মসজিদে শিশুর লাশ রহস্য উন্মোচন, গ্রেফতার ৩
স্টাফ রিপোর্টার
গ্রেপ্তার আব্দুল জলিল হাদী ও তার সহযোগী
ডেমরার ডগাইর এলাকার একটি মসজিদ থেকে বস্তাবন্দি শিশু মনিরের (৮) মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হচ্ছে, নূরে মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল জলিল হাদী ওরফে হাদিউজ্জামান এবং তার সহযোগিতা দুই ছাত্র তোহা ও আকরাম হোসেন।
ডিএমপি অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ওবায়দুর রহমান জাগো বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশু মনির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে। ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ডেমরা থানার ডগাইর নতুনপাড়া এলাকার নুর-ই-আয়েশা জামে মসজিদের ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু মনির হোসেনের (৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় নূরে মদীনা মাদরাসার শিশুশ্রেণির ছাত্র মনির আগের দিন রোববার (৭ এপ্রিল) থেকে নিখোঁজ ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশু মনির প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিন দুপুরে মসজিদের মকতবে পড়তে যায়। যাওয়ার সময় মায়ের সঙ্গে শেষ কথা হয়। এরপর মকতব ছুটির পরে অন্য বাচ্চারা সব যার যার ঘরে ফেরে কিন্তু ফেরে না শুধু মনির।
তার মা চিন্তার পড়ে যান। ফনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায় না কোনো হদিশ। পরে বিকালের দিকে একটি ফোন কল আসে শিশুটির পরিবারের কাছে। ফোনে এক ব্যাক্তি জানায়, বাচ্চা ফেরত চাইলে ৩ লাখ টাকা সন্ধ্যার মধ্যে মসজিদের নির্দিষ্ট খাটিয়ার মধ্যে রেখে আসতে হবে। না হলে সকালে ছেলের লাশ মিলবে।
গরিব ঘরের শিশু মনির। তবে সন্তানের জীবন রক্ষায় বাবা-মা কোনো মতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা যোগার করে যথা স্থানে রেখে আসে। কিন্তু সকালে সন্তান আর বাসায় ফিরে আসে না। এর মধ্যে এলাকার লোকজনের কাছে ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। সবার সন্দেহ হয় ওই মাত্রসা শিক্ষকের ওপর।
দুপুরে খবর পেয়ে ডেমরা পুলিশ এসে যখন হুজুরকে ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করে মনির কোথায় তখন তিনি দৌড়ে পালাতে চান। তাকে ধরে এলাকাবাসী পিটুনি দেয়। এসময় তিনি স্বীকার করেন যে শিশুটি তার কাছেই আছে। পরে আরো মারধরের পরে জানান যে শিশুটি মসজিদের ২য় তলার সিঁড়ির নিচে রয়েছে।
কিন্তু সেখান থেকে বস্তাবন্দি শিশু মনিরের লাশ উদ্ধার করা হয়।
শিশু মনির তার বাবা সাইদুর হক ও মা কল্পনা বেগমের সঙ্গে ডেমরার ডগাইর এলাকায় থাকতো। তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে।
পুলিশের ব্রিফিংয়ে ঘটনার বয়ান
ডেমরায় শিশু মনির হোসেন (৮) হত্যা রহস্য উন্মোচনের বিষয়ে বুধবার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিক সংবা সম্মেলন করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পুলিশকে জানায়, মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য তারা মনিরকে অপহরণ করেছিল। তবে অপহরণের কিছুক্ষণ পরেই গামছা দিয়ে তার মুখ পেঁচানোর ফলে মারা যায় মনির। মনিরের মৃত্যুর পরও তার পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হচ্ছেন নুর-ই মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ ও মসজিদুল আয়েশায় ইমাম আব্দুল জলিল হাদী। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন আকরাম ও আহাম্মদ সফি ওরফে তোহা নামে দু’জন। মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ওয়ারী জোনের উপপুলিশ কমিশনার ফরিদ উদ্দিন জানান, মনির ও তার দুই ভাইবোন ৭ এপ্রিল সকালে মাদরাসায় পড়তে যায়। বেলা ১১টায় মাদরাসা ছুটি হওয়ার পর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অধ্যক্ষ ও তার দুই সহযোগী মনিরকে অপহরণ করে। তারা মাদরাসার পাশের নির্মাণাধীন মসজিদুল-ই-আয়েশায় নিয়ে যায় তাকে। ওই মসজিদের ইমাম আব্দুল জলিল হাদী। সেখানে নেয়ার পর মসজিদের সিঁড়িতে মনির কান্না শুরু করে। তখন অপহরণকারীদের একজন মুখ চেপে ধরে। মুখ চেপে ধরায় মনির আরও জোরে চিৎকার করে। তখন অধ্যক্ষ হাদীর গামছা দিয়ে মনিরের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। এক পর্যায়ে মারা গেছে বুঝতে পেরে মনিরকে সিমেন্টের একটি বস্তায় ভরে সিঁড়ির পাশে রেখে দেয়। বস্তায় ঢুকানোর আগে মনিরের হাত পা বেঁধে ফেলা হয়।’
উপপুলিশ কমিশনার ফরিদ আরও জানান, মারা গেছে জেনেও পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মনিরের বাবা সাইদুল হকের কাছে রাতে ফোন করে তারা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মনিরের বাবা এক লাখ টাকা নিয়ে মসজিদে আসে। ছেলে ফিরে পাওয়ার আশায় মসজিদেই অপেক্ষা করে এবং টাকাটা মসজিদের ইমাম হাদীর কাছে রাখে। সারারাত অপেক্ষার পরও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে পরদিন টাকা নিয়ে চলে যান তিনি। পরে পুলিশকে নিখোঁজের বিষয়ে জানালে পুলিশ মসজিদ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।’
নিউজওয়ান২৪.কম/আরকে
- ধূর্ত খুনী ধরতে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান!
- পলাতক সেনা কমান্ডো ক্যাপ্টেন উদ্ভাস গ্রেপ্তার
- হায়রে পিশাচ মা!
- জাল ভিসা-পাসপোর্ট সহ ৮ নারী পাচারকারী আটক, উদ্ধার ৪
- প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটিয়া ও দারোয়ান হত্যা করে সেনাকর্মকর্তার মাকে!
- মোবাইল চুরি: লোহাগাড়ায় পিটিয়ে যুবক হত্যা, আটক ১৪
- এক নজরে খেলাধুলা: ৬ অক্টোবর, ২০১৮
- ক্রিকেট খেলতে নিষেধ করায় শিক্ষককে কোপালো বখাটে
- নূর হোসেন লাপাতা
বাড়ি থেকে আটক ৩, গাড়ি জব্দ - ‘গুলশান সংকটের’ আরেক বলি হলেন ডিবির এসি রবিউল
- কঠোর অবস্থানে সরকার
ডিএমপির অ্যান্টি-কিডন্যাপিং স্কোয়াড - বেকারদের সঙ্গে প্রতারণা: সেনা-পুলিশের প্রাক্তন ছয় সদস্য আটক
- লোভনীয় বিজ্ঞাপন ফাঁদে নষ্ট হচ্ছে বেকার-যুবকদের স্বপ্ন
- যেভাবে পাওয়া গেল উত্তরার খালে অস্ত্র-গুলির খোঁজ
- এলেমদার প্রতারক: মক্কেলদের চড়াতেন প্লেনে রাখতেন রেডিসনে