ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
সর্বশেষ:

তামিমের সেঞ্চুরিতে কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৫০, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ আসরের শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। 

পর্দা নামল ঘরোয়া ক্রিকেটের সব থেকে জনপ্রিয় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের(বিপিএল)। ঢাকা ডাইনামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শেষ হলো বিপিএলের ষষ্ঠ আসর। আর এ ম্যাচে ১৭ রানে ঢাকাকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে নিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনালে হেরে টানা দ্বিতীয় বারের মত শিরোপার কাছে গিয়েও ছুঁতে পারল না ঢাকা। শিরোপা পুনরুদ্ধারে এ চেষ্টা ও ব্যর্থ হল ঢাকার।

মিরপুর শের-ই- বাংলা ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে ফাইনালে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা ডাইনামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু আগে বল করে কুমিল্লাকে আটকাতে পারেনি ঢাকা। আগে ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লার ১৯৯ রান সংগ্রহ  করে। ২০০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮২ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ওভার শেষ হওয়াতে থেমে যায় ঢাকা। আর এতে দ্বিতীয় বারের মত বিপিএল শিরোপার স্বাদ পেল কুমিল্লা।
 
২০১৭-১৮ সালে বিপিএলের পঞ্চম আসরের ফাইনালেও রংপুরের মুখোমুখি হয় ঢাকা। কিন্তু রংপুরের ছুঁড়ে দেয়া ২০৬ রানে জবাবে ১৪৯ রানেই থেমে গিয়ে শিরোপা হারায় ঢাকা। ৫৭ রানের জয়ে শিরোপা নিজেদের করে নেয় রংপুর। 
ওদিকে  ২০১৫-১৬ তে বিপিএলের তৃতীয় আসরে মাশরাফীর নেতৃত্বে বরিশাল বুলসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স।

বড় স্কোর ২০০ রানের টার্গেটে আত্মবিশ্বাসী হয়েই ব্যাট করতে নামে সাকিবের ঢাকা। থারঙ্গা ও সুনিল নারাইন জুটি হয়তো ফাইনাল ম্যাচে একটা চমক দেখাবে বরাবরের মতো। এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ভাগ্য আজ সুনিল নারাইয়েনর পক্ষে ছিল না। ওভারের দ্বিতীয় বলে থারাঙ্গার শটে রান নিতে গেলে সাইফউদ্দিনের অসাধারণ থ্রোতে রান আউট হয়ে বিপিএল শেষ করে নারাইন। এরপর রনি তালুকদার তার রূপ দেখাতে ভুল করেনি।

থারাঙ্গা ও রনির জুটিতে রান যখন দলীয় শতক পার করেছে ঠিক তখনি ঘটল অঘটন। পেরেরার বলে উড়িয়ে মারতে গেলে ক্যাঁচ হয়ে আবু হায়দার রনির হাতে ধরা দেন থারাঙ্গা(৪৮)। ১০২ রানেই ভেঙে যায় তাদের পার্টনারশিপ। এরপর অধিনায়ক সাকিব এসেও সুবিধা করতে পারেনি মাত্র ৫ বলে ৩ রান করে ওহাব রিয়াজের বলে তামিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। বেশ দূর থেকেই ছুটে এসে ক্যাঁচটি লুফে সাকিবকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তামিম। তবুও রানের চাকা সচল রেখেছিল রনি তালুকদার। কিন্তু ভাগ্য আর তাকে সঙ্গ দিল না। আফ্রিদির বলে রান আউট করে রনিকে (৬৬) ঘরে ফেরান এনামুল হক বিজয়।

আন্দ্রে রাসেলের উপর একটা ভরসা ছিল ঢাকার। কিন্তু আজ রাসেলেও দাঁড়াতে পারল না কুমিল্লার বলের  সামনে। পেরেরার বলে মাত্র ৪ রান করে ওহাব রিয়াজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ঘরে ফেরেন রাসেল। আবারো সেই ওহাব রিয়াজের বলে তামিমের হাতেই ক্যাঁচ হয়ে ফেরেন কাইরন পোলার্ড (১৩)। ঢাকার শিরোপার আলো নিভৃতে থাকে। দলীয় ১৪৩ রানে ক্যাচ হয়ে ফেরেন শুভাগত হোম (০)।

তবু ঢাকা কিছু আশার আলো দেখছিল সোহানের ব্যাটে। কিন্তু ক্যাঁচ হয়ে তার ও ফিরতে হলো ১৪ বলে ১৮ রানের এক স্কোর করে। সাইফউদ্দিনের বলে ওহাব রিয়াজের হাতে  ক্যাচ হলে মাহুমুদুল হাসান লিমন(১৫)। শেষ পর্যন্ত আর কোন উইকেট না পড়লেও ওভার শেষ হওয়াতে থেমে যেতে হয় ঢাকাকে। ১৮২ রানেই আটকে থাকে ঢাকার ইনিংস।

সবশেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। আর এতে ১৭ রানের জয় নিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ শিরোপা নিজেদের করে নিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

টস হেরে শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নামে ব্যাটে নামে কুমিল্লা ভিকটোরিয়ান্সের তামিম ইকবাল ও এভিন লুইস। কিন্তু শুরুটাই ভালো হলো না ভিকটোরিয়ান্সে। খেলার দ্বিতীয় ওভারে রুবেলের পঞ্চম বলে এলবি আউট হলে লুইস। দলীয় রান যখন ৯।  রিভিউ নিয়েও লুইস কে বাঁচাতে পারেনি কুমিল্লা। এরপর ফেরেন এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান। বিজয় এলবিতে আউট হলেও শমাসুর রহমান ফেরেন রান আউটে। আর দুইজনকেই ফেরান ঢাকার অধিনায়ক। আর কোনো উইকেট নিতে সক্ষম হয়নি ঢাকা। তামিম ইকবাল একাই নিজের কাঁধে করে কুমিল্লাকে এনে দিয়েছেন ফাইটিং বড় স্কোর।

তামিম ইকবাল অপরাজিত থেকে ১৪১ রানের ইনিংস উপহার দেয় দলকে। ১১টি ওভার বাউন্ডারি ও ১০টি বাউন্ডারিতে ছিল সাজানো ইনিংস।অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও অপরাজিত ১৭ রানের ইনিংস খেলেন। শিরোপা জিততে ঢাকার সামনে ২০০ রানের বড় টার্গেট ছিল। কিন্তু টার্গেট অর্জন করতে ব্যর্থ ঢাকা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স :
১৯৯/৩ (২০ ওভারে) (তামিম ১৪১*, লুইস ৬, এনামুল ২৪, শামসুর ০, ইমরুল ১৭*; রাসেল ০/৩৭, রুবেল ১/৪৮, সাকিব ১/৪৫, নারিন ০/১৮, অনিক ০/১৯, শুভাগত ০/১৪, মাহমুদুল ০/১২)।

ঢাকা ডায়নামাইটস :
১৮২/৯ (২০ ওভারে) (থারাঙ্গা ৪৮, নারিন ০, রনি ৬৬, সাকিব ৩, পোলার্ড ১৩, রাসেল ৪, নুরুল ১৮, শুভাগত ০, মাহমুদুল ১৫, রুবেল ৫*, অনিক ১*; সাইফউদ্দিন ২/৩৮, মেহেদী ০/৩০, ওয়াহাব ৩/২৮, সঞ্জিত ০/১০, আফ্রিদি ০/৩৭, থিসারা ২/৩৫)।

নিউজওয়ান২৪/আ.রাফি

খেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত