ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
সর্বশেষ:

সুরা মারিয়ামের আলোচ্য বিষয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:০১, ৪ মার্চ ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

১. কাফ-হা-ইয়া-আইন-সদ;  ২. এটি তোমার রবের রহমতের বিবরণ তাঁর বান্দা  জাকারিয়ার প্রতি। [সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ১-২ (চতুর্থ পর্ব)]

তাফসির : এ সুরা মহানবী (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের আগে অবতীর্ণ হয়েছে। এ ধরনের সুরাগুলোতে মহান আল্লাহর অস্তিত্ব, তাঁর একত্ববাদ, নবীদের নবুয়ত, পরকালের অপরিহার্যতা, পরকালের প্রতিফল ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সুরায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

সুরাটি শুরু হয়েছে জাকারিয়া (আ.)-এর বৃদ্ধ বয়সে সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনার মাধ্যমে। তাঁর সন্তানের নাম ইয়াহ্ইয়া। পরে তিনিও নবী হয়েছেন। তাঁর জন্মের সময় তাঁর মাতা-পিতা দুজনই বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। মহান আল্লাহর কাছে তাঁরা অব্যাহত দোয়া করেছেন। আল্লাহ তাআলা তাঁদের দোয়া কবুল করেছেন। এ সুরার ১ থেকে ১৫ নম্বর আয়াতে তাঁদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর আনা হয়েছে মারিয়াম (আ.)-এর ঘটনা। তাঁর গর্ভে অলৌকিকভাবে ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৬ থেকে ৩৬ নম্বর আয়াতে তাঁর জন্ম, জন্ম-পরবর্তী ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। এরপর ৩৭ থেকে ৪০ নম্বর আয়াতে খ্রিস্টানদের বিভিন্ন ভ্রান্ত বিশ্বাস খণ্ডন করা হয়েছে। ৪১ থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে ইবরাহিম (আ.) সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মূর্তিপূজা নিয়ে পিতা, পরিবার ও সমাজের সঙ্গে বাদানুবাদ সম্পর্কে এই আয়াতগুলোতে বর্ণনা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর ঈমান ও বিশ্বাসের কারণে কিভাবে দেশত্যাগ করতে হয়েছে, সে বিষয়ও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

৫১ থেকে ৫৩ নম্বর আয়াতে মুসা (আ.)-এর তুর পাহাড়ে গমন, মহান আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন এবং তাঁর ভাই হারুন (আ.)-কে নবী হিসেবে প্রেরণ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। ৫৪ থেকে ৫৮ নম্বর আয়াতে ইসমাইল (আ.) ও ইদরিস (আ.) সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা উভয়ে আল্লাহর সত্য নবী ছিলেন। তাঁরা মানুষকে আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিয়েছেন এবং শিরক মূলোৎপাটন করেছেন। ৫৯ থেকে ৬৩ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে যে অনেক সময় উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া আমানত, রেখে যাওয়া মূল্যবোধ ও আদর্শ বেমালুম ভুলে যায়। ৬৪ থেকে ৬৫ নম্বর আয়াতে প্রসঙ্গক্রমে জিবরাইল (আ.) ও তাঁর ওহি নিয়ে আগমন বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। ৬৬ থেকে ৭২ নম্বর আয়াতে পরকালের অস্তিত্ব, আমলের প্রতিফল, অবিশ্বাসীদের যুক্তি খণ্ডন ইত্যাদি বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। ৭৩ থেকে ৮৪ নম্বর আয়াতে কোরআন বিষয়ে সমাজপতিদের ভ্রান্ত বিশ্বাস ও অহংকারী কথাবার্তা খণ্ডন করা হয়েছে। এক শ্রেণির বিত্তবানের দাবি হলো, ‘দুনিয়ায় গরিবরা ধর্মপ্রবণ হয়। ধর্মকর্ম না করে আমরা ভালো আছি। কাজেই আমরা পরকালেও ভালো থাকব।’ আলোচ্য আয়াতগুলোতে তাদের ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন করা হয়েছে। ৮৫ থেকে ৮৭ নম্বর আয়াতে জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীদের সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। ৮৮ থেকে ৯৮ নম্বর আয়াতে শিরকের আশঙ্কা নাকচ করা হয়েছে। ঈমানদারদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির কথা বলা হয়েছে এবং কোরআন নাজিলের বিশেষ উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে। এভাবেই সুরাটি সমাপ্ত হয়েছে।

নিউজওয়ান২৪/ইরু