NewsOne24

মেরাজের শ্রেষ্ঠ উপহার...

ধর্ম ডেস্ক

নিউজ ওয়ান২ ৪

প্রকাশিত : ০৮:৩৪ এএম, ৩ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামর নবুয়তি জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা পবিত্র মেরাজ সংঘটিত হওয়া। নবুয়তের দ্বাদশ বছরের একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয়েছিল এ ঐতিহাসিক ঘটনা। 

পবিত্র মেরাজ সংঘটিত হওয়ার আগে তিনি মক্কা ও তায়েফবাসীর নিকট কোনো ধরনের উল্লেখযোগ্য সাড়া পাননি। প্রতিটি পদে পদে হয়েছিলেন নির্যাতিত, লাঞ্ছিত ও অত্যাচারিত।

সে সময় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেরাজ ইসলামে এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ মেরাজেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর উম্মাহর জন্য দান করেন বিশেষত্ব বা গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা। অসংখ্য হাদিস রয়েছে এ বিশেষত্বের বর্ণনা। যা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

>> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত লাভের পর মেরাজের রাতে তাঁর উম্মাতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারিত হয়। আল্লাহ তায়ালা ওই রাতে প্রথমে তাঁকে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দান করেছিলেন। যা নিয়ে বিশ্বনবি খুশিমনে চলে আসছিলেন।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এ কথা জেনে বিশ্বনবিকে বললেন, আপনার উম্মাত দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ে সক্ষম হবে না। ফলে বিশ্বনবি তাঁর উম্মাতের জন্য ৫০ ওয়াক্ত থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ উপহারস্বরূপ নিয়ে আসলেন।

যারা এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তাদেরকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের সমপরিমাণ ছাওয়াব প্রদান করা হবে।

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, বিশ্বনবি উম্মতের জন্য মেরাজের রাতে তিনটি উপহার নিয়ে আসেন।
১. দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ;
২. সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াতের আমল;
৩. বান্দা আল্লাহর সঙ্গে শিরক না করলে তিনি বান্দার অন্যান্য গোনাহ মাফ করে দেয়ার ঘোষণা।

>> উপরোক্ত তিনটি উপহারের সঙ্গে আরো একটি ঘোষণার কথা হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে- ‘যে ব্যক্তি কোনো সৎকর্ম করার মনস্থ করবে, তা বাস্তবায়ন করার আগেই তার জন্য একটি সওয়াব লিখে দেওয়া হবে। আর সে সংকল্প বাস্তবায়ন করলে দেয়া হবে দশ গুণ সওয়াব।

আর যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কাজ করার মনস্থ করবে, যতক্ষণ সে কাজটি না করবে ততক্ষণ তার জন্য কোনো গোনাহ লেখা হবে না। যদি সে কাজটি করে বসে, তবে তার জন্য একটি গোনাহ লেখা হবে।’

যেহেতু মেরাজের শ্রেষ্ঠ উপহার হলো নামাজ; তাই আল্লাহর সঙ্গে বান্দা নামাজের মধ্যে সুরা ফাতিহা দ্বারা কথোপকথন করেন। নামাজই আল্লাহর নৈটক্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। যা আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য দৈনিক পাঁচ বার ফরজ করেছেন। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দার নামাজের হিসাব গ্রহণ করবেন। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবেন; তার অন্যান্য কাজগুলোর হিসাব প্রদান সহজ হয়ে যাবে।

মানুষের জন্য দ্বিতীয় উপহার হলো সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত যার প্রথম আয়াতে পূর্ববর্তী নবি-রাসূল এবং আসমানি কিতাব ও ফেরিশতাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে ঈমানকে মজবুত করে দ্বিতীয় আয়াত মতে ঈমানের ওপর অটল থাকার জন্য আল্লাহ সাহায্য লাভের পন্থা শিখিয়েছেন।

মানুষের তৃতীয় উপহার হলো কর্ম সম্পাদনে সবসময় ভালো নিয়ত করবে। শুধুমাত্র চিন্তা-চেতনার ওপর নির্ভর করে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য সাওয়াব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যাতে করে বান্দা সব সময় সৎকর্ম সম্পাদনে অগ্রগামী হয়।

মেরাজের রজনীতে যে নিয়ামাত বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে বান্দার জন্য দান করেছেন। তা আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ পালন করার তওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

নিউজওয়ান২৪.কম/আ.রাফি