চেন্নাইর বন্যা, ফটোশপ ও রাজনীতিকদের কদর্য চেহারা!
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক
চেন্নাইর বন্যা, ফটোশপ ও রাজনীতিকদের কদর্য চেহারা!
বন্যা কাটতে না কাটতেই কৃতিত্ব দাবির জোয়ারে ফের তলিয়ে যাওয়ার অবস্থা ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর। শতবছরের ভয়াবহতম বর্ষণ আর বন্যায় তিনশর বেশি মানুষ মারা গেছে। রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইর বিমানবন্দরটি গলাপানিতে ডুবে গিয়েছিল। মাত্রই এই পরিস্থিতি কাটতে শুরু করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে কৃতিত্ব শিকারের কুকুর-কামড়াকাসড়ি অবস্থা।
সোমবার সর্বশেষ খবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, ট্রেন আর সড়ক যোগাযোগও ক্রমশ পূর্বাবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত এখনো পুরোদমে খুলে যায়নি- তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আর বেশি দেরি নাই- এটা পরিষ্কার। আবহাওয়া বিভাগও ফের সামনে টানা চারদিন বৃষ্টিপাতের যে আভাস দিয়েছিল- তা সংশোধন করেছে।
সবই ভাল, তামিলনাড়ুর মানুষ আবার আগের অবস্থায় ফিরছে- চারদিকের দৃশ্যাবলীতে এটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তবে শুধু একটা জিনিসই খটকায় ফেলে দিচ্ছে রাজ্যসহ দুনিয়ার আর সব স্থানের মানুষকে। তা হলো, রাতারাতি গজিয়ে ওঠা কলাগাছের মতো জায়গায় জায়গায় দেখা যাচ্ছে কিছু ব্যানার-পোস্টার। এইসব বিলবোর্ড-প্রচারণায় রাজনীতিক নেতাদের ছবি রয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা জনগণের সেবায় বন্যাত্রাণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
কিন্তু চেন্নাইর মানুষজন আর মিডিয়া বলছে ভিন্ন কথা। ওই ছবিগুলো ফটোশপ করা।
এমন একটি ব্যানারে দেখা যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা কান ডোবানো পানি ডিঙ্গিয়ে একহাতে উঁচু করে এক নবজাতককে উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন বন্যার পানি ঠেলে। এমন ছবিওয়ালা প্রচারণায় রাজ্যের রাজনৈতিক কর্মীরা রীতিমতো পেরেশান বলা যায়। ছবিটির ধারণা সাম্প্রতিক দক্ষিণের বহুল আলোচিত বিগ বাজেটের সিনেমা বাহুবলির পোস্টার থেকে নেওয়া হয়েছে। এমনকি ওই পোস্টারে ছাপানো নবজাতকের ছবিটিই জয়ললিতার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ফটোশপ করে।
মিডিয়া বলছে- বন্যায় যখন রাজ্যময় মানুষের ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা; খাদ্য তো পরের কথা অনেকের ঘরে খাবার পানিও নাই, বিদ্যুৎ নাই, একেকটা মোমবাতি বিক্রি হয়েছে ত্রিশ রুপিতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে- সেই ভয়াবহ মুহূর্তে রাজনীতিকরা অনেকটাই যেন ছিলেন ঘুমিয়ে।
দেশের সশস্ত্র বাহিনী, এনজিও, স্থানীয় সমাজসেবী, আইটিফার্মসহ ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীরা স্বার্থত্যাগ করে এগিয়ে এসেছেন অন্যদের সাহায্যে- ওই সময়গুলোতে রাজনীতিকদের তৎপরতা খুব একটা দেখা যায় নাই।
নবভারত টাইমস জানায়, এমনকি তারা অনেক স্থানে ত্রাণ যেতে বাধাও দিয়েছে। কোনো কোনো নেতা তো নিজ এলাকায় ত্রাণ প্রবেশের বিনিময়ে ঘুষও দাবি করেছেন। রাজ্যের সামাজিক কল্যাণমন্ত্রী বি বালারমথীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি একটি আইট ফার্ম থেকে পাঠানো ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্তদের কাছে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছেন। এই অভিযোগ রাজ্য সরকার সঙ্গে সঙ্গে অস্বীকার করেছে। আর মজার বিষয় হলো- যে প্রতিষ্ঠান ওই ত্রাণ পাঠয়েছিল তারাও এখন বলছে তারা কোনো ত্রাণ সামগ্রী পাঠায়নি। এই হচ্ছে রাজনীতির তেলেসমাতি। সব ম্যানেজ হয়ে যায়।
দেখা গেছে বন্যা ত্রাণে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলেও এর কৃতিত্ব জাহির করছেন এখন রাজনীতিকরা। বাস্তবে ‘আহাম্মক সাধারণ জনগণ’ দুনিয়ার সব দেশেই সব কালে ভিন্ন ভিন্ন রূপে এই ঘটনা দেখে, হজম করে অভ্যস্ত হয়। এবং নেতা নির্বাচনের সময়ে এদেরকেই করে। এটাই দুনিয়াভর চলমান রানৈতিক আবহের ট্রাজেডি বলা যায়। ভাল মানুষকে, কাজের মানুষকে সেইসব তথাকথিত সাধারণ মানুষ ভোট দেয় না- নেতা বানাতে চায় না।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে তামিলনাড়ুর বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যেসব ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল সরকারের তরফে সেসব ছবিও ফটোশপ করার দোষে দুষ্ট ছিল। সেখানে দেখা যায় হেলিকপ্টারে বসা মোদি তাকিয়ে আছেন জানালার দিকে। হেলিকপ্টারেরউড়ন্ত অবস্থায় মাটি থেকে অত উপরে থাকা অবস্থায়ও মোদির পাশের জানালায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ডুবে যাওয়া বাড়িঘরসহ অন্যান্য দৃশ্যাবলী। যা বাস্তবে সম্ভব নয় মোটেই। পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
নিউজওয়ারন২৪.কম/পিডি
- বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নারী শেখ হাসিনা
- সিরাজুল আলম খান রহস্য, একটি রাজনৈতিক বিতর্ক
- ঘটনা গুরুতর: প্রধান বিচারপতির উত্তরের আশায় পুরো বাংলাদেশ!
- পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো ক্ষতিকর
- ‘ডোপ টেস্ট’ কী? জেনে নিন...
- দুর্লভ সাদা গোখরাটি জ্যান্ত গিলে খেল অপর সাপকে! (ভিডিও)
- মইনুলকে জানি না তবে মাসুদা ভাট্টি চরিত্রহীন: তসলিমা
- আহ! কাকের বাসা
- উন্মাদের পরিবেশ সচেতনতা কার্টুন প্রদর্শনী শুরু
- র্যাবের নয়া এডিজি কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, পিএসসি
- ৫ বছর আগের কার্টুনের বক্তব্য...
- বিবস্ত্র হয়ে ঘর পরিষ্কার, অতঃপর...
- কেমন যাবে আপনার আজকের দিন
- গরীবের কংকাল ঢাকে ধনবানের স্ফীত উদর!
- রওশনের বাবা নাকি এরশাদ?- প্রথম আলো