আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
নিউজ ডেস্ক

স্বাধীনতার এই ৪৯তম বার্ষিকীতে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছে
আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
স্বাধীনতার এই ৪৯তম বার্ষিকীতে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। তবে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধ ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোসহ সব জাতীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মুখে পাকিস্তান সামরিক সরকারের পতন ঘটে। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসন লাভ করে।
আওয়ামী লীগের সরকার গঠন ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সংসদের অধিবেশন ডাকা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এ প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু এক ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে দেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতির ডাক দেন। রেসকোর্সের জনসমুদ্রে তিনি ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বে বাঙালি জাতির এই জাগরণে ভীত ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এরপর আসে ২৫ মার্চ কালরাত্রি। সেই রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সেনারা নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে, শুরু করে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড।
গণহত্যা থেকে নিস্তার পেতে প্রায় ১ কোটি মানুষ দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মোট ৩০ লাখ লোক শহীদ, প্রায় ৮ লাখ শিশু শরণার্থী ক্যাম্পে রোগে ও না খেয়ে মারা যায় এবং প্রায় দুই লাখ নারী পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা ধর্ষিত হয়। পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুকে আটকের আগে তিনি ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালীন ই.পি.আর এর ট্রান্সমিটারে প্রচার করার জন্য পাঠিয়ে দেন। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে লড়াই করে তাদের পরাভূত করে।
১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা’র কাছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন। এরই মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জন করে লাল-সবুজের এক পতাকা। অবসান ঘটে পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের শোষণ ও বর্বরতম শাসনের ইতিহাস।
৭১-এর বাস্তবতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি তখন সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র তৃতীয় খন্ডে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঘোষণা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ২৫ মার্চ মধ্য রাতের পর অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে এ ঘোষণা দেন তিনি। যা তৎকালীন ইপিআর এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।
বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’
২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের সংবিধানের উপক্রমণিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে বাংলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভায় এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হইবার ডাক দেন এবং ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ