শেষপর্যন্ত হলি আর্টিজান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হাসনাত করিম
স্টাফ রিপের্টার
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ০৪:০৬ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০১৬ শনিবার | আপডেট: ০১:২৮ পিএম, ২২ আগস্ট ২০১৬ সোমবার
ঢাকা: তাকে গুলশান হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হবে- এটা অনেকটাই নিশ্চিত একটি বিষয় ছিল বলা যায়। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও হত্যাকাণ্ড মামলায় শেষতক তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজাউল করিমকে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
গত ১জুলাই রাতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি লোকজনকে জিম্মিকরণ ও পরবর্তীতে তাদের মধ্য থেকে ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। একই ঘটনার রাতে তাদের নিক্ষিপ্ত গ্রেনেড-বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
পরদিন সেনা কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয় জন নিহত হয়। এসময় অন্যদের সঙ্গে সপরিবারে উদ্ধার করা হয় জঙ্গিদের হাতে `জিম্মি` নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে।
তবে হলি আর্টিজানে জঙ্গি সংকট চলাকালে বাইরে থেকে করা ভিডিওতে হাসনাত করিমকে জঙ্গিদের সঙ্গে ধূমপান এবং কথাবার্তা বলতে দেখা গেছে। এর সূত্রে তাকে নিয়ে সৃষ্ট সন্দেহ পুলিশের আইজি শহিদুল হকের কথায়ও প্রকাশ পায়। শেষপর্যন্ত ঘটনার একমাস পর তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল পুলিশ। সে সূত্রে হাসনাতকে হেফাজতে নিয়ে আট দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এরপর ঘটনার প্রায় দেড়মাস পর ক্যাফেতে জঙ্গি হামলা ও হত্যাকাণ্ডের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর কথা শনিবার জানান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিইউ) প্রধান মনিরুল ইসলাম।
সিটিইউ প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, হাসনাত করিমকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।
এই মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ। মনিরুল কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, হলি আর্টিজানের মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
বাংলাদেশি নাগরিক হাসনাত করিম যুক্তরাজ্যেরও নাগরিক। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত এই নাগরিককে গত ৪ অগাস্ট ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর ডিএমপির উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেছিলেন, হামলায় জড়িত থাকার ‘সন্দেহাতীত প্রমাণ’ পাওয়া গেলে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তাকে।
প্রসঙ্গত, গুলশান হামলায় হাসনাতের এক সময়ের কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিবরাজ ইসলামের জড়িত থাকার প্রমাণ এবং হামলায় সময়ে ধারণ করা ভিডিওতে তার গতিবিধি অন্য সবার মতো গোয়েন্দাদেরও সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়।
এছাড়া হাসনাতের সঙ্গে উদ্ধার কানাডীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খানকেও ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
তবে হাসনাত করিমের মতো তাকে গুলশান হত্যাকাণ্ড মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে সিটিইউ প্রধান মনিরুল জানান, তাহমিদকে ৫৪ ধারার মামলায়ই আরও সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়র আদেন করা হবে।
কিছুদিন আগে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছিলেন, গুলশানের ঘটনায় উদ্ধার পাওয়া হাসনাত করিম ‘সন্দেহমুক্ত নন’।
এ প্রসঙ্গে হাসনাতের পরিবারের দাবি, মেয়ের জন্মদিন উদযাপনে ওই দিন সপরিবারে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন তিনি।
নিউজওয়ান২৪.কম/এসএল