ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
সর্বশেষ:

আল্লাহর অপছন্দ যে অবহেলাগুলো 

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ৩১ মার্চ ২০১৯  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনকে সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বলোকের জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ হিসেবে ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.) মারফত সুদীর্ঘ ২৩ বছরে অবতীর্ণ করেন। 

কোরআন মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও মুক্তির দিশারি বা পথপ্রদর্শক। 
 
হালাল-হারাম, বৈধ-অবৈধ, ইতিবাচক-নেতিবাচক ইত্যাদি বিষয় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর নিকট বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

এত কিছুর পরেও মুমিন মুসলমান তাকওয়াবান ব্যক্তিদের মধ্যেও অনেক সময় আল্লাহর হুকুম পালনে অলসতা ও গাফলতি পরিলক্ষিত হয়। যে অবহেলা ও গাফলতিগুলো আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহর ৪টি কাজকে আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। আর তা হলো-

(১) নামাজে অবহেলা করা: নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ না পড়ে দেরি করা বা নামাজ পড়তে অবহেলা করাকে আল্লাহ তায়ালা অপছন্দ করেন।

আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে তা যথা সময়ে পড়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

فَسُبْحَانَ اللَّهِ حِينَ تُمْسُونَ وَحِينَ تُصْبِحُونَ
 
وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَعَشِيًّا وَحِينَ تُظْهِرُونَ

‘জমিন ও আসমানের সব প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। অতএব তোমরা আল্লাহর তাসবিহ কর (নামাজ পড়) সন্ধ্যায় (মাগরিব ও এশা) ও প্রত্যুষে (ফজর) এবং বিকেলে (আসর) ও দ্বিপ্রহরে (জোহর)।’ (সূরা আর-রুম : আয়াত ১৭-১৮)

মুমিন বান্দা যাতে নামাজে অবহেলা প্রদর্শন না করে নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করে সে ব্যাপারেও সুস্পষ্ট নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلاَةَ فَاذْكُرُواْ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا

‘অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।’  (সূরা নিসা : আয়াত ১০৩)

(২) কোরআন পড়ার সময় অযথা কথা বলা: কোরআন তেলাওয়াতের সময় অযথা কথাবার্তা বলা আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। কারণ কোরআন মুমিনের জন্য রহমতস্বরুপ। তবে কোরআনের পরিপূর্ণ রহমত লাভে কিছু আদব রয়েছে। আর তার অন্যতম হলো কোরআন তেলাওয়াত করার সময় মনোযোগের সঙ্গে শ্রবণ করা।
 
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় অযথা কথাবার্তা ও শোরগোল না করে মনোযোগের সঙ্গে কোরআনের তেলাওয়াত শ্রবণ করার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

وَإِذَا قُرِىءَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের ওপর রহমত হয়।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২০৪)।

(৩) রোজা পালন কালে স্ত্রী সহবাস করা: আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর জন্য রোজা পালন অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করাকে পছন্দ করেন না। কারণ রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়। দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকার নামই হলো রোজা পালন।

(৪) কবরস্থানে বসে হাসাহাসি করা: কবরস্থানে বসে হাসাহাসি করা আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। কারণ মৃত্যু ও কবরস্থান মানুষকে পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে প্রেরণা যোগায়। সে কারণে কবরস্থানে হাসাহাসি করাও আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। সেখানে মৃত্যুর কথা স্মরণ করাই মুমিন বান্দার জন্য শ্রেয়।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে যথা সময়ে নামাজ আদায়, মনোযোগের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণ, রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা এবং কবরস্থানে হাসাহাসি না করে আল্লাহ স্মরণ করাসহ তার যাবতীয় বিধি-নিষেধ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুমা আমিন।

নিউজওয়ান২৪/আ.রাফি