বিক্রয়কর্মীর মাধ্যমে বাজারে এখন নকল ওষুধের ছড়াছড়ি
নিউজ ওয়ান টুয়েন্টি ফোর ডেস্ক

ফাইল ছবি
নিহাল হাসনাইন: ওষুধ কোম্পানিতে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরির সুবাদে বাজারে নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন অসাধু চক্র। সম্প্রতি এমন একটি চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ চক্রের মূল হোতা জয়নুল আবেদীন। তিনি ওষুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের বিক্রয়কর্মী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডে জুনিয়র ফিল্ড অফিসার পদে চাকরিতে যোগদান করেন জয়নুল আবেদীন। পোস্টিং পান ময়মনসিংয়ের ভালুকা থানায়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে জয়নুল ওষুধ মোড়কীকরণ ও বিতরণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে শুরু করেন। একটা পর্যায়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কিছুসংখ্যক বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গেই নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন বিশাল সিন্ডিকেট। পাশাপাশি গড়ে তোলেন নকল ওষুধ তৈরি ও মোড়কীকরণের একটি কারখানাও। ওই কারখানা থেকে নকল ওষুধ তৈরির পর চক্রের দ্বিতীয় স্তরের সদস্যদের মাধ্যমে তা পৌঁছে দেয়া হতো প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের কাছে। তাদের হাত ঘুরে ওই ওষুধ চলে যেত রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা ও গ্রামের ফার্মেসিগুলোয়। চক্রটি মূলত একমির সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধ মোনাস টেনের সদৃশ ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করত। সম্প্রতি রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে এক সহযোগীসহ জয়নুল আবেদীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা মেট্রোর একটি দল।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, ১৪ জুন খিলগাঁও তিলপাপাড়ার লাকী ফার্মেসিতে শারমীন আক্তার নামে এক নারী বিক্রয়কর্মী অর্ধেক মূল্যে মোনাস টেন ওষুধ বিক্রি করতে যান। পরে ফার্মেসি মালিকের সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওষুধ না নিয়ে ওই নারীকে জানান যে, তাদের কাছে এখন মোনাস টেন রয়েছে। তবে মজুদ শেষ হয়ে গেলে তার কাছ থেকে নেয়া হবে। তাই তার সেলফোন নম্বর দিয়ে যেতে বলেন। পরে বিষয়টি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডে অবহিত করা হলে তারা তা পুলিশকে জানান। এর কয়েক দিন পর পুলিশের সহায়তায় একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড থেকে ফোন করে শারমীন আক্তার নামে ওই নকল ওষুধ সরবরাহকারীকে মোনাস টেন সরবরাহ করতে বলা হয়। সে অনুযায়ী ওই নারী বিক্রয়কর্মী ওষুধ সরবরাহ করতে গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। ওই সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নকল মোনাস টেন ওষুধ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় একমি ল্যাবরেটরিজের পক্ষ থেকে খিলগাঁও থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলাও করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও একমি ল্যাবরেটরিজের অডিট শাখার কর্মকর্তা মো. শফিক হাসান বলেন, আমরা নিয়মিতভাবেই বাজার জরিপ করি এবং আমাদের কর্মীদের কর্মকাণ্ডের ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখি। সেই ধারাবাহিকতা থেকেই জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে আমরা তথ্য পাই এবং তা পুলিশকে জানাই। ভবিষ্যতে কোনো কর্মী এমন কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআইকে। দায়িত্ব পেয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো ইউনিট। জিজ্ঞাসাবাদে শারমীন আক্তার নামের নকল ওষুধ সরবরাহকারীর কাছ থেকে তারা জানতে পারেন যে, ওই চক্রের মূল হোতা জয়নুল আবেদীন। তিনি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানা এলাকার রমজান আলীর ছেলে। জয়নুল দীর্ঘদিন ধরে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডে কর্মরত বলেও জানতে পারেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পরে এ তথ্যের ভিত্তিতেই সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে আসা ফারুক মিয়া নামে এক সহযোগীসহ জয়নুলকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জয়নুল পুলিশকে জানান, তিনি চাকরিতে যোগদানের এক বছরের মাথায় লোভের বশবর্তী হয়ে নকল ওষুধ তৈরি ও বিপণন শুরু করেন। এজন্য তিনি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের বিভিন্ন এলাকায় কিছু বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাদের মাধ্যমে বাজারে নকল ওষুধ ছড়াতে শুরু করেন। তবে তারা জেলা শহরগুলোতেই বেশিসংখ্যক নকল ওষুধ সরবরাহ করেছেন।
এ বিষয়ে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার হলেও এখনো আরো অনেক সদস্যই অধরা রয়ে গেছে। তাছাড়া তাদের নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধানও এখনো বের করা যায়নি। তবে আদালতের অনুমতিক্রমে জিজ্ঞাসাবাদের পরই তাদের কারখানা এবং এ চক্রের সঙ্গে আরো যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
এখনই ওষুধের বাজারে নজরদারি বৃদ্ধি করা না হলে নকল ওষুধের ভয়াবহতা রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা ও গ্রাম পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সঙ্গে একটা সময় নকল নিত্যপণ্যের মতোই ওষুধের ওপরও সাধারণ মানুষ আস্থা হারাতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ওষুধের ক্ষেত্রে নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ হলে সেটি আর ওষুধ থাকে না, হয়ে যায় বিষ। এ বিষ খেলে লিভার ও কিডনির মতো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অর্গান বিকল হয়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানে সরকারকে ওষুধ খাতে পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব কাজে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সূত্র: বণিক বার্তা
- অ্যাজমা চিকিৎসায় হোমিও সমাধান
- ছেলেদের যে অঙ্গগুলো পছন্দ মেয়েদের
- কুমারীত্ব...
- ঝাড়-ফুঁকে সাপ কামড়ানো রোগী ‘ভালো হয় যেভাবে’
- যৌনমিলন দীর্ঘস্থায়ী করার উপায়
- স্ত্রী হিসেবে মোটা মেয়েরাই ভালো!
- আকষ্মিক হার্ট অ্যাটাক! অন্যের সাহায্য ছাড়াই যেভাবে বাঁচাবেন নিজকে
- প্রয়োজনীয় যে সব ওষুধ...
- অলস বাবুদের জন্য সুখবর: আসছে কাপড় ভাঁজ করার মেশিন!
- যৌনতা বিষয়ে যে জিনিসগুলো জেনে রাখা জরুরি
- নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
- আফ্রিকার ‘যমরাজ’ ব্লাক মাম্বা
- শারীরিক মিলনের পর করণীয় কিছু...
- টাইফয়েডের নতুন টিকায় ১০ জনের ৯ জনই বাঁচবে
- শিশুকে ফ্লাইং কিস: আমিরাতি তরুণের জেল