরেই। কারণ এতে স্পন্সররা অনেক লম্বা সময় ধরে ফোকাসে থাকতে পারে। তবুও আমরা করপোরেট হাউসগুলোর নজর গলফ ও গলফারদের দিকে আনার চেষ্টা করছি। ব্যাংক ও বড় ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়েছি। আশা করছি পেশাদার গলফারদের জন্য আমরা স্পন্সর ব্যবস্থা করতে পারব। 

গলফারদের সফলতার পেছনে তাদের মানসিক বিষয়গুলো বড় ভূমিকা রাখে। এ নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?

আমার দৃঢ়বিশ্বাস যে, একটি টুর্নামেন্টের প্রকৃতি কেমন তার ওপরও নির্ভর করে গলফের সফলতা। মানসিক স্থিরতা না থাকলে দীর্ঘমেয়াদে সফলতা আসবে না। এই মানসিক ভারসাম্য ও স্থিরতার জন্য আমরা সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলর নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমাদের গলফারদের আরেকটা বড় সমস্যা হলো শারীরিক শক্তি, কর্মক্ষমতা ও ফিটনেস। আমি মনে করি না, চার দিনের একটি ট্যুরের ধকল সামলে নেওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা আমাদের পাঁচ শতাংশ গলফারেরও আছে। আর শারীরিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক দুর্বলতাও কেটে যায়। এর জন্য আমরা খেলোয়াড়দের তিনটি ক্যাটাগরি করতে চাই। একজন গলফার একটি ধাপে পাস করলেই পরের ধাপে যেতে পারবে।

বিপিজিএ, বিজিএফ ও বাংলাদেশ গলফ একাডেমি; এ তিন সংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ের কথা বলেছিলেন- এ সংক্রান্ত বিস্তারিত বলবেন কি?

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিপিজিএ একটা সহজাত সমস্যায় আক্রান্ত। আমাদের দেশের বেশিরভাগ ক্লাবই সদস্য-ভিত্তিক। আবার বেশিরভাগ পেশাদার গলফারই নন-মেম্বার। এ কারণে দেখা যায় ওই পেশাদার গলফারদের মান আরো বাড়ানোর চেষ্টা করার সময় আমাদের বেশ সমস্যার মুখে পড়তে হয়। কারণ, এ কাজটা করার সময় সদস্যদের চর্চা ও খেলার সুযোগ বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা চাই আমাদের পেশাদাররা বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে খেলুক। এতে করে একটি ক্লাবের ওপর চাপ কমে আসে। গলফের মান বৃদ্ধির এ প্রচেষ্টায় সবাইকে এক ছাদের নিচে আনার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করছি। 

আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের পেশাদার গলফারদের অনেকেই আর্থিকভাবে অতটা স্বচ্ছল নন। আর তাই আমি আপাতত অল্প কিছু স্পন্সর যোগাড় করছি যাতে করে গলফারদের ছোটখাট ট্যুরের খরচটা উঠে আসে। বিপিজিএ’র একটা প্রকাশনাও আমরা চালাতে চাই। যেটায় আমাদের গলফের সঙ্গে জড়িত সকল পক্ষের নথিপত্র সংরক্ষিত থাকবে। খেলোয়াড়রা কি কি সফলতা নিয়ে আসছে, খেলতে গিয়ে কি কি ভুল করছে সেসবের রেকর্ড রাখতে চাই। সেটার মধ্যে আবার গলফারদের জন্য শারীরিক ও মানসিক নানান টিপসও থাকবে। আগামী জুন থেকেই এ প্রকাশনার যাত্রা শুরু করতে চাই আমি। 

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে