‘আমাদের পাওনা ধামাচাপা দিতে উল্টো মিথ্যা দাবি করছে পাকিস্তান’
স্টাফ রিপোর্টার

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ -ফাইল ফটো
ঢাকা: বাংলাদেশের কাছে কথিত পাওনা অর্থ ফেরতের পাকিস্তানি দাবিকে ভিত্তিহীন বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
আজ (বুধবার) বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জহির উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের আজগুবি দাবি সম্পর্কে তোফায়েল বলেন, পাকিস্তানের কাছে স্বাধীনতার আগে আমাদের পাওনা দাবি করায় তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উল্টো মিথ্যা দাবির আশ্রয় নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল (মঙ্গলবার) পাকিস্তানি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক খবরে জানা যায়, বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা (পাকিস্তানি মুদ্রায় ৯.২১ বিলিয়ন রুপি) পাওনা আছে দাবি করে তা ফেরত চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান।
একইসঙ্গে ৪৭-এর দেশ ভারতের কাছেও ৬ বিলিয়ন ভারতীয় রূপি পাওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশবিভাগের আগরে হিসেবে এই অর্থ ভারতের কাছে পাওনা বলে দাবি করে ইসলামাবাদ।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদশের কাছে (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান) পশ্চিম পাকিস্তানের যে অর্থ পাওনা ছিল তা বর্তমানে প্রায় সাত শ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। অ্যাসেট ভ্যালুয়েশন পদ্ধতিতে এ অঙ্ক নিরূপণ করা হয়েছে বলে জানায় পত্রিকাটি।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সরকারি অফিস, ঋণ, আগাম সুবিধাসহ বিভিন্ন খাতে পূর্ব পাকিস্তানের কাছে যে পাওনা ছিল, তা ২০১৬ সালের জুন নাগাদ ভ্যালুয়েশন করে ৬শ কোটি ৯২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, পাকিস্তানের কথিত পাওনা বিষয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ওরা আমাদের কাছে কী পাবে, আমরাই তো ওদের কাছে টাকা পাই। একাত্তরের আগে আমাদের দেশের রপ্তানি ও বাণিজ্যের টাকা ওরা নিয়ে গেছে। যেহেতু আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছি, এটিকে কাউন্টার দেওয়ার জন্যই ওরা এ দাবি করেছে।
তোফায়েল বলেন, ওই সময়ে পাকিস্তানের মোট আয়ের বেশির ভাগই আসতো বাংলাদেশ থেকে। আদমজী জুট মিলসহ অন্যান্য কলকারখানার আয় ছিল তাদের আয়ের মূল উৎস।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের বিশাল অর্থ পাওনার ঐতিহাসিক প্রমাণাদিও রয়ছে। আর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েলের কথার সমর্থন পাওয়া যায় পাকিস্তানি রাজনীতিবিদদের বক্তব্যেও।
বাংলাদেশের টাকায় হয়েছে ইসলামাবাদের রাস্তা: পাকিস্তানি মুখ্যমন্ত্রী
গত অক্টোবরেই পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক একাধিক অনুষ্ঠানে বলেন, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের রাস্তা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পাটকল থেকে আসা আয়ের টাকায়। পাকিস্তানের হরিপুর, ঘাজি ও হাবিলিয়ান এলাকায় বিভিন্ন সমাবেশে এসব কথা বলেন পারভেজ খাত্তাক।
এ ঘটনায় পাকিস্তানে কট্টর বাংলাদেশ বিরোধী রাজনীতিকরা খাত্তাকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও তার বিচার দাবি করেন।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী খাত্তাক বাংলাদের স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে আরও বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান ঠিকই বলেছিলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকেরা বাঙালিদের সম্পদ লুণ্ঠন করে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।
খাত্তাকের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। কারণ দেশটিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন অল্প কিছু উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মধ্যে একটি।
তিনি পাকিস্তানি সমাজ ও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সেদেশের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের দায়ী করেন।
মুখ্যমন্ত্রী খাত্তাক বলেন, রাজনীতিবিদেরা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি করেছেন। তারা সরকারের জনকল্যাণমূলক কাজ করতে গিয়ে ‘কমিশন’ আত্মসাৎ করেন।
স্পস্টবাদী এই রাজনীতিক আরও বলেন, আমাদের শত্রু রাষ্ট্র ভারতও গত ৭০ বছরে পাকিস্তানের এতখানি ক্ষতি করতে সমর্থ হয়নি, পাকিস্তানি রাজনীতিবিদেরা যতটা ক্ষতি বাংলাদেশের করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সম্প্রতি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের সার্ক সম্মেলন বর্জন করে। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের বাংলাদেশ বিরোধী নানান তৎপরতার অংশ হিসেবে বর্তমানে দেশটির এই ‘অযৌক্তিক পাওনা দাবির’ ঘটনাকে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। বাংলাদশে ছাড়াও সার্ক সম্মেলন বর্জন করে ভারত, ভুটান ও আফগানিস্তান। চলতি মাসের ৯ ও ১০ তারিখে এবারের ১৯তম সার্ক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চারটি দেশ সম্মেলন বর্জন করায় শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় সম্মেলনের আয়োজন।
নিউজওয়অন২৪.কম/এমএস
- বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নারী শেখ হাসিনা
- সিরাজুল আলম খান রহস্য, একটি রাজনৈতিক বিতর্ক
- ঘটনা গুরুতর: প্রধান বিচারপতির উত্তরের আশায় পুরো বাংলাদেশ!
- পিরিয়ডের সময় যে খাবারগুলো ক্ষতিকর
- ‘ডোপ টেস্ট’ কী? জেনে নিন...
- দুর্লভ সাদা গোখরাটি জ্যান্ত গিলে খেল অপর সাপকে! (ভিডিও)
- মইনুলকে জানি না তবে মাসুদা ভাট্টি চরিত্রহীন: তসলিমা
- আহ! কাকের বাসা
- উন্মাদের পরিবেশ সচেতনতা কার্টুন প্রদর্শনী শুরু
- র্যাবের নয়া এডিজি কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, পিএসসি
- ৫ বছর আগের কার্টুনের বক্তব্য...
- বিবস্ত্র হয়ে ঘর পরিষ্কার, অতঃপর...
- কেমন যাবে আপনার আজকের দিন
- গরীবের কংকাল ঢাকে ধনবানের স্ফীত উদর!
- রওশনের বাবা নাকি এরশাদ?- প্রথম আলো