NewsOne24

তিনি শুধু নায়কই নন, জেলেও!

যাহিন ইবনাত

নিউজ ওয়ান২ ৪

প্রকাশিত : ০৮:৫৬ এএম, ৯ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

মাশরাফি বিন মুর্তজা

মাশরাফি বিন মুর্তজা

জাতীয় দলের মহানায়ক ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রায়ই তার কণ্ঠে একটি আক্ষেপের কথা বারবার শোনা যায়, ‘শহরে দম বন্ধ হয়ে আসে।’ এই কারণে সুযোগ পেলেই তিনি ছোটে যান নিজ গ্রাম নড়াইলে। যাওয়ার পথেই তিনি উত্তাল তরঙ্গের পদ্মায় স্পিড বোট ব্যবহার করেন। রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চারের সাধ নিয়ে গ্রামের যাওয়াকে প্রাধান্য দেন মাশরাফি। 

তাছাড়া তিনি নিজ গ্রামে গিয়ে মাঠে খেলতে যান না এমন দৃশ্যও খুব বিরল। ভুলে যান শহুরে পোশাকের কথা। জার্সি, ট্রাউজার ছেড়ে লুঙ্গিতেই যেন আনন্দ পান বেশি। তবে এবার সে আনন্দ ভোগ করতে তিনি হলেন একজন কৃষকও।

ক্রিকেট মাঠের ২২ গজের মধ্যে মাশরাফি যেমন দেশের জন্য স্বপ্নের ফসল ফলান। তেমনই গ্রামের পুকুরে মাছ, নিজের ক্ষেতে নানা রকম সবজি চাষ সবই করেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন বাবা গোলাম মুর্তজা। মূলত বাবার কাছ থেকেই তিনি এই ধরণের উৎসাহ পেয়ে থাকেন। 

আর তাতেই শহরে বসে এখনো মাশরাফিকে কিনে খেতে হয় না মাছ কিংবা সবজি। 

২০০১ সালের ৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলে এই নায়কের অভিষেক। এরপর ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন তিনি নড়াইল ‘এক্সপ্রেস’। ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কত দেশ, কত শহর, অর্থ, বিত্ত-বৈভব পেয়েছেন মাশরাফি। পেয়েছেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বের ভালোবাসা। কিন্তু তিনি তাতেও ভোলেননি মাটির টান, সবুজের সমারোহে গ্রাম বংলার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। যে কারণে সবার জন্য মাশরাফি সত্যিকারের ‘মানুষ’।

মূলত খুলনা বিভাগের নড়াইল শহরের অদূরে জুড়ালিয়া গ্রামে মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজা ১৬ বছর আগে কিনেছিলেন একটি পুকুর। ওইসময় থেকে সেই পুকুরেই তিনি মাছ চাষ শুরু করেন। তা দেখেই উৎসাহ পেয়ে মাশরাফি নিজেও কিনে ফেলেন আরো ৬টি পুকুর। কারণ ছোট বেলা থেকে মাশরাফির মাছ চাষের স্বপ্ন। তাই ৭টি পুকুরের বিশাল জায়গাজুড়ে হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির নানা রকমের মাছ চাষ। 

কই, শিং, মাগুর, পাবদা, পুঁটি, টেংরা সব কিছুর চাষ হয় এই পুকুরগুলোতে। আবার বড় মাছ রুই-কাতলার জন্য আলাদা আলাদা পুকুরও আছে। এখানেই শেষ নয়, পাড়ের খালি জমিও বাদ রাখেননি মাশরাফি। সেখানে শুরু করেছেন সবজির চাষ। লাউ থেকে শুরু, পটোল, ডাটা, পেপে সবই আছে। আছে নানা রকম শাকও। যে কারণে শহরে থাকলেও সবজি ও মাছ কিনে খেতে হয় না ক্রিকেটের এই মহানায়ককে। প্রতি সপ্তাহে নিজ গ্রাম থেকে এসব মাছ ও সবজি চলে আসে তার ঢাকার বাসায়। পরে শহুরে বসেই তিনি স্বাদ নেন গ্রামের ফলা ফসলের।

এদিকে, কিছুদিন আগেই মাশরাফি চালু করেছেন নড়াইল ফাউন্ডেশন। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো সেখানে ক্রিকেট নয় প্রাধান্য পেয়েছে ফুটবল। সেখানেই তিনি গড়ে তুলছেন ফুটবলের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। করা হচ্ছে জিম, নেয়া হচ্ছে নামি-দামি কোচ। তাছাড়া প্রতি ঈদেই তিনি ছুটে যান গ্রামে। সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

মূলত নড়াইলে গেলেই নাকি মাশরাফি সুস্থ হয়ে উঠেন। খোলা বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে খুঁজে পান অপার্থিব শান্তি!

নিউজওয়ান২৪/জেডআই