‘টিয়াপাখি হইতে সাবধান! নয়তো গোমর ফাঁস করিয়া দিবে’
ইত্যাদি ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৬ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:১৩ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০১৬ সোমবার

প্রতীকি চিত্র
স্ত্রী যখন ঘরে থাকেন না তখন চাকরানির (নারী গৃহকর্মীর) সঙ্গে ধুমসে রোমান্স চলে। তবে স্ত্রীর সামনে স্বাভাবিক ধোয়া তুলসিপাতা। এমন বা এর উল্টো ঘটনা অনেক পরিবারের জন্য চরম অস্বস্তিকর হলেও একেবারে বিরল বা অস্বাভাবিক ব্যাপার না।
দুনিয়ার অন্যান্য স্থানের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও এটা একটা জটিল সমস্যা এখন। এখানে যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে তার স্থান কুয়েত।
আকারে অতি ক্ষুদ্র তবে তেলসম্পদে ভরপুর এই দেশের এক ব্যক্তি স্ত্রীর অগোচরে গৃহকর্মীর সঙ্গে রোমান্স ভালই চালিয়ে আসছিলেন। স্মার্ট স্ত্রী বিষয়টি বুঝতে পারছিলেন, তবে যাকে বলে ‘হাতে নাতে ধরা’- তা পারছিলেন না।
কিন্তু তিনি যা পারেননি, সম্প্রতি তা করে দেখিয়েছে ঘরের পোষা তোতাটি।
একদিন হঠাৎ পাখিটি এমন সব কথা আউড়াতে থাকে যা তাকে শেখানো হয়নি। শব্দগুলি নরনারীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের। আসল ঘটনা ধরতে সময় লাগেনি মালকিনের।
স্বামীর প্রতারণার ‘প্রমাণ’ পেয়ে তিনি ছুট লাগান পুলিশের কাছে। থানায় অভিযোগও দায়ের করেন ‘বেবাফা’ পতির বিরুদ্ধে।
তোতা, ময়না জাতীয় পাখিরা মানুষের কথা নকল করতে পারে- এটা সবাই জানেন। তবে সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এখানে বিনা প্রশিক্ষণেই টিয়াটি ওই শব্দগুলি রপ্ত করেছে- তবে এজন্য এসব শব্দ তার আশপাশে বারবার উচ্চারিত হতে হয়েছে।
বিষয়টি অনুধাবন করা যাচ্ছে যে, পাখিটির আশপাশে ওইসব শব্দ বা কথাগুলি এতবার উচ্চারিত হয়েছে যে তা তার মুখস্ত হয়ে গেছে।
অবশ্য টিয়াটি সজ্ঞানে তার মনিবের ‘থলের বিড়াল’ বের করে দেওয়ার জন্য এমন করলো নাকি এটা ‘বোবা প্রাণীটি’র নিতান্তই স্বভাবজাত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, এটা নিশ্চিত নয়।
তবে এই ঘটনায় পাখীটির মনিবের স্ত্রীর বুক ফাটলেও তিনি সন্তুষ্ট। যাক বাবা, এতদিনে বাছাধনকে ধরা গেছে হাতে-নাতে।
কিন্তু পুলিশ বা আইন-আদালত তো অত সহজ নিয়মে চলে না। পুলিশ বলছে, তোতার ওই বয়ান সত্ত্বেও আদালতে স্বামীটির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টকর হবে।
কারণ, টিয়া মহাশয় ওই কথাগুলো তার স্বামীর মুখ থেকে শুনে মুখস্ত করেছে নাকি পাশে চলতে থাকা টিভি বা কোনো অডিও-ভিডিও ক্লিপ থেকে শুনেছে- তা নিশ্চিত নয়। তাই, এটাকে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করবে না আদালত।
তবে ওই গৃহবধূ বারবার বলছেন, তিনি বিষয়টি সন্দেহ করছিলেন আগে থেকেই। এখন তোতা পাখির বুলিতে তা স্পষ্ট হয়েছে।
এ ধরনের বিষয় আদালতে চূড়ান্ত বিচারে প্রমাণিত হতে না পারলেও- দাম্পত্য জীবনে প্রায় ক্ষেত্রেই ‘প্রশ্নাতীত প্রমাণ’ হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়। রয়ে যায় ‘স্থায়ী কলঙ্কের’ খচখচে কাঁটা হিসেবে।
তোতা-ময়নার কারণে মনিবের ‘মুখ কালা’ হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০০৬ সালে এমন এক ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল। সুজি নামে এক নারীর পোষা তোতা তার বয়ফ্রেন্ড ক্রিসের কাছে ফাঁস করে দেয় সহকর্মী গ্যারির সঙ্গে তার প্রণয়ের গোপনীয়তা। এর আগে পর্যন্ত ক্রিস তাকে বিশ্বস্ত প্রেমিকা হিসেবেই জানতো। এমন পরিস্থিতিতে বলা যেতেই পারে, ‘টিয়াপাখি হইতে সাবধান! নয়তো গোমর ফাঁস করিয়া দিবে।’ ডেইলিমেইল, মেট্রো, এনবিটি
নিউজওয়ান২৪.কম/এসকে