NewsOne24

‘সূরা ইখলাস’

নিউজ ডেস্ক

নিউজ ওয়ান২ ৪

প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ৫ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার

সূরা ইখলাস

সূরা ইখলাস

 

পবিত্র কোরআনুল কারীমের এক তৃতীয়াংশের সমান সূরা ইখলাস। আজ নিউজওয়ান২৪.কম এর পাঠকদের জন্য সূরা ইখলাস, তর্জমা, গুরুত্ব ও পাঠের ফজিলত তুলে ধরা হলো-

সূরা ইখলাস পবিত্র কোরআন শরীফের ১১২ নং সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৪ টি, রুকু আছে ১টি। সূরা ইখলাস মক্কায় অবতীর্ণ হয়।

সূরা ইখলাসের নামের অর্থ, বিশুদ্ধ। এই সূরা পবিত্র কোরআন শরীফের ৩০ নং পারায় আছে। সূরা ইখলাসের পূর্ববর্তী সূরা হচ্ছে সূরা লাহাব, আর পরবর্তী সূরা হচ্ছে সূরা আল-ফালাক।

সূরা ইখালসকে পবিত্র কোরাআন শরীফের এক তৃতীয়াংশ বলা হয়। হজরত আবু হোরায়ারা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে কোরআনের এক তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল তারা একত্রিত হয়ে গেল এবং তিনি সূরা ইখলাস পাঠ করে শুনালেন। তিনি আরো বললেন; এই সূরাটি কোরানের এক তৃতীয়াংশের সমান। (মুসলিম, তিরমিযী)

মহান আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ, তাওহীদ, অস্তিত্ব, সত্তা ও মহিমান্বিত পরিচয়ের কথা বিশেষভাবে বর্ণিত হওয়ায় এই সূরার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।

মুশরিকরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের কাছে আল্লাহ তায়ালার বংশ পরিচয় জানতে চায়। যার উত্তরে এই মহিমান্বিত সূরা নাজিল হয়।

কোনো কোনো রেওয়ায়েতে আছে যে, মদিনার ইহুদিরা প্রশ্ন করেছিলো, আল্লাহ তায়ালা কিসের তৈরি, স্বর্ণ-রৌপ্য অথবা অন্য কিছুর? এর জওয়াবে এই সূরা নাজিল হয়।

ওকবা ইবনে আমের (রা.)-এর থেকে বর্ণিত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সূরা বলছি, যা তওরাত, ইঞ্জীল, যবুর ও কোরআনসহ সব কিতাবেই রয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততক্ষণ নিদ্রা যেয়োনা, যতক্ষণ সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর।

ওকবা (রা.) বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনো এই আমল ছাড়িনি। (ইবনে কাসরী)

যারা ভাবে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তান আছে এবং যারা তাঁর সঙ্গে অন্যকে শরীক স্থাপন করে তারা যে ভ্রান্ত তা এ সূরা দ্বারা বোঝা যায়। মহান আল্লাহ তায়ালার পরিচয় এই সূরার মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহ তায়ালার তাওহীদ বা একত্ববাদে বিশ্বাস করতে হবে। সূরা ইখলাস পাঠে বহু ফজিলত রয়েছে।

একবার মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের কাছে অন্য এক এলাকার একজন ইমাম সাহেবের নামে বিচার এসেছিলো। বিচার ছিল এই যে- সেই সাহাবী প্রতি ওয়াক্ত নামাজে শুধু সূরা ইখলাস পড়ত। এই

প্রসংগে সেই সাহাবীর কাছে রাসূলে কারীম (সা.) জানতে চাইলে সেই ইমাম সাহেব উত্তরে বললেন,

হে আল্লাহর রাসূল (সা.) সূরা ইখলাসে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব এমনভাবে বর্নিত আছে যে এই সূরা আমার অনেক ভালো লাগে। তাই আমি সব নামাজে এই সূরা পড়ি। এই কথা শুনে মহান আল্লাহ রাসূল (সা.) কিছু বলার আগেই মহান আল্লাহ বলে পাঠালেন যে শুধু তার সূরা ইখলাসের প্রতি এই ভালোবাসাই তার জন্য জান্নাত নিশ্চত করে দিয়েছে। (নিয়ামুল কোরান)
যে ব্যক্তি বেশি বেশি সূরা ইখলাস পাঠ করবে মহান আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিবেন। নিয়মিত সূরা ইখলাস পাঠে বিপদ আপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মহানবী (সা.) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়।’ (ইবনে কাসীর)। এছাড়া যে ব্যক্তি বেশী বেশী সূরা ইখলাস শরীফ পাঠ করবেন মৃত্যুর পর মহান আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর লাশ বহন করার জন্য হয়রত জিবরাঈল (আঃ) এর সাথে সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রেরন করবেন। সেই ফেরেশতাগণ তাঁর লাশ বহন করবেন এবং তাঁর জানাজায়ও শরিক হবেন। সুবহানআল্লাহ।

সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ সহ অনুবাদ দেয়া হল-

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)

পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ

( কুল্ হুওয়াল্লা-হু আহাদ্)

বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
اللَّهُ الصَّمَد

(আল্লা-হুচ্ছমাদ্)

( আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।)
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَد

( লাম্ ইয়ালিদ্ অলাম্ ইয়ূলাদ্)

তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَد

( অলাম্ ইয়া কুল্লাহূ কুফুওয়ান্ আহাদ্।)

আর তাঁর কোনো সমকক্ষও নেই।

নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ