ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মাদ (সা.) এর শারীরিক গঠন ও মোহরে নবুয়ত
নিউজ ডেস্ক

ফাইল ছবি
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ব মানবতার জন্য ন্যায় ও আদর্শের স্বীকৃত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি সব মানুষের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ।
হাদিসে পাকে শুধু তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রশংসায় ছন্দ, কবিতা আর গ্রন্থই রচিত হয়নি বরং তাঁর আকার-আকৃতির বর্ণনাও রয়েছে।
হাজারো ছন্দ-কবিতায় ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তাঁর আশেকরা।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মধ্যে যেমন উত্তম গুণাবলীর সর্বাধিক সমাবেশ ঘটেছিল; তেমনি তার দৈহিক সৌন্দর্য্য ছিল অতুলনীয়।
হাদিসের আলোকে প্রিয়নবী (সা.) এর শারীরিক গঠন ও মোহরে নবুয়ত সম্পর্কে কয়েকটি হাসিদ তুলে ধরা হলো-
> বিশ্বনবী (সা.) উচ্চতা:
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব দীর্ঘ (লম্বা) ছিলেন না; আবার খাটোও ছিলেন না। তিনি ধবধবে সাদা আবার বাদামি বর্ণেরও ছিলেন না। তাঁর চুল একেবারে কোকড়ানো ছিল না আবার একদম সোজাও ছিল না।
৪০ বছর বয়সে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নবুয়ত দান করেন। এরপর তিনি মক্কায় ১০ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর কাটান। আল্লাহ তায়ালা ৬০ বছর বয়সে তাকে ওফাত দান করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা ও দাড়ির ২০টি চুলও সাদা ছিল না।’ (বুখারি, মুসলিম, মুয়াত্তা মালেক, ইবনে মাজাহ)
যদিও হাদিসে প্রিয়নবী (সা.) এর হায়াতে জিন্দেগি ৬০ বছর উল্লেখ করা হয়েছে, মূলত তিনি ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন এবং মক্কায় ১৩ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছিলেন।
> প্রিয়নবী (সা.) এর বর্ণ:
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমাকৃতির ছিলেন। বেশি লম্বা বা বেশি খাঁটোও ছিলেন না। তার দেহ ছিল খুবই আকর্ষণীয়। তাঁর চুল খুব কোকড়ানো কিংবা একেবারেই সোজাও ছিল না। তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের। পথ চলার সময় তিনি সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা, শরহুস সিন্না)
> বিশ্বনবী (সা.) এর আকৃতি:
হজরত বারা ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমাকৃতির ছিলেন। তাঁর দুই কাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ছিল তুলনামূলক প্রশস্ত। তাঁর ঘন চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। তাঁর দেহে লাল লুঙ্গি ও লাল চাদর শোভা পেত। আমি তাঁর তুলনায় সুদর্শন কাউকে দেখিনি।’ (বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ) হাদিসে উল্লেখিত লাল রং বলতে লাল বর্ণের ডোরাকাটা অনুজ্জ্বল কাপড়কে বুঝানো হয়েছে।
> প্রিয়নবী (সা.) এর কাঁধের বর্ণনা:
হজরত বারা ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল বিশিষ্ট লাল চাদর ও লাল লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে সুদর্শন কাউকে দেখিনি। তার কেশগুচ্ছু ছিল কাঁধ বরাবর। তার দু’কাধের মধ্যবর্তী স্থান অন্যদের তুলনায় কিছুটা প্রশস্ত ছিল। তিনি অধিক খাটো কিংবা অধিক দীর্ঘাকৃতির ছিলেন না।’ (মুসলিম মুসনাদ আহমাদ)
> বিশ্বনবী (সা.) হাত-পা-তালু ও আঙ্গুলসমূহের বর্ণনা:
হজরত আলি ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহর আনুহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি দীর্ঘ এবং বেশি খাটো ছিলেন না। তাঁর উভয় হাত ও পায়ের তালু এবং আঙুলসমূহ ছিল মাংসল।
তাঁর মাথা ছিল কিছুটা বড় এবং হাত ও পায়ের জোড়াগুলো ছিল মোটা। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত পশমের একটি সরু রেখা প্রলম্বিত ছিল। (তিনি) যখন পথ চলতেন মনে হতো যেন কোনা উঁচু স্থান থেকে নিচে অবতরণ করছেন।
বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর আগে কিংবা পরে আমি তাঁর মতো (অনুপম আকর্ষনীয়) আর কাউকে দেখিনি।’ (মুসনাদে আহমদ, মুসতাদরেকে হামেক, ইবনে হিব্বান)
> প্রিয়নবী (সা.) মুখ-চোখ ও গোড়ালির বর্ণনা:
হজরত জাবির ইবনে সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ ছিল প্রশস্ত। চোখের শুভ্রতার মাঝে কিছু লালিমা ছিল। পায়ের গোড়ালি স্বল্প মাংসল ছিল।
শুভা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘ আমি সিমাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে বললাম, ‘জলিউল ফাহমি’ কী? তিনি বললেন, বড় মুখগহ্বর বিশিষ্ট।
আমি আবার বললাম, আশকালুল আইন কী? তিনি বললেন, ডাগর চোখ বিশিষ্ট। আমি বললমা, মানহুসুল আক্বিব কী? তিনি বললেন, চিকন গোড়ালী বিশিষ্ট।
> বিশ্বনবী (সা.) এর তুলনা:
হজরত জাবির ইবনে সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি একবার পূর্ণিমার রাতের স্নিগ্ধ আলোতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখলাম।
তখন আমি একবার তার দিকে ও একবার চাঁদের দিকে তাকাতে থাকলাম। মনে হলো তিনি আমার কাছে পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও অধিকতর চমৎকার।’ (মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)
অন্য বর্ণনায় হজরত আবু ইসহাক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘একবার বারা ইবনে আজেবকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা কি তরবারির ন্যায় ছিল। তিনি বললেন, না বরং তিনি ছিলেন চাঁদের মতো।’ (বুখারি, মুসনাদে আহমদ, দারেমি, ইবনে হিব্বান)
> প্রিয়নবী (সা.) এর শুভ্রতার বর্ণনা:
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুভ্রতায় ছিলেন রৌপ্যের ন্যায় এবং তাঁর চুলগুলো ছিল কিছুটা কোকড়ানো।’ (জামেউস সগির, সিলসিলা)
> প্রিয়নবী (সা.) এর সাদৃশ্যতা:
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার কাছে নবিগণকে পেশ করা হয়। মুসা আলাইহিস সালামের মধ্যে বিভিন্ন লোকের সাদৃশ্য বিদ্যমান ছিল। তিনি যেন শানুয়াহ গোত্রের লোক। আমি ঈসা ইবনে মরিয়মকে উরওয়া ইবনে মাসঊদের সাদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই।
অতঃপর আমি হজরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে দেখতে পাই এবং তাঁকে পাই তোমাদের সঙ্গীর সঙ্গে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। তোমাদের সঙ্গী বলে তিনি নিজেকে বুঝিয়েছেন। আর জিবরিলকে হজরত দাহিয়াতুল কালবি এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই। (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান, মিশকাত)
হজরত আবু তুফায়েল রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি। তবে তাঁকে যারা দেখেছেন তাঁদের মধ্যে আমি ছাড়া কেউ ভূপৃষ্ঠে বেঁচে নেই। (বর্ণনাকারী বললেন) আমি বললাম আপনি আমার কাছে তাঁর বিবরণ পেশ করুন। তিনি বললেন, প্রিয়নবী ছিলেন, শুভ্রকায় ও লাবণ্যময় সুসামঞ্জস্যপূর্ণ।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান, মিশকাত)
মোহরে নবুয়ত:
প্রিয়নবীর মোহরে নবুয়ত কী? কোথায় ছিল তা? দেখতেই বা তা কেমন ছিল? সাহাবায়ে কেরামের মাঝে যারা সেটি দেখেছে, তাদের বর্ণনায় তুলে ধরা হলো সে বর্ণনা-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’কাঁধের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি গোশতের টুকরা। এটি হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুয়তের নিদর্শন। আর প্রিয়নবী (সা.) এর পবিত্র শরীরে এ নিদর্শন বা চিহ্ন থাকার কথা পূর্ববর্তী সব আসমানি গ্রন্থেই বর্ণনা করা হয়েছিল।
> হজরত সায়িব ইবনে ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। এরপর তিনি (বর্ণনাকারীর খালা) আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ভাগ্নে অসুস্থ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার কল্যাণের (সুস্থতার) জন্য দোয়া করলেন।
অতঃপর তিনি ওজু করলেন। আমি তাঁর ওজুর অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তাঁর পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর দু’কাঁধের মধ্যস্থ ‘মোহরে নবুয়ত’-এর দিকে আমার দৃষ্টি পড়ে যায়। যা দেখতে পাখির (কবুতরের) ডিমের মতো।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত, শামায়েলে তিরমিজি)
> হজরত জাবির ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহরে নবুয়ত দেখেছি। আর তা যেন ছিল ডিমের ন্যায় লাল গোশতপিণ্ড।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, মুসতাদরাকে হাকেম, ইবনে হিব্বান, মিশকাত)
> হজরত আবু যায়েদ আমর বিন আখতাব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে আবু যায়েদ! আমার কছে এসো এবং আমার পৃষ্ঠদেশে হাত বুলাও। তখন আমি তাঁর পিঠে হাত বুলাতে থাকলাম। এক পর্যায়ে আমার আঙ্গুলগুলো মোহরে নবুওয়াতের ওপর লেগে গেল। বর্ণনাকারী আমর বিন আখতাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, ‘খাতাম’ (মোহরে নবুওয়াত) কী জিনিস? তিনি বললেন, এক গুচ্ছ কেশ।’ (মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকেম, শামায়েলে তিরমিজি)
সাহাবাগণ কি মোহরে নবুয়ত স্পর্শ বা চুম্বন করতে পারনে?
> দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবি হজরত রুমায়সা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, সাদ ইবনে মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর ওফাতের দিন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তার মৃত্যুতে রহমান (আল্লাহ তা’আলা) এর আরশ কেঁপে উঠেছিল। রুমায়সা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এ উক্তি করেন তখন আমি তাঁর এত কাছে ছিলাম যে, ইচ্ছে করলে তাঁর মোহরে নবুওয়াত চুম্বন করতে পারতাম।’ (মুসনাদে আহমাদ, শামায়েলে তিরমিজি)
মোহরে নবুয়ত দেখেই ঈমান এনেছিলেন হজরত সালমান ফারসি:
> হজরত আবু বুরায়দা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদিনায় হিজরতের পর একবার সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি পাত্রে কিছু কাঁচা খেজুর নিয়ে এলেন এবং তিনি তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে রাখলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে সালমান! এগুলো কিসের খেজুর? (অর্থাৎ হাদিয়া না সাদাকা?) তিনি বললেন, এগুলো আপনার ও আপনার সাথীদের জন্য সাদাকা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এগুলো তুলে নাও। আমরা সাদাকা খাই না। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি তা তুলে নিলেন।
পরের দিন তিনি অনুরূপ খেজুর নিয়ে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পেশ করলেন।
তখন তিনি বললেন, সালমান! এসব কিসের খেজুর? সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আপনার জন্য হাদিয়া।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিগণকে বললেন, তোমরা হাত প্রসারিত কর (হাদিয়া গ্রহণ কর)।
অতঃপর সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পৃষ্ঠদেশে মোহরে নবুওয়াত দেখতে পেলেন; অতঃপর ঈমান আনলেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, শামায়েলে তিরমিজি, মুসনাদে বাযযার)
তিলকে পরিবেষ্টিত ছিল মোহরে নবুয়ত:
> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সারজিস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তখন তিনি তাঁর সাহাবিগণের মাঝে ঘুরছিলেন। এক পর্যায়ে আমি তাঁর পিছু ধরলাম। তিনি আমার মনোবাঞ্ছনা বুঝতে পেরে পিঠ থেকে চাদর সরিয়ে ফেলেন। তখন আমি তাঁর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহরে নবুওয়াত দেখতে পাই। আর তা ছিল মুষ্টিবদ্ধ আঙ্গুলীর ন্যায় এবং এর চারপার্শ্বে আচিলের মতো কতগুলো তিলক শোভা পাচ্ছিল।
অতঃপর আমি তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন।
তখন তিনি বললেন, তোমাকেও ক্ষমা করুন। তারপর লোকে আমাকে বলতে লাগল, তুমি বড়ই সৌভাগ্যবান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি তোমাদের জন্যও দু’আ করেছেন। এরপর তিনি এ আয়াত (সূরা মুহাম্মদ-এর ১৯নং আয়াত) তিলাওয়াত করেন-
وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
(হে রাসূল!) আপনি আপনার জন্য এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য মাগফিরাত কামনা করুন।’ (সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, মারেফাতুস সাহাবা, শামায়েলে তিরমিজি)
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোহরে নবুয়ত ছিল আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক প্রদত্ত নবুয়তের সীলমোহর। যা তিনি প্রিয়নবীকে নবুয়তের নিদর্শন স্বরূপ দান করেছিলেন। যা ছিল এক টুকরো বাড়তি গোশত। সাহাবায়ে কেরামও তা বর্ণনা করেন এবং পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবেও তা বর্ণনা করা হয়েছিল।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোহরে নবুয়তের বর্ণনায় রাসূলের প্রেমে আত্মহারা পাগলপারা আশেকরা হৃদয় দিয়ে প্রিয়নবীর মোহরে নবুয়তকে উপলব্দি করবে। স্বপ্নযোগে প্রিয়নবীর মোহরে নবুয়ত স্পর্শ বা চুম্বন করতে চাইবে। যে চুম্বন বা স্পর্শে তৃপ্ত হবে আশেকে রাসূলদের হৃদয় ও মন। সুনিশ্চিত হবে জান্নাতের ঠিকানা।
মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদিকে প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণের মাধ্যমে তাঁর একান্ত সান্নিধ্য লাভ করার তাওফিক দান করুন।
পরকালে প্রিয়নবী (সা.) এর সুপারিশ লাভের মাধ্যমে চিরস্থায়ী সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আল্রাহুম্মা আমিন।
নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ
- যে দোয়ায় গলার কাঁটা নেমে যাবে ইনশাল্লাহ!
- ফরজ নামাজের পর প্রয়োজনীয় কিছু আমল
- দরুদে ইব্রাহিম
- মা-বাবার জন্য দোয়া
- তাহিয়্যাতুল-মাসজিদ
মসজিদে ঢুকেই দু’রাকাত নামাজ... - পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচি...
- দরুদে ইব্রাহিম
- কোরআন হাদিসের আলোকে জুমা’র দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
- ঋণ মুক্তির সর্বোত্তম আমল
- ফজিলতপূর্ণ কিছু দোয়া ও আমলসমূহ
- পবিত্র কোরআনের তথ্যকণিকা
- জুমার দিনের ৩ আমল
- হযরত আদম আ. এর বিয়ের মহর কত ছিল!
- ফেরেশতা পরিচিতি...
- ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে’