বিএনপির কাছে কত আসন চায় জামায়াত?
যাহিন ইবনাত
নিউজ ওয়ান২ ৪
প্রকাশিত : ০৯:২৬ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৮ রোববার
ফাইল ছবি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে মনোনয়নের প্রত্যাশায় ৫০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা বিএনপির হাতে তুলে দিয়েছে জামায়াত। শনিবার জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানের কাছে এই তালিকা পৌঁছে দেয়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সেখান থেকে আরো জানা গেছে, সারাদেশে ৬০টি আসন থেকে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন জামায়াতের প্রার্থীরা। এই ৬০ জনের তালিকা থেকে যাচাই-বাছাই করে ৫০ জনের নামের তালিকা দলের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দেয়া হয়েছে। সেখানে বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ প্রার্থী তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে এর আগে, গণমাধ্যমের কাছে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬০টি আসন থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন প্রার্থীরা। এই তালিকা ধরেই একটি বাছাই তালিকা বিএনপির কাছে দেয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানকে ফোন করা হলেও তিনি রেসপন্স করেননি।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একটি সূত্র জানায়, ৬০টি আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন তাদের প্রার্থীরা। এই তালিকা থেকে ৫০টি আসনে নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তালিকায় নাম প্রস্তাব ছাড়াও সংশ্লিষ্ট আসনে ভোটের হিসাব, জামায়াতের বিগত দিনে প্রাপ্ত ভোট, সম্ভাবনা, সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিএনপির অবস্থানসহ বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে সেখানে।
দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একজন সদস্য জানান, বিএনপির সিদ্ধান্ত নিতে যেন সুবিধা ও সহজ হয়, সেজন্যই বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে।
জামায়াত দলের এক প্রভাবশালী নেতার ভাষ্য, আমাদের প্রাথমিক প্রস্তাব ৫০টি। এরপর যাচাই-বাছাই করে জোটগত মনোনয়ন নিশ্চিত করা হবে। কোন-কোন আসনে বিএনপি জোটগত মনোনয়ন দিতে চায়, সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত তালিকায় বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
শনিবার এই তালিকা দিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের একনেতা। তার পরামর্শেই মূলত দলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যের কাছে তালিকা হস্তান্তর করেন।
তবে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতার সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির মূল নির্বাচনি জোট থাকায় তাদের এ বছর অনেক ছাড়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বিএনপির তরফে অনানুষ্ঠানিকভাবে ১৮-২০টি আসন পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া গেলেও দরকষাকষি করবে জামায়াত। এক্ষেত্রে দলটির পছন্দ অন্তত ৩০-৩৫টি আসন।
তাছাড়া স্বতন্ত্র মার্কায় নির্বাচন করতে জামায়াতের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র উত্তোলন করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে ধানের শীষে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে।
তবে প্রকাশ্যেই জামায়াতের নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রতীক নিয়েই একাদশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের প্রার্থীরা। কেন্দ্রীয় একনেতা আরো বলেন, খুব শিগগির আমাদের দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে ফের বৈঠক হবে। ওই বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হতে পারে ধানের শীষ প্রতীক নেয়া হবে কিনা। এক্ষেত্রে আরপিও ধারাগুলো আবারো পর্যালোচনা করবে জামায়াত।
প্রসঙ্গত এর আগে, ২০০১ সালে চার দলীয় জোটের ব্যানারে ৩১টি, এরমধ্যে জোটবদ্ধভাবে ৩০টি এবং এককভাবে একটিতে নির্বাচন করে জামায়াত।
এদিকে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩৯টি আসনে জোটগত সমর্থন পেলেও চারটি থেকে দলীয়ভাবে নির্বাচন করেন জামায়াতের প্রার্থীরা। দলটির তৃণমূলের অভিমতের ভিত্তিতে এবার তাদের দাবি ৬২টি। তবে চূড়ান্তভাবে ত্রিশটি আসনে ন্যূনতম ছাড় চায় জামায়াত।
নিউজওয়ান২৪/জেডআই