ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

সুন্দরবন রক্ষায় ইউনেস্কো দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ: আনু মুহাম্মদ

সুতরাং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০৪, ৭ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ২৩:২২, ১০ জুলাই ২০১৭

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বাংলাদেশের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। এ ঘটনায় ফেসবুকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন,  বাংলাদেশ ও বিশ্বের একটি বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে ইউনেস্কো তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়বে মনে করে সেখান থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে সংঘটিত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আনু মুহাম্মদ তার স্ট্যাটাসে বলেন, সুন্দরবন ধ্বংসে নিজের উন্মাদনা বাস্তবায়ন করতে, সরকারের পক্ষ থেকে দেশের মানুষের টাকা খরচ করে, ইউনেস্কোতে বহু লবিং হয়েছে। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এবারে তারা সফল। বলেছে ইউনেস্কো রামপাল প্রকল্প সম্পর্কে আপত্তি প্রত্যাহার করেছে। এর আগে ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক অনুসন্ধান এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ থেকেই তাঁদের (ইউনেস্কো) সিদ্ধান্ত ছিলো এই প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে নেবার কোনো বিকল্প নেই। তাঁদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা ছিলো কীভাবে এই প্রকল্প সুন্দরবন বিনাশ করবে। একইরকম ব্যাখ্যা, হাতেগোণা কতিপয় ভাড়াখাটা ব্যক্তি ছাড়া, দেশ বিদেশের সকল বিশেষজ্ঞই দিয়েছেন। আজ যদি ইউনেস্কো তার এই অবস্থান থেকে সরে আসে তাহলে তার অর্থ হবে একটাই- ইউনেস্কোর বৈজ্ঞানিক অবস্থান গোষ্ঠী স্বার্থের লবিংয়ের কাছে কোনো না কোনো কারণে আত্মসমর্পণ করেছে। বাংলাদেশ ও বিশ্বের একটি বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে ইউনেস্কো তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, এটা ঠিক যে, সুন্দরবন বিনাশ হলে এইদেশ ও এইদেশের মানুষের সর্বনাশ, ইউনেস্কোর কর্মকর্তাদের তাতে কী আসে যায়? তাই এই প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তারা সন্দেহজনক কারণে আপত্তি প্রত্যাহার করতে পারে, বাংলাদেশের মানুষ পারে না।

তিনি আরও বলেন, নদী নালা পাহাড় বিনাশেও পুরো তৃপ্তি হয় না, দেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ প্রধান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুন্দরবন না খাওয়া পর্যন্ত কোনো শান্তি নেই সরকারের। ভূতের পা থাকে উল্টো দিকে। সেজন্য সে যতো জোরে হাঁটে ততোই পেছন দিকে যায়।তারপরও তার খুশিতে আটখানা ভাব দেখা যায়। কিন্তু মানুষকে তো সামনের দিকেই হাঁটতে হবে। মানুষের বাঁচার পথ মানুষের মধ্যেই।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে আগামী ১১ জুলাই  দেশব্যাপী সমাবেশ আহ্বান করেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বাংলাদেশের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করেছে। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ‘সুন্দরবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে’ বলে যে অবস্থান সংস্থাটির ছিল তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে।  বিবৃতিতে বলা হয়, পোল্যান্ডের ক্রাকোতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড: তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রতিনিধিদল ওই বৈঠকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।

নিউজওয়ান২৪.কম

অর্থ-কড়ি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত