জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক

সংগৃহীত ছবি
ঝিনাইদহে কথিত জ্বিনের বাদশার কাছে মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। প্রতারক চক্রটি নানা ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব ক্ষেত্রে প্রলুব্ধ করতে প্রতারকরা কৌশলে প্রতারিতের বিশ্বাস অর্জন করতে দিচ্ছে ‘সোনার পুতুল’।
চক্রটি মধ্যরাতে ঘুম ভাঙিয়ে টার্গেটকে বড়লোক হওয়ার গল্প শোনায়। গ্রামের সহজ সরল ১০ জন মানুষকে ফোন করলে অন্তত ২/৩ জন তাদের টার্গেটে পরিণত হয়। আবার মুসলিম হলে ধর্মীয় দুর্বল জায়গায় আঘাত করে ফায়দা লুটে নেয়।
বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রতারকরা ফোন করে প্রথমে কোরআন শরিফ ও জায়নামাজ দাবি করে কথিত জিনের বাদশা। সেগুলো পেয়ে খুশি হয়ে একটি ‘স্বর্ণের পুতুল’ উপহার দেয়। এই উপহার আসলে বড় ফাঁদ। এবার তাদের গড়া মসজিদে কোরবানির গরু কেনার টাকা দিলে রাতারাতি ধনী করে দেবেন বলে জানালে প্রলোভনে পড়ে লাখ টাকা দেন কেউ কেউ।
জিনের বাদশার কাছে প্রতারিত হওয়া ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী মিনাজ উদ্দীন। তারপর যা হওয়ার তাই হয়েছে। প্রতারণার শিকার মিনাজ উদ্দীন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ও দুর্গাপুর গ্রামের আছমত মন্ডলের ছেলে।
মিনহাজ জানান, এক রাতে তার মোবাইলে কল আসে। কল রিসিভ করার পর প্রথমে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে বলে ‘তুমি কি নামাজ পড়ো।’ উত্তরে সে বলে, ফজরের নামাজ পড়ে এসেছে। তখন জিনের বাদশা বলে, ‘তুমি এখন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নাও।’ নামাজ শেষ হলে বলে ‘আমি জিনের বাদশা, দিনাজপুর সৌর মসজিদে থাকি। ইমামের কাছেই থাকি এবং তার মাধ্যমেই কথা বলছি। তোমার কাছে বিশেষ আবেদন, আমাদের এখানে মসজিদে তিনটা কোরআন শরিফ এবং একটা জায়নামাজ দিতে হবে।
ওই দিনেই রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিনহাজকে ফোন দিয়ে বলে ‘তুই আমার শর্ত রাখিসনি। তোর সন্তানের মুখ দিয়ে রক্ত উঠে মারা যাবে, তুই কি তোর ক্ষতি চাস।’
এ কথা শুনে পর ভয়ে তাদের বিকাশ নম্বরে ১ হাজার ৫০ টাকা পাঠায় মিনহাজ। এভাবে দিনের পর দিন নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারক চক্রটি সর্বশেষ বলে তারা ৭০ হাজার সাহাবী এবং অলিআউলিয়া মিলে মিনহাজের জন্য দোয়া করেছে। সে যেন নিকটস্থ আটলিয়া বাজারে যায়। সেখানে গিয়ে কিছুই না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসে মিনহাজ।
পরে জিনের বাদশা বলে ‘পাশেই দেখো টিউবওয়েল আছে সেখানে যাও, ওখানে দেখ একটা বদনা আছে।’ বদনাটা উঁচু করে মিনহাজ স্বর্ণের রঙের পুতুল দেখে হতবাক হয়ে যায়। তখন তার বিশ্বাস বেড়ে যায়।
জিনের বাদশা জানায়- ‘তুমি সোজা বাড়ি গিয়ে পুতুলটি ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখবে এবং বিষয়টা কাউকে বলবে না। বিষয়টি জানাজানি হলে বড় ক্ষতি হবে বলে জানায়।’
এভাবেই আমার কাছ থেকে প্রথমে ৪২ হাজার, তারপর ৪০ হাজার ও সর্বশেষ ২১ হাজার টাকা বিকাশ করে সর্বশান্ত হয়ে পড়ি।
গোপালপুর বাজারের বিকাশ এজেন্ট বাবুল হোসেন বলেন, মিনাজ আমার পাশেই ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করে। ঘটনারদিন সকালে (গত ১৭ মার্চ) আমার দোকানে এসে বলে, গরমে ফ্যানের দাম বেড়ে যাবে। এজন্য বেশি করে ফ্যান কিনবে, জরুরিভাবে তার মহাজনের কাছে টাকা পাঠাতে হবে। তখন আমি ০১৩০২-১৬২২০৯ ও ০১৮৯২-১৯৫৬৫১ নম্বরে ৮২ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। এরপর আমি টাকা চাইলে বলে একটু পরে দেবে। এ ঘটনার একদিন পর অন্য দোকান থেকেও সে টাকা পাঠিয়েছে। তারপর আমরা জানতে পারি সে আসলে জিনের বাদশার খপ্পড়ে পড়েছে।
মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মিনাজ বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্যা করে আসছে। সে একজন সহজ-সরল মানুষ। জিনের বাদশা সেজে প্রতারক চক্র তার সরলতাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন এই প্রতারক চক্রটি এলাকার হতে পারে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ