ক্যাসিনো হবে, তবে কক্সবাজারে
স্টাফ রিপোর্টার
নিউজওয়ান২৪
প্রকাশিত : ১২:৩০ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার
প্রতীকি চিত্র
দেশে জুয়া খেলার ক্যাসিনো থাকবে, কিন্তু থাকবে পর্যটননগরী কক্সবাজারে। অর্থাৎ দেশের বিভিন্ন ক্লাবে জুয়ার আয়োজনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান চললেও কক্সবাজারে প্রস্তাবিত বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে ক্যাসিনোসহ আধুনিক সব আয়োজন থাকবে। একথা জানিয়েছেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক। মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস (২৭ সেপ্টেম্বর) উপলক্ষে সাংবাদিকদের সামনে এসে তিনি একথা বলেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
তবে, কক্সবাজারে ক্যাসিনে হলেও সেসব ক্যাসিনোতে বাংলাদেশি নাগরিকরা ঢুকতে পারবেন না; বাংলাদেশে ভ্রমণ বা অন্য কারণে অবস্থানরত বিদেশিরা পাসপোর্ট দেখিয়ে সেখানে ঢুকতে পারবেন। মহিবুল হক এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, ক্যাসিনো পর্যটকদের জন্য দরকার। মালয়েশিয়াতে ক্যাসিনো আছে, যেগুলোতে পাসপোর্ট দিয়ে ঢুকতে হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা তো তাদের জন্য এধরণের কোনো সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি না। আমরা যেখানে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করব, সেখানে বিদেশিদের জন্য এসব সুযোগ-সুবিধাগুলো থাকবে।’
সচিব বলেন, তবে ক্লাবগুলোতে যেসব ক্যাসিনো চলছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। ক্যাসিনো থাকবে শুধু বিদেশিদের জন্য।
এসময় এক সাংবাদিক জানতে চান, ব্যাংককের মতো বিদেশিদের জন্য এখানে নাইট ক্লাবও থাকবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে পর্যটন সচিব বলেন, অন্য মুসলিম দেশগুলোতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান আছে, বাংলাদেশে এক্সক্লুসিভ জোন হলে সে ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিতে তো অসুবিধা নাই।
সচিব এসময় স্বীকার করেন যে সত্যিকার অর্থে পর্যটন নিয়ে আমাদের কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যটনে একটা মাস্টার প্ল্যান প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এমাসের মধ্যে আমরা ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে দেব। গত বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটক দেড় থেকে দুই লাখ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় প্রায় একহাজার একর জমিতে ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক’ নামে বিশেষ এ অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। সেখানে একাধিক হোটেল, কটেজ, বিচ ভিলা, নাইট ক্লাব, কনভেনশন হল, অ্যামিউজমেন্ট পার্কের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকবে। সে লক্ষ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পর্যটন সেবাদাতাদের কাছ থেকে জমি বরাদ্দের আবেদনও চাওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার পাশাপাশি দেশের তিনটি পার্বত্য জেলায়ও পর্যটকদের জন্য কী কী সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায় তা নিয়েও গবেষণা হচ্ছে বলে জানান সচিব।
এছাড়া বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আইন এবং ট্যুর গাইডদের জন্য কোনো নীতিমালা নেই জানিয়ে সচিব বলেন, আমরা এগুলো তৈরি করছি। আশা করছি, নভেম্বরের ভেতরে গেজেট নোটিফিকেশন হয়ে যাবে।
সচিব মহিবুল সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা থাকলেও সেগুলোকে আকর্ষণীয় পণ্য হিসেবে তুলে ধরার ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ এসময়।
তিনি বলেন, সুন্দরবন কিন্তু পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নেই। কিন্তু আমরা কি সেখানে পর্যটকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করতে পেরেছি? পারিনি। সেই কারণেই আমরা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় স্পট বাছাই করে নিয়েছি। বিদেশি পর্যটকদের জন্য সেখানেও এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করব।
সরকারের মহাপরিকল্পনায় পর্যটনখাত
পর্যটন খাতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, এর মধ্যে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে বুয়েটের প্রতিনিধি দল জরিপ করেছে। তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেখানে পযর্টক বিশেষ করে বিদেশি পর্যটক যাতে আকৃষ্ট হয় এবং বিদেশি বড় বড় ক্রুজ শিপগুলো ইকো ট্যুরিজম করতে পারে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা খুব দ্রুত নেব। পুরো দেশকে পর্যটন আকর্ষণে পরিণত করতে মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পথে রয়েছে বলে তিনি জানান।
নিউজওয়ান২৪.কম/এনআই