‘জামায়াতের অর্থভাণ্ডার’ মীর কাসেম সময় পেলেন আরও একমাস
স্টাফ রিপোর্টার
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:২৭ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৬ সোমবার | আপডেট: ১২:২২ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৬ মঙ্গলবার

প্রিজন ভ্যানে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম -ফাইল ফটো
ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড হয়। মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনায় এই যুদ্ধাপরাধী যে আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে, তার শুনানি এক মাস পিছিয়েছে।
আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনের কারণে ওই রিভিউ আবেদন পেছানো হয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনটি এলেও মীর কাসেমের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতের কাছে প্রস্তুতির জন্য দুই মাস সময় চান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ আবেদন মঞ্জুর করে ২৪ আগস্ট শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় হয় গত ৬ জুন। তবে রায় প্রকাশের পর তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ১৯ জুন আবেদন করেন জামায়াতের শুরা সদস্য মীর কাসেম। অপরদিকে, রিভিউ আবেদন শুনানির দিন ধার্যের জন্য আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এরই ধারাবাহিকতায় ২১ জুন চেম্বার বিচারপতি তা ২৫ জুলাইর নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে সূত্রে মামলাটি আজকের (সোমবারের) কার্যতালিকায় আসে।
শুনানি পেছানোর পর মীর কাসেমের প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেন, “প্রস্তুতির জন্য আমরা দুই মাস সময় চেয়েছিলাম। আদালত এক মাস দিয়েছে। ২৪ অগাস্ট শুনানির তারিখ দিয়েছে।”
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া জামায়াতের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত বর্তমানে ৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ের শেষ সুযোগ এটাই হচ্ছে শেষ সুযোগ। এই রিভিউ আবেদন নাকচ হলে তিনি শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। এরপর রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করলে বা যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম প্রাণভিক্ষা না চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রাণদণ্ড কার্যকর করা হবে।
একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধা জসিম হত্যার দায়ে গত ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। কাসেম এর বিরুদ্ধে আপিল করলে গত ৮ মার্চ আপিলের রায়েও একই সাজা বহাল থাকে।
আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ১৯ জুন তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন তিনি। দণ্ড মওকুফ চেয়ে ৮৬ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে এই যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে। রিভিউ প্রসঙ্গে তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেছিলেন, এতে ‘ন্যায়বিচার’ পাবেন বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।
তবে ফৌজদারি মামলায় পুনর্বিবেচনায় রায় বদলের সম্ভাবনা ‘খুবই সীমিত’- অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে একথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সব যুদ্ধাপরাধীর রিভিউ খারিজ হয়
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ, মো. কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন এর আগে খারিজ হয়। রিভিউ খারিজ হওয়ার পর তাদের সবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ গত মে মাসে নিজামীর রিভিউ খারিজের ছয় দিনের মাথায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয় তাকে।
প্রসঙ্গত, মুক্তোযোদ্ধা জসিম হত্যাকাণ্ডের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন বিচারকের ঐক্যমতের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। পরে আপিলেও তা বহাল থাকে। এর বাইরে যুদ্ধাপরাধের আরও ছয়টি অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মোট ৫৮ বছরের কারাদণ্ডের রায়ও বহাল রাখে আপিল বিভাগ।
নিউজওয়ান২৪.কম/এসএল