ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

‘গুলশান সংকটের’ আরেক বলি হলেন ডিবির এসি রবিউল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৪৭, ২ জুলাই ২০১৬   আপডেট: ১৩:০৪, ৪ জুলাই ২০১৬

ঢাকা: বাঁচতে পারলেন না গুলশান জোনের এডিসি রবিউল ইসলামও। শনিবার রাত একটার দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি।

একই ঘটনায় আহত হয়েছেন এডিসি আহাদ ও এসি রেজাউল। তারাও চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাতে গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারি নামক স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের হামলা ও কয়েকজন বিদেশিকে জিম্মি করার ঘটনায় জঙ্গি-পুলিশ গোলাগুলিতে তার বুকে গুলি লেগেছিল বলে জানা গেছে। তবে একটি সূত্র দাবি করে, ওসি সালাউদিন ও এসি রবিউল দুজনের শরীরেই শক্তিশালী বোমার স্লিন্টার আঘাত হেনেছিল। রাত সাড়ে দশটার দিকে সন্ত্রাসীরা ওই বোমাটি (কারও কারও মতে গ্রেনেড) ছুড়ে মারে রেস্টুরেন্টের বাইরে। সেসময় কমপক্ষে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এসি রবিউলের আগে রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রমনা জোনের এসি শিবলি নোমান এ খবর নিশ্চিত করেছেন নিউজওয়ান২৪.কমকে। তিনিও ওই রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আহত হয়েছিলেন।

শুক্রবার রাত নয়টার দিকে হামলা ও জিম্মিকরণ ঘটনার সূত্রপাত হয় গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডে। কী কারণে কারা এই হামলার ঘটনা ঘটালো তা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।

পুলিশের আইজিপি শহিদুল হক ইউনাইটেড হাসপাতালে হতাহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়েছেন। ঘটনাস্থল গুলশান এলাকায় র‌্যাব-পুলিশ ছাড়াও মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি ও সোয়াট সদস্যদের। রাত ১২টার দকে সেখানে তিনটি এপিসি যানকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। গুলশানের আকাশে টহল দিচ্ছে র‌্যাবের হেলিকপ্টারও।

এদিকে, এ ঘটনার সূত্রে সাবধানতা হিসেবে রাজধানীর গুরুত্বপূরর্ণ স্থাপনা ও এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওই বেকারি ঘিরে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের মধ্যে পুলিশসহ আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ওই ঘটনায় আহত হছেন রেস্টুরেন্ট মালিকও। কেউ কেউ বলছেন আহতের সংখ্যা কমপক্ষে অর্ধশত যার মধ্যে অধিকাংশই পুলিশ সদস্য।

রেস্টুরেন্টে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসা ওই রেস্টুরেন্টের সুপারভাইজার সুমন রেজা জানান, রাত পৌনে ৮টার দিকে কয়েক তরুণ সেখানে অস্ত্র নিয়ে ঢোকে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও তাদের একজনের হোতে রামদা ছিল। প্রথমদিকে তারা বিষয়টিকে তরুণদের মজা করা বা ‘ফান’ হিসেবে মনে করেন। কিন্তু পরে দেখা যায় তারা গোলাগুলি শুরু করেছে। প্রথমদিকে ফাঁকা গুলি করা হয়।

তিনি জানান, হামলাকারীরা ‘আল্লাহু আকবার’ ডাক দিয়ে হামলা চালায়। ধারণা করা হচ্ছে এটা কোনো নিষিদ্ধ জঙ্গি গ্রুপের কাজ।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, গুলশানে গোলাগুলির ঘটনায় আহত তিনজনকে সেখানে নেওয়া হয়েছে। এরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল প্রদীপ ও কনস্টেবল আলমগীর এবং পথচারী আবদুর রাজ্জাক। পেশায় মাইক্রোচালক আব্দুর রাজ্জাককে গলায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

গলায় ও বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুর রাজ্জাক রানা নিউজওয়ান২৪.কমকে বলেন, সন্ধ্যার পর জাপানি চারজন নাগরিককে মাইক্রোবাসে নিয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে নামাই। তারা আমাকে অপেক্ষা করতে বলে ভেতরে যায়। এসময় হঠাৎ গুলির শব্দ শুনি। তারপর দেখি আমার গায়ে গুলি লেগেছে। এরপর আর কিছু মনে নেই।

জানা গেছে, পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

খবর পাওয়া যাচ্ছে ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ কনস্টেবলও নিহত হয়েছেন। তবে এ ঘটনা নিশ্চিত করেনি পুলিশের কেউ।

শাহবাগ থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ঢামেক হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তার স্বার্থে।

এদিকে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির জানিয়েছেন, রেস্টুরেন্টে অবস্থঅন নেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে এবং অাটকে পড়াদের উদ্ধারে তৎপরতা চলমান রয়েছে।

আটকেপড়াদের মধ্যে রয়েছেন বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রকৌশলী হাসনাত করিম। সূত্র জানায়, তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ সেখানে গিয়েছিলেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/একে

গুলশানের ঘটনায় বানানী থানার ওসি সালাউদ্দিন নিহত

গুলশানে ‘জঙ্গিদের’ গুলিতে ৪ পুলিশ আহত, জিম্মি কয়েক বিদেশি

আরও পড়ুন
অপরাধ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত