প্রাচীন ও উন্নত সভ্যতার কথা
নিউজ ডেস্ক
নিউজ ওয়ান২ ৪
প্রকাশিত : ০১:০৪ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার
ফাইল ছবি
অতীতের পাতা ঘাটলে আমরা দেখতে পাই তাদের অপূর্ব সব নিদর্শন। আজকের আধুনিক যুগের পেছনে সেসব সভ্যতার অবদান মোটেই ছোট করে দেখার নয়! আজ আমরা জানবো অতীতের তেমনই উন্নত কিছু সভ্যতার কথা।
১. প্রাচীন চীনা সভ্যতা (খ্রিষ্টপূর্ব ২১০০ থেকে ২২১ সাল)
মুদ্রণ, কাগজ তৈরি, কম্পাস ও বারুদ হচ্ছে প্রাচীন চীনের অন্যতম চারটি উদ্ভাবন। এছাড়াও ঘুড়ি থেকে টয়লেট পেপারের মত আরো অনেক আবিষ্কার রয়েছে এই সময়কার। সূর্যগ্রহণ ও ধূমকেতু প্রথম পর্যবেক্ষণ করা হয় প্রাচীন চীনেই। তারাই প্রথম ছায়া-ঘড়ি উদ্ভাবনের মাধ্যমে সময় নির্ণয়ের উপায় বের করে যা বর্তমান সময়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজ থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ বছর পূর্বে সূর্য-ঘড়ি আবিষ্কার করে প্রাচীন চীনা সভ্যতা। ক্রসবো বা ধনুকের কার্যপ্রণালী এই সময়েরই নিদর্শন যা পরবর্তীতে ইউরোপিয়ান যুদ্ধসমূহের অন্যতম ব্যবহৃত অস্ত্র হিসেবে পরিচিত হয়।
২. প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা (খ্রিষ্টপূর্ব ৩১৫০ থেকে ৩১ সাল)
প্রাচীন মিশরীয়রা গণিত এবং স্থাপত্যবিদ্যায় অগ্রগণ্য ছিল, এটা সবারই জানা। তবে সেই সাথে তারা চিকিৎসাবিদ্যাতেও নিজেদের পারদর্শীতার স্বাক্ষর রেখে গেছে। নীলনদের তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতার অন্যতম অন্তরায় ছিল পরজীবী ঘটিত রোগব্যাধি, ম্যালেরিয়া এবং সঙ্গে কুমির ও জলহস্তীর আক্রমণের শঙ্কা। তারা যে শারীরবিদ্যায় অগাধ জ্ঞান রাখতো তার প্রচুর প্রমাণ পাওয়া যায়। শরীরের ক্ষত সাড়াতে তারা কাঁচা মাংস দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধতো। ব্যাথানাশক হিসেবে ব্যবহার করা হতো ওপিয়াম। সংক্রমণ রোধে মধুতে ডুবানো লিনেন কাপড়ের বহুল প্রচলন ছিল।
প্রাচীন মিশরীয় শল্যচিকিৎসকরা ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগাতে জানতেন। সেই সঙ্গে শরীরের কাটা ক্ষত সেলাই করার প্রক্রিয়া তাদের জানা ছিল। তৎকালীন সময়ে আবিষ্কৃত হয় যে পেঁয়াজ ও রসুন সুস্বাস্থ্য রক্ষায় উপযোগী যা আজো মেনে চলা হয়। প্রাচীন মিশরের সমাজব্যবস্থা ছিল সমসাময়িক অন্যান্য সকল সভ্যতা থেকে উন্নত। তারা বিবেচনা করতো যে, নারীদের অধিকার পুরুষদের সমপর্যায়ের। আইনের চোখে নারী-পুরুষ উভয়ই সমান ছিল। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের থেকে অধিক সুবিধা লাভ করতো। উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে দু’জন নারী ফেরাউন- ক্লিওপেট্রা ও হাটসেপ্সাটের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
৩. ইনকা সভ্যতা (১২০০ থেকে ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দ)
পেরুর কাসকো অঞ্চলে ইনকা সভ্যতার রাজধানী ছিল। দক্ষিণ কলম্বিয়া থেকে চিলি পর্যন্ত বিশাল এলাকা দখল করে তারা ইনকা সাম্রাজ্য স্থাপণ করে। তাদের নির্মিত রাস্তা প্রাক-কলম্বিয়ান দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে চমৎকার নিদর্শন, যা আজো টিকে আছে। বর্তমান সময়ের বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন এমন নির্মাণশৈলী সেই প্রাচীন যুগের মানুষেরও আয়ত্ত্বে কিভাবে এসেছিল, তা এক বিষ্ময়! এই প্রাচীন রাস্তার একটি অংশ হচ্ছে ইনকা ট্রেইল। যা ইনকা সভ্যতার একমাত্র নিদর্শন ‘মাচু-পিচু’তে গিয়ে শেষ হয়েছে।
৪. প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা (খ্রিষ্টপূর্ব ৮৮ থেকে ১৪৬ সাল)
স্থাপত্যবিদ্যা, গণিত ও জ্যোতিষবিদ্যায় ঈর্ষণীয় পারদর্শীতা ছিল গ্রিকদের। সাহিত্যের জগতেও তাদের অবদান মনে রাখার মতো। এসাইলাস প্রথম কথোপকথনের মাধ্যমে নাটকের প্রচলন করেন। ইউপেডেস তার রচিত নাটিকার মাধ্যমে প্রচলিত সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতেন, যা আজ পর্যন্ত চলমান।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া