দুই বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন কারা
শোবিজ ডেস্ক
নিউজওয়ান২৪
প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার
ফাইল ফটো
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকসহ সব ধরনের কলাকুশলীদের নজর থাকে এই পুরস্কারের ওপর। এমনকী চলচ্চিত্রপ্রেমীরাও প্রতিবছর মুখিয়ে থাকেন এই পুরস্কারের দিকে।
সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, কার হাতে উঠছে দেশীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা?
রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৯৭৫ সাল থেকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করা হচ্ছে। গত বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় সর্বশেষ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৪১তম আসর। যেখানে ২০১৬ সালের চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। এরপর চলতি বছরেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে রাষ্ট্রীয় এই পুরস্কারের ৪২তম আসর। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার একসঙ্গে দুই বছরের পুরস্কারের ঘোষণা আসছে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জন্য পুরস্কারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর নির্ধারিত তারিখে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সরকার মোট ২৬টি ক্যাটাগরিতে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করে আসছে। সেরা চলচ্চিত্র ও অভিনেতা-অভিনেত্রীর পাশাপাশি সবসময় বাড়তি আর্কষণ থাকে আজীবন সম্মাননা নিয়ে। প্রথমদিকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার না থাকলেও ২০০৯ সালে প্রথম এই পুরস্কার চালু করা হয়। গত দুই বছরে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য কারা পাবেন আজীবন সম্মাননা এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে, এ তালিকায় বেশ উচ্চস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে কিংবদন্তি অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এ টি এম শামসুজ্জামানের নাম। এ তালিকায় আরো আছেন প্রবীর মিত্র, আলমগীর, সোহেল রানা, সুচন্দা, খোরশেদ আলম প্রমুখ।
‘দেবী’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য
কোন সিনেমা সবচেয়ে এগিয়ে? এই প্রশ্নে বেশ কয়েকটি সিনেমার নাম সামনে আসছে। ২০১৭ সালের আলোচিত ছবিগুলো হলো- ‘ডুব’, ‘হালদা’, ‘গহিন বালুচর’, ‘সত্তা’ ও ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘ভুবন মাঝি’। বিভিন্ন সূত্র বলছে, এখান থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় এগিয়ে ‘গহিন বালুচর’, ‘সত্তা’, ‘হালদা’ ও ‘ঢাকা অ্যাটাক’। অন্যদিকে ২০১৮ সালের জন্য ‘দেবী’, ‘পোড়ামন ২’, ‘জান্নাত’, ‘দহন’, ‘পুত্র’, ‘কমলা রকেট’, ‘স্বপ্নজাল’সহ আরো কিছু সিনেমা প্রতিযোগিতায় রয়েছে। তবে সংক্ষিপ্ত তালিকায় এগিয়ে আছে হুমায়ূন আহমেদের গল্পে নির্মিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রটি।
২০১৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তির সংখ্যায় এগিয়ে থাকতে পারে হাসিবুর রেজা কল্লোলের ‘সত্তা’ ও দীপংকর দীপনের ‘ঢাকা অ্যাটাক’। এই দু’টি চলচ্চিত্র থেকে সেরা নায়ক, গায়ক, গায়িকা, সংগীত পরিচালক, গীতিকারের পুরস্কার মিলতে পারে। এই দু’টি ছবিকে পুরস্কার ভাগাভাগি করতেও হতে পারে। এক্ষেত্রে চিত্রনায়ক শাকিব খান ও আরিফিন শুভ যদি একমঞ্চে আসেন; সেটাই হবে সবচেয়ে বড় চমক। দু’টি চলচ্চিত্রের মধ্যে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ও অভিনেত্রী হিসেবে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, এ বি এম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, তাহকিন রহমান, মাহিয়া মাহি ও রিনা খানের নামও রয়েছে আলোচনায়।
২০১৭ সালের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেতে পারেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। হালদা সিনেমায় হাসু চরিত্রে অভিনয় করেছে তিশা। পরিচালক খুব মুন্সিয়ানার মাধ্যমে এই হাসু চরিত্রকে নদী ও দেশের প্রতীক করে তুলেছে। তিশা বলেন, ‘সবারই আশা থাকে জাতীয় পুরস্কার জেতার। আমারও অবশ্যই আছে। কিন্তু ঘোষণা পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতে হবে।’
হালদা চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য
এদিকে ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সবগুলো ক্যাটাগরিতেই বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। ‘স্বপ্নজাল’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার উঠতে পারে ফজলুর রহমান বাবুর হাতে। তবে এই তালিকায় ‘দহন’ সিনেমার সিয়াম আহমেদ এবং ‘দেবী’ চলচ্চিত্রের চঞ্চল চৌধুরীও পিছিয়ে নেই। পার্শ্ব অভিনেতা ক্যাটাগরিতে লড়াইয়ে প্রথমে থাকবেন অনিমেষ আইচ (দেবী), ফজলুর রহমান বাবু (পোড়ামন ২), আলীরাজ (জান্নাত) ও আজিজুল হাকিম (পুত্র)। অন্যদিকে ‘দেবী’ ছবিতে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করা জয়া আহসানের হাতে উঠতে পারে ২০১৮ সালের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটি। সিনেমাটি দেখার পর দর্শকও ব্যাপক প্রশংসা করেন জয়ার অভিনয়ের। সেই সঙ্গে এই সিনেমা দিয়ে প্রযোজক হিসেবে নাম লেখানো জয়া; সেক্ষেত্রে সেরা প্রযোজকের স্বীকৃতিটিও ঘরে তুলতে পারেন তিনি।
২০১৮ সালের সেরা চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রাহক, গায়ক, গায়িকা, সংগীত পরিচালক, গীতিকার বিভাগে ‘দেবী’ ও ‘জান্নাত’ সিনেমার মধ্যে লড়াই হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবে ‘পুত্র’, ‘পোড়ামন ২’, ‘দহন’, ‘স্বপ্নজাল’, ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রগুলোও। তবে সেরা চিত্রনাট্য, সেরা চিত্রগ্রাহকসহ কিছু ক্যাটাগরিতে পিপলু খানের পরিচালনায় ‘হাসিনা: অ্যা ডটার’স টেল’ নাট্যধর্মী-প্রামাণ্যচিত্রটিও চমক দেখাতে পারে।
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে এ দুই বছরে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রগুলো নির্বাচনের জন্য দু’টি জুড়ি বোর্ডও গঠন করেছে সরকার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের একটি রেপিস্নকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তকে দেয়া হয় ১ লাখ টাকা।
নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড