পাকিস্তানে বিচারকের নির্দেশে দুর্লভ ভেড়া চুরি করলো পুলিশ!
অপরাধ ডেস্ক
নিউজওয়ান24.কম
প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৬ শনিবার | আপডেট: ০৫:৩৬ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৬ শনিবার
দামের তুলনায় ওজনে হাল্কা- এমন জিনিস চুরি করতে দুনিয়ার চোর-ছ্যাচোররা হামেশাই একপায়ে খাড়া থাকে। চোর-তস্করদের সমান্তরালে সবদেশেই উর্দির ভেতরে থাকা আইনরক্ষাকারী লোকজনের একটি অংশও এই তালে থাকে। কারণ, বাইরের পরিচয় যাই থাক না কেন, স্বভাবে তো তারা চোর।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের প্রদেশ পাঞ্জাবে এমনি একদল পুলিশ-চোর চুরি করে নেয় দুর্লভ কয়েকটি ভেড়ার শাবক। তবে শেষপর্যন্ত পুলিশেরই আরেকটি দল গত বৃহস্পতিবার স্বগোত্রীয়দের খপ্পর থেকে ভেড়াগুলোকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
বন বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা রানা শাহবাজ জানান, মধ্য পাঞ্জাবের ঝিলম জেলার সল্ট রেঞ্জের একটি প্রান্তরে মায়ের সঙ্গে চড়ছিল উরিয়াল প্রজাতির ভেড়ার বাচ্চাগুলো। স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ফরমায়েশে মোটা টাকার লোভে তাদের তুলে নেয় দুজন চোর। দ্য ডন ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিকে একজন বিচারক বলে উল্লেখ করেছে।
জানা গেছে, উদ্ধার করা ওই ছয়টি ভেড়ার শাবককে তাদের মায়ের সামনে থেকে চুরি করেছিল পুলিশের দু`জন সদস্য। ছয়টি শাবকের মধ্যে তিনটি নারী ও তিনটি পুরুষ।
শাহবাজ আরও জানান, উড়িয়াল প্রজাতির ভেড়া খুবই লাজুক আর স্পর্শকাতর স্বভাবের হয়। অসময়ে শাবকদের মায়ের কাছ থেকে আলাদা করার পর প্রায় ক্ষেত্রেই এদের বাঁচানো যায় না।
দৃষ্টিনন্দন বাঁকানো শিংয়ের জন্য পাঞ্জাবি উরিয়াল বিশ্বখ্যাত। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় থাকা এই ভেড়া শিকার পাকিস্তানে নিষিদ্ধ। তবে পাকিস্তানিরা শিকার করতে না পারলেও বিশেষ ব্যবস্থায় প্রতিবছর বিদেশি পর্যটকদের উড়িয়াল শিকারের খায়েশ মেটাতে ১৬টি করে পারমিট ইস্যু করা হয়। এজন্য মাথাপিছু গুণতে হয় ১৬ হাজার ৫০০ ডলার করে।
এদিকে, ভেড়াগুলোকে উদ্ধারের পর আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানির পর বিচারক পশুগুলোকে লাহোর চিড়িয়াখানায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান মুজাহিদ আকবর খান জানান, দোষী দুই পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।তবে ভেড়াচুরিতে পুলিশদের প্রলুব্ধ করা বিচারকের বিষয়ে তদন্ত হবে কি না তা জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, তুষার চিতা, সিন্ধু শুশুক (ইন্ডাস ডলফিন), শাহীন (পাহাড়ি ঈগল) সহ নানান দুর্লভ প্রাণীর আবাসস্থল পাকিস্তানে ব্যাপক জনসংখ্যাবৃদ্ধি (বর্তমানে প্রায় ২০ কোটি) ও অন্যান্য কারণে বন্যপ্রাণীর বিচরণক্ষেত্র ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।
নিউজওয়ান২৪.কম/এনআই