ভারতে সামরিক ট্রাইব্যুনালে খারিজ ‘তিন তালাক’
নারী ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪.কম
প্রকাশিত : ০৯:৫৭ এএম, ২৭ মে ২০১৬ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৪৩ পিএম, ২ জুন ২০১৬ বৃহস্পতিবার

প্রতীকি চিত্র
‘এক তালাক, দুই তালাক, তরে দিলাম তিন তালাক!’ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বিশেষ করে গ্রামীণ জীবনে মুসলমান সমাজে আজও এমনধারার কথা উচ্চারিত হতে শোনা যায়।
যেখানে শুধু পুরুষ হওয়ার সূত্রে একজন ‘দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বামী’ তার অসহায় স্ত্রীকে (শুধু নারী বা ‘দুর্বল প্রজাতি’ হওয়ায়) ওই মৌখিক বয়ানে দিয়ে দিতে পারেন ডিভোর্স অর্থাৎ তালাক।
একটি শব্দ পরপর তিনবার উচ্চারণ করলেই সব শেষ! অর্ধশিক্ষিত- অশিক্ষিত গ্রামীণ ধর্মীয় পণ্ডিতরা এমন মতকে সমর্থন দিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। যদিও ধর্মের মূল বিধানে শরীয়তি ধারায় তালাক প্রদানের ন্যায়ভিত্তিক, বিজ্ঞানসম্মত উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে এসব অঞ্চলের আদালতও একই ধারায় মত প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু অন্ধকার কাটেনি।
সম্প্রতি একটি সামরিক আদালতও রায় দিয়েছে মৌখিক তিন তালাকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার নবভারত টাইমস জানায়, ভারতে আর্মড ফোর্সেস ট্রাইব্যুনালের লখনৌ বেঞ্চ এক সৈনিকের মৌখিক ‘তিন তালাককে’ অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। ফারুক খান নামের ওই সৈনিক তার স্ত্রীকে মৌখিকভাবে ‘তিন তালাক’বলে তার সঙ্গে ডিভোর্স (বিবাহ বিচ্ছেদ) ঘটাতে চেয়েছিল।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে তা সামরিক আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
ফারুকের ‘তিন তালাককে’ খারিজ করে আদালত তার ব্যাখ্যায় বলে, কোনো ব্যক্তিই পার্সনাল ল (পারিবারিক আইন)-এর ছায়ায় দেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে যেতে পারে না যে সংবিধান সব ধর্মের নারীদেরই রক্ষার কথা বলেছে।
আদালত আরও বলে, কোনো পার্সনাল ল বা সংবিধানই কোনো ব্যক্তিকে এ অধিকার দেয় না যে তিনি মৌখিক নোটিশ বা মনোমলিন্যের সূত্রে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেবেন।
ফারুক খানের আরও আর্জি ছিল, মৌখিক তালাক বলা এবং আদালতে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র পেশ করার পর থেকে তিনি স্ত্রী আসরি জাহানকে আর খোরপোশ দিতে বাধ্য নন। কিন্তু আদালত তার এই আর্জিরও উল্টো রায় দিয়েছে।
২০০৯ সালে ফারুক ও আসরি বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেই সম্পর্কে ফাটল তৈরি হয়। একপর্যায়ে ফারুক স্ত্রীকে মুখে ‘তিন- তালাক’ বলে একক সিদ্ধান্তে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করেন সংশ্লিষ্ট দফতরে।
রায়ে লখেনৌয়ের সামরিক আদালত আরও বলে, বিবাহ একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রস্তাব প্রদান ও তা গ্রহণের ওপর নির্ভর করে আবর্তিত হয়। যখন পর্যন্ত দুজনেই একমত না হবেন- তখন পর্যন্ত কোনো বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে না। বিবাহ হচ্ছে একধরনের চুক্তি যা একতরফা কোনো এক পক্ষ বাতিল করতে পারে না।
নিউজওয়ান২৪.কম/একে