ফরাসি আইরিস হলেন মিস ইউনিভার্স, সুন্দরীশ্রেষ্ঠদের মুখেও ট্রাম্প!
শোবিজ ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ০৫:১৪ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৫:১৬ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ সোমবার
গতবারের সেই মহাভুলের মাহেন্দ্রক্ষণ। স্টিভের ঘোষণার পর মাথায় মুকুট পড়ানো হচ্ছে ‘ভুল সেরা সুন্দরী’ মিস কলম্বিয়াকে, ডানপাশে সত্যিকারের শিরোপাজয়ী মিস ফিলিপাইন
এবারের মিস ইউনিভার্সের চূড়ান্ত পর্বে সেরা সুন্দরীরা মুখর হয়ে উঠেছিলেন শরণার্থী সংকটের মতো বিশ্ব রাজনীতির গরমাগরম সব বিষয়ে। একই বিষয়ে কৌশলে সমালোচনা হয়েছে নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও।
তবে যে উদ্দেশ্যে এই প্রতিযোগিতা- সেই মিস ইউনিভার্সের মুকুট উঠেছে মিস ফ্রান্স আইরিস মিতেনায়েরের মাথায়।
উত্তর ফ্রান্সের লিলে শহরের বাসিন্দা ডেন্টাল সার্জারিতে পড়াশোনারত ২৪ বছর বয়সী আইরিস বিশ্বসেরা ৮৫ জন সুন্দরীকে পেছনে ফেলে শিরোপা জয় করেন।
ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ৬৫তম মিস ইউনিভার্সের এই আয়োজনে আইরিসের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রথম রানার আপ মিস হাইতি র্যাকুয়েল পেলিসিয়ের ও দ্বিতীয় রানার আপ মিস কলম্বিয়া আন্দ্রেয়া তোভার। চূড়ান্ত বাছাইয়ে স্থান পাওয়া ১৩ প্রতিযোগির মধ্যে ছিলেন মিস পানামা, মিস কলম্বিয়া, মিস ফিলিপাইনস, মিস কেনিয়া, মিস ইন্দোনেশিয়া, মিস ইউএসএ, মিস মেক্সিকো, মিস পেরু, মিস কানাডা, মিস ব্রাজিল, মিস হাইতি, মিস ফ্রান্স ও মিস থাইল্যান্ড।
প্রশ্নোত্তর পর্বে শরণার্থী ও ট্রাম্প ইস্যু
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে চলমান বিশ্বের শরণার্থী সংকট নিয়ে প্রশ্ন করলে উন্মুক্ত সীমান্ত নীতির পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেন ফরাসি ঊর্বশী আইরিস। তিনি বলেন, ফ্রান্সে আমরা সাধ্য মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিশ্বায়ন চাই। আমরা আমাদের দেশে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জাতপাতের মানুষের আবর্তন দেখতে চাই।
অপর ফাইনালিস্ট ২৭ বছর বয়সী মিস কেনিয়া মেরি অ্যাসথার বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রবাসী অনেকেই হয়তো পছন্দ করছেন না, এটা যুক্তরাষ্ট্রের বিভাজিত সমর্থন কৌশলের ফলে ঘটেছে যা দেশটির জনগণকে বিভক্ত করে ফেলেছে। তবে অনেক মানুষ তার বিরোধীতা করলেও আমি মনে করি তিনি ক্ষমতায় এসে যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে একতাবদ্ধ করতে সমর্থ হয়েছেন।
তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পূর্বপুরুষদের দেশীয় প্রতিযোগী মিস কেনিয়াকে ট্রাম্প বিষয়ক প্রশ্ন না করে বরং মিস ইউএসএ কিংবা মিস মেক্সিকোকে তা করা উচিৎ ছিল বলে অনেকে মনে করেন। স্টিভের সমালোচনা করে তারা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই দেশগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। আর মিস কেনিয়া আসলে যা বিশ্বাস করেন তা ওই রকম পরিস্থিতিতে তিনি সত্যি করে বলতে পেরেছেন কি না- তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সমালোচকরা। তারা বলেন, স্টিভ আন্তর্জাতিক ওই অনুষ্ঠানকে মার্কিনি লেভেলে আবদ্ধ করে ফেলেছেন। এখানে আরও উল্লেখ্য, এক সময়ে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল ব্যবসায়ী ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠান।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের মিস ইউনিভার্স অ্যালিসিয়া মাশাদো বিগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাকে অপদস্থ ও হেয় করার। বিশ্ব সুন্দরী শিরোপা জয়ের পর তার ওজন বেড়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প তাকে ‘মিস পিগ্গি’ (নাদুস নুদুস শূকরী) বলে সম্বোধন করেন বলে দাবি করেন অ্যালিসিয়া।
বিশ্বে হিংস্রতা-হানাহানির বিস্তার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মিস কলম্বিয়া ২৩ বছর বয়সী আন্দ্রেয়া তোভার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
গতবারের ভুল নিয়ে হাসি-কৌতুক
অ্যামি পুরস্কার বিজয়ী স্টিভ হার্ভের উপস্থাপনায় এবারকার অনুষ্ঠান কোনো ভুল-বিভ্রান্তি ছাড়াই শেষ হয়। প্রসঙ্গত, গতবারের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত মুহূর্তে সেরার মুকুটজয়ীর নাম ঘোষণায় ভুল করেন উপস্থাপক হার্ভে যে কারণে এখনো তাকে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়।
সেবার মুকুটজয়ী ফিলিপাইনের পিয়া বর্তজবাখের স্থলে মিস কলম্বিয়া অ্যারিয়াদনা গুইতিয়েরেজের নাম ঘোষণা করেন তিনি। এ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়। তবে মিনিট কয়েক পরেই হার্ভে এর সংশোধন করেন এবং পিয়া ও অ্যারিয়াদনার কাছে ক্ষমা চান। অনেকেই আশ্চর্য হয়েছেন আয়োজকরা এবারও ‘দোষী’ হার্বেকে উপস্থাপক রাখায়।
অবশ্য গত আসরের ভুলের সূত্রে হার্ভেকে দোষারোপ করার বদলে বর্তমানে তার বেশ প্রশংসাই করেন সদ্য সাবেক মিস ইউনিভার্স পিয়া বর্তজবাখ।
হার্ভেকে উদ্দেশ করে থাই বিশ্ব সুন্দরী পিয়া বলেন, আমি কখনোই তোমাকে ধন্যবাদ জানাবো ভাবিনি কিন্তু তারপরও তোমাকে ধন্যবাদ দেই এই কারণে যে তুমি আমাকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিস ইউনিভার্সে পরিণত করেছো।
যদিও এবারকার দ্বিতীয় রানার আপ মিস কলম্বিয়া আন্দ্রেয়া তোভার সঞ্চালক হার্ভেকে বলেন, আমার দেশের অনেকেই তোমাকে ঘৃণা করে। আগের বছরের ভুলের সূত্রে হার্ভে এবারকার কলম্বিয়ান প্রতিযাগী আন্দ্রেয়াকে জিজ্ঞেস করেন কলম্বিয়ার মানুষ তার সম্পর্কে কী ভাবে?
তুমি কী সত্য জানতে চাও?
না, তুমি আমাকে মিথ্যাটাই বল।
আমার দেশের অনেকেই তোমাকে ঘৃণা করে।
মিস কলম্বিয়ার এমন কথায় দর্শকরা হেসে ওঠে। এপর্যায়ে তিনি হার্ভেকে বলেন, তবে আমি তোমাকে ভালবাসি।
অবশ্য এ বছর কোনো লেজে-গোবরে পরিস্থিতি ছাড়াই অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন হয়। এএফপি, রয়টার্স, নিউজ.কম.এইউ
নিউজওয়ান২৪.কম/একে