ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
সর্বশেষ:

শ্রীলঙ্কায় গোলাগুলিতে ৬ শিশুসহ নিহত ২০

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ২৭ এপ্রিল ২০১৯  

কলম্বো শহরে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে          ছবি: এসোসিয়েটেড প্রেস

কলম্বো শহরে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে ছবি: এসোসিয়েটেড প্রেস

এক দশক আগে গৃহযুদ্ধ জর্জরিত দেশ ছিল শ্রীলঙ্কা। তখন হরদম সেনা অভিযান আর তামিল বিচ্ছিন্নতাবদীদের হামলায় গণ্ডায় গণ্ডায় সামরিক-বেসামরিক লোকজ নিহতের ঘটনা ঘটতো। সাম্প্রতিক সিরিজ বোমা হামলার জের ধরে গত এক সপ্তাহ ধরে যেন ফের অস্থির পরিস্থিতির মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এরই ধারবাহিকতায় গত (শুক্রবার) রাতে শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে পুলিশ ও সেনাসদস্যদের অভিযানকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছয় শিশুসহ কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে। এর বাইরে অন্য ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার বন্দুকধারী ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

সে সূত্রে দেশটিতে সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতায় গতরাতে কমপক্ষে ২০ জন নিহতের খবর মিললো যার মধ্যে কমপক্ষে ছয় জন রয়েছে শিশু।

গত ২১ এপ্রিল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডের দিনে সিরিজ বোমা হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকে গত রাতে অভিযান চালায় দেশটির পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ড। আজ (শনিবার) সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ও সরকারি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

খবরে বলা হয়, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বাত্তিকালোয়া প্রদেশের আমপারা শহরের সেইন্টামারুথু এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ও ইসলামী চরমপন্থীদের মধ্যে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত, ইস্টার সানডের দিনে এখানেও আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

শ্রীলঙ্কান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু জানান, একটি বাড়িতে অভিযান শুরু করলে বন্দুকধারীরা সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা পাল্টা গুলি চালালে দুজন বন্দুকধারী নিহত হয় বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া বন্দুক হামলায় মুখে পড়ে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

পরে অবশ্য পুলিশ জানায় নিহতদের মধ্যে অভিযুক্ত চারজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী রয়েছে। ইস্টার সানডে বোমা হামলাকারীদের খুঁজতেই যৌথ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

বিবিসিকে শ্রীলঙ্কান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাত্তিকোলার আমপারা শহরে পুলিশের চালানো ওই অভিযানের সময় একটি বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের পাশেই আরও একটি অভিযান চালায় তারা। সেই অভিযানে বেশ কিছু বিস্ফোরক ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের ব্যবহার করা পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। এছাড়া দক্ষিণ এশীয় এ দেশটিতে আরও সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রও সতর্ক করেছে। 

গত রবিবারের সেই ভয়াবহ হামলার পর দেশজুড়ে ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা এবং ধর্মীয় স্থাপনায় নিরাপত্তার জন্যই অতিরিক্ত এই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কলম্বো কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, শ্রীলঙ্কা সরকার হামলার জন্য স্থানীয় ইসলামী চরমপন্থী দল ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াতকে দায়ী করলেও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

ইস্টার সানডেতে তিনটি গির্জা ও তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার দুদিন পর নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫৯ জনে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিহতের সংখ্যা প্রায় একশ কম বলে জানান। তার দেয়া হিসাব মতে, হামলায় মোট ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন।

নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে

আরও পড়ুন
বিশ্ব সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত